ইলিয়াস শেখ বিশেষ প্রতিনিধি প্রতিনিধিঃ কুয়াকাটা লতাচাপলী ইউনিয়নের বাসিন্দা, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর মুসল্লী, শখের বসত ঘরের আঙ্গিনায় আম চাষ শুরু করে ২০০৫ সালে। এরপর থেকে ভালো ফলন আসে এবং নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে, ঘরের আঙ্গিনায় লাগানো আম গাছ থেকে বাজারজাত করে ভালো অর্থ আয় করেন তিনি। পরে ধীরে ধীরে ঘরের আঙ্গিনা থেকে বড় পরিসরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আম চারা নিয়ে এসে লাগাতে শুরু করে। এখন সেই শখের আম গাছ থেকে তিনি ধারণা করছেন, এবছর ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা আয় করবেন।
বর্তমানে জাহাঙ্গীর মুসল্লী, পেশায় একজন লাইব্রেরিয়ান, কুয়াকাটা লতাচাপলী ইউনিয়নের, মুসুল্লি আবাদ গ্রামে, ৬ বিঘা জমিতে আম চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তার আমের বাগানে ২০ থেকে ২৫ প্রজাতির আম রয়েছে। তার নিজের উপজেলায় বাজারজাত করে, পার্সেল এর মাধ্যমে বাংলাদেশের যে কোন স্থানে বিক্রি করছে।
এবং কুয়াকাটা ভ্রমণে আসা পর্যটক রাও জাহাঙ্গীর মুসল্লির আমবাগান ভ্রমণ করে, এবং আম কিনে নিয়ে যায়। ফরমালিন মুক্ত এবং গাছপাকা আম পেয়ে খুশি পর্যটক সহ স্থানীয়রা।
জাহাঙ্গীর মুসল্লী বলেন,২০০৫ সালে তাবলীগ জামাতের সঙ্গে দাওয়াতের কাজে গিয়েছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ। সেখানে গিয়ে এক আমের বাগানের মালিকের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে আমার। তার সঙ্গে দীর্ঘ আলাপচারিতায় আমের বাগান করার শখ জাগে । সেখান থেকেই চারা নিয়ে বাড়ির আঙিনায় বিভিন্ন জায়গায় রোপন করি। পাঁচ বছর পর ২০১০ সালে সেই গাছে আম ধরে। ভালো দামে মোটা অংক টাকায় বিক্রয় করি তার পরে আমার শখ বাণিজ্যে রূপ নেয়। এখন আমি ৬ ছয় একর ফসলি জমিতে আমের বাগান করছি।
সরজমিন ঘুরে দেখলাম, জাহাঙ্গীর মুসল্লির আমবাগান করার কারনে, কর্মসংস্থান হয়েছে চার পরিবারের , প্রতিদিন তারা আম বাগানটি সুন্দরভাবে পরিচর্যা করে এবং গাছ পাকা আম গুলো পেরে স্থানীয় বাজারে বিক্রির জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অবাক করা কথা হল, স্থানীয় বাজারে তার নিজের আম নিজ দোকান থেকেই বিক্রি করছেন। এতে ভালো লাভও পাচ্ছে জাহাঙ্গীর মুসল্লী, কম দামেও কিনতে পারছে ক্রেতারা। আম গাছের নিচের সবুজ ঘাস খাওয়ার জন্য তিনি ভেড়া পালন করেন। তার খামারে ৭৫টি ভেড়া আছে। প্রতিবছর তিনি ভেড়ার খামার থেকে কমপক্ষে তিন লাখ টাকা আয় করেন। শুধু ভেড়া নয় আমের বাগানে পাশে একটি ঘর তৈরি করে ১২টি গরুর লালন-পালন করছেন তিনি। প্রতিবছর গরুর থেকে তার আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা আয় হয়।
আম ক্রেতা মোহাম্মদ জসিম উল্লাহ বলেন, আমি গেছে সপ্তাহে ১০ কেজি আম কিনছিলাম খুব ভালো ও সুস্বাদু হওয়ায়, আজ আবারো ১৫কেজি আম কিনে বাসায় নিয়ে যাচ্ছি। আমের বাজারের তুলনায়, তার কাছ থেকে কম দামে আম কিনতে পারছি এবং আমও ভালো পাচ্ছি।
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ আর এম সাইফুল্লাহ বলেন, কলাপাড়ায় বাণিজ্যিকভাবে আমের বাগান বাড়ছে। এর মধ্যে লতাচাপলী ইউনিয়নের জাহাঙ্গীর মুসুল্লীর বাগানটি অন্যতম। সঠিকভাবে পরিচর্যা করতে পারলে এ অঞ্চলে আমের বাগানের সম্ভাবনা খুবই উজ্জ্বল, আমাদের পক্ষ থেকে তার জন্য সর্বোচ্চ সহযোগিতা থাকবে।