মারুফ আহমেদ স্টাফ রিপোর্টারঃ
রাজশাহী মহানগরীতে কাজীকে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে তুলে নিয়ে চাঁদা দাবীকরা যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলেও ব্যবস্থা নেয়নি রাজশাহী মেট্রোপলিটন (আরএমপি)র কাটাখালি থানা পুলিশ। অভিযুক্ত যুবলীগ নেতার নাম লিটন। তিনি কাটাখালি থানাধীন সাহাপুর পশ্চিমপাড়া এলাকার মৃত লুৎফর রহমানের ছেলে । চারঘাট উপজেলার ইউসুফপুর ইউনিয়ন ৩ নং ওয়ার্ডের যুবলীগ সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন ভুক্তভোগী কাজী এনায়েত উল্লাহ। কাজী এনায়েত উল্লাহ নিজেকে অনলাইন ডোনেট বাংলাদেশ ও দৈনিক ডেসটিনি রাজশাহী প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয়ও দেন।
জানা যায়, গত ১৬ জুলাই শনিবার দিবা গত রাত্রি ৮:৩০ ঘটিকায় সময় সাহাপুর পশ্চিমপাড়া, আলামিনের”চা স্টলে” বসে ছিলেন, কাজী এনায়েত উল্লাহ। এ সময় যুবলীগ সভাপতি লিটন অবৈধ অস্ত্র (পিস্তল)ধারী ১০/১২ জনের একটি সন্ত্রাসী দল নিয়ে “চা স্টলে” আসে এবং এনায়েতের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে জামার কলার ধরে টেনে হেছড়ে সাহাপুর মোড়ে নিয়ে যায়। তারপর এনায়েতের কাছে থাকা ক্যামেরা ব্যাগপত্র ছিনিয়ে নিয়ে এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে চারঘাট উপজেলার ইউসুফপুর ইউনিয়ন ৩ নং ওয়ার্ডের যুবলীগ সভাপতি লিটন। এ সময় কাজী এনায়েত উল্লাহকে অবৈধ আগ্নে অস্ত্র মাথায় ঠেকিয়ে সাহাপুর মোড় থেকে জোড় পূর্বক তুলে নিয়ে গেলেও কিছুই করার ছিলো না জনতার।
স্থানীয়রা জানান, কাজী এনায়েত উল্লাহকে অবৈধ আগ্নে অস্ত্র মাথায় ঠেকিয়ে সাহাপুর মোড় থেকে জোড় পূর্বক তুলে নিয়ে গেলেও আমরা কেহ কথা বলার সাহস পাইনি।
সাহাপুর মোড়ের দোকানদারগন বলেন, ইউসুফপুর, ইউপি ৩নং ওর্য়াডের যুবলীগের সভাপতি মো. লিটন এনায়েতের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে, অন্য হাত দিয়ে জামার কলার ধরে টানতে টানতে প্রথমে সাহাপুর মোড়ে নিয়ে এসে এনায়েত কাছে থেকে ক্যামেরা ব্যাগপত্র কেড়ে নেয় এবং একটি মোটর সাইকেলের মাঝে বসিয়ে বেলঘড়িয়া বাদলের মোড়ের দিকে নিয়ে গেছে।
তারা আরও জানান, লিটন একজন চোরাকারবারী, অস্ত্র ব্যবসায়ী কালো বাজারি, পুলিশের সোর্সও সে। তার কারনে সোর্সের দাপটে আমরা অশান্তিতে থাকি। তার বিরুদ্ধে কেহ মূখ খোলার সাহস পাইনা। সরকারের উর্দ্ধোতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি লিটনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া জন্য।
এ বিষয়ে এনায়েত উল্লাহ বলেন, সাহাপুরে আমি জমি কিনা-বেচা করছি। আমার নিয়ন্ত্রনে ৪-৫টি জমি আছে। এটা লিটনের সহ্য হচ্ছে না। সে আমার একটা জমি তার নামে ফ্রিতে লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। বিষয়টি আমি এলাকাবাসী, মন্ডল প্রধান, মেম্বার, চেয়ারম্যানগন সকালকে জানিয়েছি। এর পর’ই লিটন আমার উপর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। গত ১৬ জুলাই শনিবার রাত্রি ৮:৩০ ঘটিকায় সময়। আলামিনের চা ষ্টলে বসে ছিলাম। হঠাৎ লিটন অস্ত্র ধারী সন্ত্রাসী ১০/১২ জনের এক বাহিনী নিয়ে এসে আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে তুলে নিয়ে প্রথমে সাহাপুর মোড়ে যান। সেখানে জনসম্মুখে আমার কাছে থাকা একটি ব্যাগ, ব্যাগে থাকা লক্ষাধীক টাকা, একটি ডিএসএলআর ৮০ডি, ক্যামেরা ছিনিয়ে নেন এবং একটি মোটর সাইকেলের মাঝে বাসিয়ে উত্তর দিকে বেলঘড়িয়া বাদলের মোড় দিয়ে থানার দিকে একটি আমবাগানে নিয়ে যায়। যাহা এলাকাবাসীগন স্ব-চক্ষে দেখেছেন। পরে লিটন ৩টি ফাঁকা ননজুডিশিয়্যাল ষ্টামে আমাকে স্বাক্ষর করান। পরে তারা সেখান থেকে টাঙ্গন এলাকায় জৈনক ফেন্সিডিল ব্যবসায়ী রুবনের বাসায় নিয়ে যান। এবং রুবনের কাছে থেকে ৯টি ফেনসিডিল বাকিতে ক্রয় করেন। প্রতিটি ফেনসিডিলের মূল্য ১,৫০০/- (এক হাজার পাঁচশত) টাকা। মোট মূল্য- ১৩,৫০০/- (তের হাজার পাঁচশত) টাকা। সেখানে লিটন আমাকে বলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে রুবনকে ফেন্সিডিলের ১৩,৫০০/- (তের হাজার পাঁচশত) টাকাটা পরিশোধ করে দিবি। পরিশেষে রাত্রি অনু: ১০ টার পর লিটন মোটর সাইকেল যোগে আমাকে মাসকাটাদিঘী, নর্থবেঙ্গল ইন্টার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির গেটে নামিয়ে দিয়ে যায়। আমি প্রমান রাখার সার্থে সবকিছু মুখ বুঝে সহ্য করেছি এবং কৌসলে সেখানকার লোকেশান প্রমান স্বরুপ একজন পুলিশ অফিসারের কাছে একটি ফোন করি। পরে গত ১৮/০৭/২২ ইং তারিখ। আমার ব্যবহিত মোবাইল ফোন নাব্বর ০১৭১৬-২৫৯৮৫৯, থেকে বিকাশে রুবনের ০১৮৬৫৮৪২১২৮ নব্বর ফোনে ৪,৯০০/- (চার হাজার নয়শত) টাকা প্রদান করেছি। অবশিষ্ট ৮,৫০০/- (আট হাজার পাঁচশত) টাকা নগদ প্রদান করি। যাহার প্রমান রয়েছে। গত ২৭/০৭/২০২২ ইং তারিখে আমি কাটাখালি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। আজ অভিযোগের ছয়দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কোন তদন্ত বা আসামীদের বিরুদ্ধে কোন আইনি ব্যাবস্থা গ্রহন করেননি। এমন ঘটনার বিষয়ে আমি আতংকিত আছি। আমার জীবনের নিরাপত্তা নেয়। লিটন এখনো আমাকে প্রান নাশের হুমকি দিচ্ছে। যে কোন সময় আমাকে প্রানে মেরে ফেলতে পারে বলে আমি ভিতু ।
থানায় খোজ নিয়ে জানা যায়, কাজি এনায়েত উল্লার অভিযোক কাটাখালি থানার এসআই আকতার তদন্ত করছেন। তার কাছে অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,বিষয়টি ছোট কোন বিষয় না। যেহেতু অভিযোগে আগ্নেআস্ত্রর কথা উল্লেখ আছে সেহেতু বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।