উল্লাপাড়া উপজেলা প্রতিনিধিঃ
বর্তমানে যে ভাবে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা বেড়ে চলছে তাতে কিছু দিন পরে ভদ্র নারীরা এবং ভদ্র পুরুষরা বিবাহ করতেই ভয় পাবেন।এমনকি ভদ্র পরিবারগুলোও তাদের ছেলে মেয়েদের বিবাহ দিতেই ভয় পাবেন।
গত ২০২০ ইং জুন থেকে অক্টোবর এই পাচ মাসের ঢাকা দুই সিটি করপোরেশনের তথ্য অনুযায়ী দেখা যায়
৫৯৭০,টি তালাক,বা বিবাহ বিচ্ছেদের মতো ঘটনা ঘটেছে যা প্রতিদিন হিসাবে গড়ে ৩৯ টা।
(সূত্র প্রথম আলো ২৩.০৫.২২)
এর আবার অধিকাংশ বিচ্ছেদ, ডিফোজ /তালাক করছে স্ত্রীর পক্ষ থেকেই।এবংসবচেয়ে বেশি বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে কর্মক্ষম নারীদের ক্ষেত্রে তারা খুব অল্পতেই স্বামীকে ডিফোজ /তালাক দেওয়ার মতো জটিল সিদ্ধান্ত নিয়ে নিচ্ছে।
এভাবে বাংলার প্রতিটি শহর থেকে গ্রামে প্রতি মুহূর্তে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে চলছে,গ্রামের চাইতে বিশেষ করে শহর গুলোতে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা অনেক গুণ বেশি ঘটছে যা আগামীর জন্য অত্যন্ত বিপদজনক পরিবেশ অপেক্ষা করছে।
অতিমাত্রায় বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ যদি আমি বিশ্লেষণ করি তবে নিন্মলিখিত বিষয়গুলো দেখতে পাইঃ- যেমন
১.ধর্মীয় অনুশাসন মেনে না চলা,বা এর বাহিরে জীবন গঠন।
২.পারিবারিক নৈতিক শিক্ষার অভাব।
৩. অবাধে নারী পুরুষ মেলামেশা,এবং
বিবাহের পূর্বে বিবাহ বহির্ভূত স্বামী স্ত্রী মতো সম্পর্ক স্থাপন,যা বিবাহের পরেও একাধিক নারী পুরুষের প্রতি যৌণ আকাঙ্খা তৈরি করে এবং পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া।
৪. উচ্চবিলাসিতা এবং উচ্চাকাঙ্খা অন্যতম কারণ।
৫.পশ্চিমা সাংস্কৃতি ও অতিমাত্রায় ইন্টারনেট এবং প্রযুক্তির ব্যবহার বিবাহ বিচ্ছেদের অন্যতম কারণ।
৬.নারী পুরুষের অবাধ স্বাধীনতা।
৭.নারীর অর্থনৈতিক শক্তি এবং কর্মক্ষম নারীদের মধ্যে অহংকার বোধ বেশি জন্ম নেওয়ায় বিবাহ বিচ্ছেদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
৮.পারিবারিক কলহ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি বিবাহ বিচ্ছেদের অন্যতম কারণ।
৯.বাল্যবিবাহ ও বিবাহ বিচ্ছেদের অন্যতম কারণ।
১০.ধৈর্যশক্তি কমে যাওয়া এবং একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার চরম অভাব বিবাহ বিচ্ছেদের অন্যতম কারণ।
১১. অতিরিক্ত কাবিননামা এবং যৌতুক প্রথা বিবাহ বিচ্ছেদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
উল্লেখিত বিষয়গুলো ছাড়াও আরও অনেক কারণ থাকতে পারে, আমার সাথে অনেকে কিছু বিষয় নিয়ে একমত নাও হতে পারেন।তবে আপনি গভীরভাবে চিন্তা করে দেখেন আজ থেকে ১৫-২০ বছর আগে এরকম ছিল কিনা, আগে সমাজে যদি কোন বাবার সন্তান তালাক বা ডিফোজ দিত তাহলে পুরো এলাকায় একটা
সোরগোল শুরু হতো এবং সেই পরিবারের মানুষগুলো সমাজের কাছে মুখ দেখাতে লজ্জা পেত।
তখন মানুষের এতো অর্থ ও বুদ্ধি শিক্ষা আবাসন ব্যাবস্থা কোন কিছুই ভালো ছিলনা কিন্তু মানুষের মধ্যে মানুষ হিসাবে যে গুণাবলী থাকার কথা, তা অধিকাংশই ততকালীন মানুষগুলোর মধ্যে ছিল।
কিন্ত? এখন মানুষের অর্থ ও বুদ্ধি শিক্ষা স্বাস্থ্য আবাসন
সব কিছুরই উন্নয়ন হয়েছে শুধু উন্নয়ন হয়নি মানুষের ভিতরের মানুষেরগুণাবলীর আর এজন্যই দিন যত যাচ্ছে ততই পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের নৈতিক শিক্ষার অভাব প্রতিটি ক্ষেত্রে দৃশ্যমান হচ্ছে, যা আগামী প্রজন্মের জন্য চরম বিশৃঙ্খল পরিবেশ অপেক্ষা করছে।
অতএব এখনই আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রের কর্তাব্যক্তিদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সর্ব প্রথম শিক্ষা ব্যাবস্থার পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে
নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে জাতিকে কেননা যে শিক্ষা দেশ ও সমাজকে আলোর পরিবর্তে অন্ধকারে
দিকে নিয়ে যাচ্ছে যে শিক্ষা চরিত্র গঠনের পরিবর্তে বিকৃত চরিত্রে রূপান্তরিত হচ্ছে তাই আমি মনে করি সেই শিক্ষার আমুল সংস্কার আগে দরকার।
সেই সাথে প্রতিটি সেক্টরে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়ে সামাজিক অবক্ষয় রোধ করা সম্ভব এবং আদর্শিক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হবে ইনশাআল্লাহ।