জাহাঙ্গীর আলম, স্টাফ রিপোর্টার:অবিভাবকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার তালসার কাজী লুৎফর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে তফসিল ঘোষনার পর থেকে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের
বিরুদ্ধে। নির্দ্ধারিত সময়ের মধ্যে মাত্র ৯জনের মনোনয়ন পত্র জমা হলেও সন্ধ্যার পর দেখানো হয়েছে ১৬ জনের। বিষয়টি নিয়ে অবিভাবকরা ক্ষোভ জানাতে বৃহস্পতিবার
৩টার দিকে উপজেলা চত্বরে আসলে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ে থাকা প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন তিনি উপজেলা থেকে সটকে পড়েন।
জানা গেছে- গত ২৪ এপ্রিল তালসার কাজী লুৎফর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি’র নির্বাচনের লক্ষে তফসিল ঘোষণা করা হয়। সে অনুযায়ী
২৮, ২৯ ও ৩০ এপ্রিল ৪টা পর্যন্ত ছিল মনোনয়ন পত্র তোলা ও জমা দানের শেষ তারিখ।
বৃহস্পতিবার ছিলো যাচাই বাছাই-এর তারিখ, ৫ মে মনোনয়ন প্রত্যাহার ও ১৯ মে নির্বাচনের দিন ধার্য করা হয়েছে। অথচ ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন মনোনয়ন পত্র বিক্রয় ও জমা দানের (৩০ এপ্রিল) শেষ দিনে সাড়ে ১২টা
পর্যন্ত বিদ্যালয়ে ছিলেন অনুপস্থিত। সকাল থেকে অবিভাবকরা বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষককে না পেয়ে অবিভাবকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারা বিষয়টি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার অশোক কুমারকে জানান। খবর পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা বিষয়টি জানতে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার অশোক কুমারের কাছে
ফোন করলে তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয় চলা কালিন সময়ে বিদ্যালয়ে থাকার কথা। তিনি নেই কেন বিষয়টি আমি দেখছি। দুপুর সাড়ে ১২টা দিকে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসেন। অবিভাবক সদস্য মনোনয়ন গ্রহণকারী প্রভাষক ওয়েহেদুজ্জামান বাদল সাংবাদিকদের জানান, মনোনয়ন পত্র জমা দানের শেষ দিনে (৩০ এপ্রিল) বিকাল ৪টা পর্যন্ত আমরা ৬ জন অবিভাবক সদস্য ও ৩ জন শিক্ষক প্রতিনিধিসহ মোট ৯জন মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছি। প্রধান শিক্ষকের আচারণে আমরা বুঝতে পেরে ছিলাম এখানে অনিয়ম হতে পারে। যে কারণে বিকাল ৪ টার আমি সর্বশেষ মনোনয়ন পত্র জমা দিয়ে মনোনয়ন পত্র বিক্রির খাতার ছবি ও তার কথোপকথন ভিডিও করে রাখি। পরে প্রধান শিক্ষক ও এডহাক কমিটির সভাপতি যোগসাজশে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার অশোক কুমার নিজ অফিসে বসে বিকাল ৫ টার দিকে প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে গোপনে আরো ৭ জনের মনোনয়ন পত্র জমা নেন। যা সরকারী বিধি আনুযায়ী চরম লঙ্ঘন। তিনি বলেন, একটি পক্ষকে একতরফা ভাবে ম্যানেজিং কমিটিতে নিয়ে আসার পায়তারা করছেন তারা।
বৃহস্পতিবার বেল ৩টার সময় মনোনয়ন পত্র যাচাই বাছাই-এর কথা। এ সময় অবিভাবকরা উপজেলা চত্বরে জড় হলে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে থাকা প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন সেখান থেকে দ্রুত সটাকে পড়েন। পরে শিক্ষা অফিসার অশোক কুমার বিষয়টি মিমাংসার জন্য ২ দফা বসেন অবিভাবকদের সাথে। কিন্তু কোন সুরহা হয়নি। অবৈধ ভাবে জমা দেয়া মনোনয়ন পত্র বাতিলের দাবী
জানিয়েছেন অবিভাবকরা । বিষয়টি নিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সাংবাদিকদের বলেন, আজ আমার কাছে সব পরিস্কার, আমি সব বুঝতে পেরেছি। তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক সাংবাদিকদের ভিডিওতে বলেছেন তার কাছে ৯ জন মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন অথচ আমার কাছে তিনিই লিখিত ভাবে ১৬জনের মনোনয়ন জমা দিয়ে গেছেন। আগামী সোমবারে তিনি প্রধান শিক্ষক
আনোয়ার হোসেনকে তলব করবেন বলে জানান। এ ঘটনায় এলাকা অবিভাবক মহলের মধ্যে চরম ক্ষোভ দানা বেঁধে উঠেছে।