মোঃ শাকিল রেজা স্টাফ রিপোর্টারঃ
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে সৎ মায়ের দেওয়া বিষ খেয়ে প্রান গেল পাঁচ বছর বয়সী কন্যা শিশু মাহমুদার খাতুনের।
মাহমুদা খাতুনকে কোমল পানীয়র সাথে বিষপান করিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায় তার সৎ মা হুমায়রা খাতুন। শিশুটি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ দুপুর ১ টার সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। তবে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ডও করেছিলেন চুয়াডাঙ্গা হাসপাতাল কতৃপক্ষ। শিশু মাহমুদা খাতুন কোটচাঁদপুর উপজেলার ভোমরাডাঙ্গা গ্রামের শাহিন মণ্ডলের মেয়ে। গতকাল বুধবার দুপুরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয় তার পরিবার। এসময় জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মাহমুদাকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি করেন।
গ্রামবাসী সূত্রে জানা যায়, গত ১ মার্চ সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতে সৎ মা হুমাইরা খাতুন (২৫) কোমল পানীয়ের সঙ্গে কীটনাশক মিশিয়ে শিশুটিকে খাইয়ে দেন। বিষক্রিয়ার কারণে শিশুটির শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটতে থাকে। বিষয়টি জানাজানি হলে পরিবারের সদস্যরা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরে যশোর জেনারেল হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিলে গত মঙ্গলবার শিশুটিকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়। বাসায় শিশুটির অবস্থা আরও অবনতি হলে গতকাল তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শিশুটির পিতা শাহিন মণ্ডল বলেন, ‘মেয়ে নিজেই জানায় তাকে বিষ খাইয়ে দেয়া হয়েছে। কে খাইয়েছে জিজ্ঞেস করলে জানায় তার সৎ মা অর্থাৎ আমার দ্বিতীয় স্ত্রী হুমাইরা খাতুন কোমল পানীয়র সঙ্গে তাকে বিষ খাইয়ে দিয়েছে।’
শিশুটির বুড়ো মা (শাহিনের দাদী) সকিনা বেগম জানান, ‘মাহমুদার জন্মের সময় তার মা আফরোজা খাতুন মারা যায়। এরপর থেকে আমিই তাকে লালন-পালন করে বড় করেছি। ওর বাবা শাহিন সৌদি আরবে অবস্থানকালে একই গ্রামের জিয়ারুলের মেয়ে হুমাইরাকে মোবাইলে বিয়ে করে। একমাস পূর্বে সে দেশে ফিরে তাকে বাড়িতে আনে। সে কখনই মাহমুদাকে ভালো চোখে দেখেনি। কিন্তু বিষ খাইয়ে হত্যা করবে তা আমরা কেউ ভাবতেও পারিনি। আমি হুমাইরার শাস্তি চাই।’
এদিকে, মর্মান্তিক এই ঘটনা ও মৃত্যুর খবরে গ্রামজুড়ে চলছে ক্ষোভ আর সমালোচনা।পরে শিশুটির সৎ মা হুমাইরা নিজেই বিষ পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে বল জানান স্থানীয়রা। হুমাইরা খাতুন বর্তমানে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা সৎ মা হুমাইরা খাতুনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। শিশু মাহমুদা খাতুনের মৃত্যুতে পরিবারে পড়েছে কান্নাকাটির রোল এবং চলছে শোকের মাতম।
এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ কবির হোসেন মাতব্বর কে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোনটি রিসিভ হয়নি।