ময়মনসিংহে কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশের আরো একটি সফল অভিযান, ৭২ ঘন্টার মধ্যে অজ্ঞাত বস্তাবন্দি লাশের (গৃহবধু) রহস্য উদঘাটন, হত্যাকান্ডের মুলহোতাসহ দুইজনকে গ্রেফতার ও লাশ বহনে ব্যবহৃত প্রাইভেটকার জব্দ করেছে কোতোয়ালী পুলিশ । সোমবার গাজীপুর সহ আশপাশ এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করে, গ্রেফতারকৃত নিহতের স্বামী মেহেদী ও বাসার মালিক লাশগুমের মহানায়ক স্বপন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
সদর সার্কেল এবং কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি মোঃ শাহ্ কামাল আকন্দ পিপিএম (বার) মঙ্গলবার সকালে কোতোয়ালী মডেল থানায় সাংবাদিকদের সাথে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান, তিনি আরো জানান, শুক্রবার সকালে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে আকুয়া- রহমতপুর বাইপাস রোডের বাদেকল্পা এলাকা থেকে অজ্ঞাত নারীর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়, পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নিহতের পরিচয় সনাক্ত করা হয়, নিহতের নাম – তাছলিমা (৩২) সে নান্দাইলের ভাসাটি গ্রামের আব্দুর রশিদের মেয়ে, এ ঘটনায় নিহতের পিতা আব্দুর রশিদ বাদি হয়ে কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলা নং ৫৬ (১০)২২ দায়ের করে। মামলার বাদি ও তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য মতে, ওসি শাহ কামাল আকন্দ আরো বলেন, নিহত তাছলিমার সাথে ফুলপুরের মেহেদীর সাথে বিয়ে হয়, এটা ছিল তাছলিমার তৃতীয় বিয়ে, এই বিয়ের পর থেকে তাছলিমা তার স্বামী মেহেদীকে নিয়ে চট্টগ্রামে বসবাস করছিল, গত ১১ অক্টোবর মঙ্গলবার তারা স্বামী-স্ত্রী চট্টগ্রাম থেকে গাজীপুরের বোর্ড বাজার এলাকায় জনৈক স্বপনের বাসায় ভাড়ায় উঠে, পরদিন বুধবার রাতে ঐ বাসায় স্ত্রী তাছলিমাকে হত্যা করে স্বামী মেহেদী পালিয়ে যায়। ওসি শাহ কামাল আকন্দ আরো বলেন, নিহতের পরিচয় সনাক্তের পর পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা এর নির্দেশে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অজ্ঞাত এই হত্যাকান্ডের রহস্য দ্রুততম সময়ে উদঘাটন এবং হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চালিয়ে সোমবার রাতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে, গ্রেফতারকৃত স্বামী মেহেদী ও বাড়ির মালিক স্বপনের বরাত দিয়ে ওসি আরো বলেন, হত্যাকান্ডের পর স্বামী মেহেদী লাশ ফেলে পালিয়ে যায়, বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ির মালিক স্বপন নতুন ভাড়াটিয়া তাছলিমা ও তার স্বামী মেহেদীর জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে ঐ বাসায় যায়, এ সময় দরজার কড়া নেড়ে শব্দ না পেয়ে দরজা ধাক্কা দেয় এবং দরজা খুলে তাছলিমার উলঙ্গ মৃতদেহ পরে থাকতে দেখতে পায়, স্বপন ভয়ে পুলিশ কিংবা তেমন কাউকে কিছু না জানিয়ে লাশ গুমের পরিকল্পনা শুরু করে, বৃহস্পতিবার দিনভর ঘর বন্ধ রাখার পর ঐ রাতে লাশ বস্তাবন্দি করে স্বপনের নিজস্ব প্রাইভেটকারে বস্তাবন্দি লাশ নিয়ে নির্জন স্থানে ফেলে দিতে ময়মনসিংহের দিকে রওনা দেয়, কোথাও সুবিধা জনক স্থান না পেয়ে অবশেষে আকুয়া- রহমতপুর বাইপাসের বাদেকল্লা এলাকায় ঐ নারীর বস্তাবন্দি লাশ ফেলে পালিয়ে যায় স্বপন ও তার সহযোগিরা, এসআই – নিরুপম নাগ, এসআই – মিনহাজ উদ্দিন, এএসআই – সুজন চন্দ্র সাহা, কনস্টেবল জোবায়ের ও মিজান উদ্দিন এই অভিযান পরিচালনা করেন।