খন্দকার জলিল – স্টাফ রিপোর্টার :
পটুয়াখালীর গলাচিপায় খাবারের সাথে চেতনা নাশক পদার্থ খেয়ে দুই পরিবারের নারী ও শিশু সহ ১০ জন মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি এবং নগদ টাকা ও স্বর্নালংকার চুরির খবর পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গলাচিপা উপজেলার চিকনিকান্দি ইউনিয়নের মাঝগ্রামে। জানা যায় সনাতন ধর্মাবলম্বী শুনিল কুন্ডুর পরিবারে ৬ জন সদস্য। গত ২৮ এপ্রিল সোমবার রাত অনুমান সাড়ে ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে তারা সবাই ঘুমিয়ে পড়ে।
পরের দিন সকালে ঘুম থেকে না জাগায় বেলা ১১টার দিকে বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসলে তারা এসে ঘরের সামনের দড়জা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে সবাইকে অচেতন অবস্থায় দেখে তাদের উদ্ধার করে গলাচিপা উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করায়। তারা ঘরে ঢুকে পিছনের দড়জা এবং সুকেশ খোলা দেখতে পায়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায় শুনিল কুন্ডু (৬৫) তার স্ত্রী মিনতি রানী (৫৫) তাদের ছেলে স্বপন কুন্ডু (৩৫) স্বপনের স্ত্রী পিপাসা রানী (২৫) স্বপনের শিশু কন্যা শ্রুতি (২ বছর ৬ মাস) এবং কিশোর (১৫) এবং মাসুদ খান (৩৫) মাসুদ খানের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৩০) মাসুদ খানের দুই ছেলে ফয়সাল (৯) এবং ফুয়াদ (৫) কে অচেতন অবস্থায় ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তারা শঙ্কা মুক্ত। বেশী অসুস্থ হয়েছিলেন মাসুদ খান এবং পিপাসা রানী। মাসুদ খানের জ্ঞান ফিরতে সময় লেগেছে প্রায় ৩৭ ঘন্টা।
মাসুদ খান শুনিল কুন্ডুর বাড়ির পাশের বাড়ির বাসিন্দা। একই দিনে মাসুদ খান তার স্ত্রী এবং দুই সন্তান নিয়ে রাত অনুমান সাড়ে ৯টা থেকে ১০ টার মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে কিছুক্ষন পরে অসুস্থ হয়ে পড়লে পাশের ঘরের লোকজন টের পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের অচেতন অবস্থায় দেখতে পেয়ে তাৎক্ষনিক ভাবে গলাচিপা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করায়।
ভুক্তভোগীদের কাছে জানতে চাইলে তারা জানায় রাতে খাবার খাওয়ার সময় খাবার থেকে সামান্য গন্ধ পেয়েছে কিন্তু তেমন কিছু বুঝতে না পেরে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। এরপর কি হয়েছে তারা কিছু বলতে পারে না।
শুনিল কুন্ডুর পরিবার থেকে জানা যায় তাতের ঘরের সুকেস ভেঙে নগদ অনুমান ১ লক্ষ টাকা এবং ১৫-১৬ ভরি ওজনের বিভিন্ন প্রকার স্বর্নের গহনা সুকেশের তালা ভেঙে নিয়ে যায়। কারা এ কাজ করছেন তা এখনও বলতে পারছেন না। তবে মাসুদ খানের ঘর থেকে কোন কিছু নিতে পারেনি বলে জানিয়েছে।
পিপাসা রানী বলেন নগদ টাকা এবং স্বর্নালংকার নেয়ার উদ্দেশ্যে সন্ধ্যার পরে যে কোন সময় দূর্বৃত্তরা কৌশলে রান্না ঘরে ঢুকে ভাতের মধ্যে চেতনা নাশক পদার্থ মিশিয়েছে। যা খেয়ে তারা গুরুতর অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা নিয়ে কোন রকম বেঁচে গেছে। তবে এ ঘটনা কে বা কারা করেছে তাদের খুজে বের করে প্রশাসনের কাছে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
এ-সংক্রান্তে গলাচিপা থানা কতৃপক্ষের কাছে জানতে চাইলে তারা জানায় ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এখন পর্যন্ত কাউকে সনাক্ত করতে পারেননি। তবে তদন্ত অব্যাহত আছে অপরাধীদের খুজে বের করে আইনের আওতায় এনে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বস্ত করেন।