(খুলনা ব্যুরো প্রধান) ‘শিশুশ্রম নিরসন বিষয়ক’ দিনব্যাপী কর্মশালা আজখুলনা সিএসএস আভা সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মাহবুব হোসেন।
কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সচিব বলেন, শিশুশ্রম নিরসনে কাজ করছে সরকার। শিশুশ্রম রোধে প্রয়োজন সম্মিলিত প্রচেষ্টা। উন্নত জাতি গঠনে শিশুশ্রম নিরসনের কোনো বিকল্প নেই। সরকারের একার পক্ষে দেশে শিশুশ্রম নিরোধ করা অনেক কঠিন। সকলে মিলে কাজ করলে শিশুশ্রম নিরসন করা সম্ভব। জাতীয় শিশুশ্রম নিরসননীতি ২০১০ প্রণয়ন করা হয়েছে। শিশুশ্রম নীতি যথাযথো প্রয়োগ করলে শিশুশ্রম কমে আসবে বলে তিনি আশা করেন। তিনি বলেন, আমরা চাইনা কোন শিশু শ্রমে নিয়োজিত থাকুক। শিশুদের ভালোভাবে গড়ে ওঠার পরিবেশ সুযোগ করে দিতে হবে আমাদের। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিশুশ্রম নিরসনের দিক নিদের্শ দিয়েছিলেন। ২০২৫ সালের মধ্যে শিশুশ্রম নিরসন করতে হবে। তৃণমূল পর্যায়ে শিশুশ্রম নিরসনে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান প্রধান অতিথি।
খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মোঃ হেলাল মাহমুদ শরীফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ তরিকুল আলম, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের যুগ্ম মহাপরিদর্শক মোঃ মতিউর রহমান, খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মোঃ নিজামুল হক মোল্যা ও খুলনা ইউনিসেফের চাইল্ড প্রটেকশন অফিসার মুমিনুন নেছা। কর্মশালায় মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মোঃ নাজমুল হক শামীম। স্বাগত বক্তৃতা করেন খুলনা কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক সানতাজ বিল্লাহ। মুক্ত আলোচনা করেন খুলনা অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ড. ফারুক আহাম্মদ, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার দপ্তরের উপপরিচালক মোঃ ইউসুপ আলী, শ্রম অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান, খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিসের উপপ্রধান তথ্য অফিসার এ এস এম কবীর, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের খুলনা অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর শেখ হারুনর রশীদ, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান প্রমুখ।
কর্মশালায় জানানো হয়, খুলনায় ২০২১-২২ অর্থবছরে থেকে নিয়মিত পরিদর্শন ৪৫১৩টি, উদ্বুদ্ধকরণ সভা ১০৭টি এবং ৪০২জন শিশুকে শ্রম থেকে প্রত্যাহার করা সম্ভব হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসন প্রকল্পের আওতায় ৯টি এনজিওর মাধ্যমে প্রায় সাত হাজার পাঁচশত জন শিশু শ্রমিককে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা এবং দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
সরকারের নানামুখী পদক্ষেপের কারণে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা কমছে এবং এ পর্যন্ত ৮টি সেক্টরকে শিশুশ্রম মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। জাতীয় শিশুশ্রম নিরসননীতি ২০১০ অনুসারে নয়টি প্রধান কৌশলগত ক্ষেত্র চিহিৃত করা হয়েছে। এগুলো হলো: নীতি-বাস্তবায়ন ও প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি ও উদ্বুদ্ধকরণ, আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ, কর্মসংস্থান ও শ্রমবাজার, শিশুশ্রম প্রতিরোধ এবং শ্রমে নিযুক্ত শিশুদের সুরক্ষা, সমাজ ও পরিবারে পুন:একীভূতকরণ ও গবেষণা ও প্রশিক্ষণ।
কর্মশালায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলার জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, শ্রমিক, মালিক, শিশু ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন। খুলনা কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।