গাইবান্ধা জেলা ব্যুরো প্রধানঃ দুই মাস ছয় দিন ধরে বিছানায় কাতরাচ্ছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের হাতিয়া গ্রামের আলতাফ হোসেনের মেয়ে আশরাফি আক্তার। সাড়ে সাত বছর বয়সী এই শিশুটি শীতকালে বাড়ীর পাশে খেলতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়। এরপর তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু অর্থের অভাবে কৃষক বাবা আলতাফ হোসেন শিশুটিকে ঢাকায় নিতে না পেরে বাড়ীতে নিয়ে আসেন। চিকিৎসার অভাবে এখন শিশুটি যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে। বিনা চিকিৎসায় ধুকে ধুকে দিনাতিপাত করছে সে। এ অবস্থায় উন্নত চিকিৎসা করাতে না পারলে দরিদ্র পরিবারের এই শিশুটি মৃত্যুর দিকে ধাবিত হবে বলে আশঙ্কা করছেন স্বজনরা।
পারিবারিক সূত্র জানায়, আশরাফি বাড়ীর পাশ্ববর্তী একটি বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। আর বাবা আলতাফ হোসেন কৃষি কাজ করেন। মা গৃহিনী। সংসারে আরও দুই বোন আছে আশরাফির। বড় বোন ষষ্ঠ শ্রেইিতে পড়ে ও ছোট বোনের বয়স এক বছর তিন মাস। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর শীতের মধ্যে বাড়ীর পাশে আরেক শিশুর সাথে খেলতে যায় আশরাফি আক্তার। সেসময় দিয়াশলাই দিয়ে আগুন জ্বালানোর সময় হঠাৎ পরনের জামায় আগুন লাগে আশরাফির। তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সাথে সাথে আশরাফিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে রেফার্ড করলে সেখানে ভর্তি করা হয় আশরাফিকে। চিকিৎসকরা আশরাফিকে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু অর্থাভাবে যেতে না পেরে ১১দিন রমেক হাসপাতালে চিকিৎসার পর আশরাফিকে বাড়ী নিয়ে যান বাবা-মা। বাড়ী ফিরে এখন অসহায় জীবনযাপন করছে শিশুটি। এ অবস্থায় সমাজের মানবদরদি মানুষের কাছে সাহায্য চেয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারটি।
আলতাফ হোসেন বলেন, অর্থের অভাবে আমার অগ্নিদগ্ধ মেয়েটিকে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাতে পারছিনা। তাই আমার সন্তানের উন্নত চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তশালী মনবদরদি মানুষদের প্রতি অনুরোধ আমাকে সাহায্য করেন। সেই টাকায় আমি মেয়েটার চিকিৎসা করাই। আশরাফির বাবা আলতাফ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন ০১৭০১-৫১৬৭৩১ এই মোবাইল নম্বরে।
শিশুটিকে চিকিৎসার বিষয়ে গাইবান্ধার সিভিল সার্জন ডা. আ. ম. আখতারুজ্জামান বলেন, পুড়ে যাওয়া রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য একমাত্র হাসপাতাল হচ্ছে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট। সেখানে বিনামূল্যে চিকিৎসা করানো হয়। গরীব হলে সেখানে হয়তো আরো বেশি সুযোগ-সুবিধা পাবে শিশুটি। এর বাহিরে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে আশরাফির জন্য কিছু করার নেই বলেও জানান সিভিল সার্জন।