গাইবান্ধা জেলা ব্যুরো প্রধানঃ
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী সন্তানকে কুপিয়ে জখম করেছে দূর্বৃত্তরা, দেখার কেউ নেই।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, গত ১ এপ্রিল বিকেলে উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের এনায়েতপুর গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক এর স্ত্রী সন্তানদের উপর লোহার রড, লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালান একই গ্রামের মৃত আঃ রহিম এর ছেলে শহিদুল আকন্দ, শহিদুল আকন্দের ছেলে শাহিন আকন্দ গং’রা। শাহিন আকন্দ গংরা এসময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ রাজ্জাক এর নিরীহ স্ত্রী বেগম ও সন্তান রাসেল, জাহিদ ও ববিতাকে।
এসময় মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী ও তার মেয়ের পরিধেয় বস্ত্র ধরে টানা হেঁচরা ও শ্লীলতাহানির করেন অভিযুক্ত শহিদুল (৫৫)। পরে শহিদুলের হুকুমে তার ছেলে শাহিন (২৫), শহিদুলের স্ত্রী রহিমা বেগম (৫০), শাহিনের স্ত্রী আখি বেগম (২২), রেজা আকন্দের স্ত্রী আঞ্জুয়ারা বেগম (২৮), লোহার রড লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্রসস্ত্রসহ হামলা চালায়। এসময় মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী জাহানারা বেগম ও তার সন্তান জাহিদকে কুপিয়ে জখম করে। পরে গুরুতর রক্তাক্ত অবস্থায় জাহানারা বেগম ও জাহিদকে সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এদিকে হামলাকারী শাহীন গংরা এলাকায় বিভিন্নভাবে প্রভাব খাটিয়ে প্রাণ নাশের হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটির।
উল্যেখ্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক এর স্ত্রী কয়েক বছর আগে সরকার থেকে প্রাপ্ত (স্বামীর) মুক্তিযোদ্ধা ভাতার টাকা জমিয়ে সন্তানদের জন্য ৪শতাংশ জমি কিনেছেন। জমি বিক্রেতা সয়ং তাকে জমি দখলও দিয়ে দেন।
কিছুদিনপর সেই জমিতে নজর পরে পার্শ্ববর্তী শাহিন আকন্দ গংদের। সেই জমিটি ক্ষমতার দাপটে প্রভাব খাটিয়ে জোরকরে ভোগ-দখলের পায়তারা চালায় তারা। এনিয়ে একাধিকবার মামলা ও করেছিলেন অভিযুক্তরা।
কিন্তু কাগজপত্রের বৈধতা বিচারে প্রতিবার নিজেদের পক্ষে রায় পান মুক্তিযোদ্ধা আঃ রাজ্জাক এর পরিবার।
কিন্তু শাহিন গংরা বরাবরেই আদালতের রায় অমান্য করে নিরীহ এই পরিবারটির উপর বারবার মিথ্যা মামলা-হামলা করে আইন আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এলাকায় অহেতুক দাঙ্গা হাঙ্গামা সৃষ্টি করে আসছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
আব্দুর রহমান নামে একজন প্রতিবেশি বলেন, শাহিন এর পরিবারে লাঠির সংখ্যা বেশি বলে সে নিরীহ এই পরিবারটির উপর অহেতুক হয়রানিমুলক মামলা হামলা করে যাচ্ছে। তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।
জমি বিক্রেতা মেনাজ উদবদিন বলেন, আমি এই মামলার বাদী এবং বিবাদী উভয় পক্ষের নিকট ই জমি বিক্রয় করেছি।
কিন্তু শাহিনেরা অন্যায়ভাবে মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের উপর মিথ্যা মামলা-হামলা করে হয়রানি করছে। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
এব্যাপারে গত ৩ এপ্রিল সাদুল্লাপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে, মামলা নং- ৩/২০২২।
এব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রাকিবুল ইসলাম বলেন, মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের উপর হামলার ঘটনা ন্যাক্কার জনক। যারা জীবন বাজী রেখে সংগ্রাম করে দেশটাকে আমাদের জন্য নিরাপদ করে দিয়ে গেছেন, আজ তাদের পরিবার ছুরিকাঘাতে আহত, এটা শাস্তিযোগ্য। অপরাধিদের খুব দ্রতই আইনের আওতায় আনা হবে। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে।
অনতিবিলম্বে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।