গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে রামজীবন ইউনিয়নের পূর্ব রামজীবন গ্রামে সরকারের খাস জমিতে প্রায় ২৬ বছর ধরে বসবাস করেন জেলেখা বেগম (৭০) ও তার স্বামী খলিলুর রহমান (৭৫)। এই বৃদ্ধ বয়সেও জীবিকার সন্ধানে ছুটে চলেন এদিক-সেদিক। সারাদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে ভালোভাবে ঘুমাবেন সেটিও পারেন না। কারণ খড়ের বেড়া ছাপড়া ঘরে রাত কাটে তাদের আতঙ্কে।
ঘরের ছাউনি ও বেড়া ভাঙাচোরা, বর্ষায় কিংবা বৃষ্টির দিনে পানি ঢুকলেও দিন শেষে রাতে ওই ভাঙাচোরা ঘরেই থাকতে হয় তাদের। সামান্য ঝড়-বৃষ্টি ও বাতাস হলেই ঘরটি দুলতে শুরু করে। ঘরে আসবাব বলতে আছে একখানা পুরাতন ভাঙা চৌকি।
নেই কোনো স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট কোনো বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থাও। দারিদ্রতা আর অভাব অনটনের কারণে থাকার ঘরটিও মেরামত করতে পারছেন না তিনি।
খলিলুর রহমান জানান, প্রায় ৩০ বছর ধরে দিনমজুরির কাজ করলেও তার অভাব-অনাটন পিছু ছাড়েনি কখনো। ভাঙা ঘরে স্ত্রীকে নিয়ে খুব কষ্ট করে জীবনযাপন করছেন।স্ত্রী জেলেখা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, সমাজের বিত্তবানসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কাছে অনেকবার গিয়েছিলাম শুধুমাত্র একটি ঘরের জন্য। কেউ কোনো ব্যবস্থা করে দেয়নি। এখন যে ঘরে আছি, সেটা বসবাসের উপযোগী নয়। একটু বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে, বাতাস উঠলে ঘর হেলেদুলে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খলিলুর রহমান ও তার স্ত্রী জেলেখা বেগম পূর্ব রামজীবন গ্রামে সরকারি খাস জমিতে প্রায় ২৬ বছর ধরে বসবাস করেন। তাদের সাথে আরও অর্ধশতাধিক ভূমিহীন পরিবার ছিলেন ওই খাস জমিতে। পরবর্তীতে ওই খাস জমিতে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর উত্তোলন হয়। তার প্রতিবেশিরা ঘর পেলেও তিনি ঘর পাননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল-মারুফ বলেন, এ বিষয়ে কেউ আমার সাথে যোগাযোগ করেনি। তবে গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে বিষয়টি কেবলমাত্র অবগত হলাম। খতিয়ে দেখে তাকে খুব শীঘ্রই ঘর দেওয়া হবে।