বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৮:৩১ অপরাহ্ন
ঘোষনা
তালাকের পর যৌতুকসহ বিভিন্ন মামলা দিয়ে হয়রানি রাজশাহী জেলার পাঁচটি সংসদীয় আসনে প্রার্থী ঘোষণা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর স্বাস্থ্য প‌রি‌ষেবায় নতুন মাইলফলক স্থাপন করল কোলকাতার ডিসান সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে শিশুকে ধর্ষণ, অভিযুক্ত ভ্যানচালক আটক প্রাণের মেলা জাতীয় কবি পরিষদ এর ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠিত নিষিদ্ধ সংগঠনের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যাবস্হা নেয়া হবে। নেছারাবাদে পুলিশ সুপার আবু নাসের পাসপোর্টে থাকছে না পুলিশ ভেরিফিকেশন শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে ভোলায় জেলা সেচ্ছাসেবক দলের আনন্দ মিছিল শরীয়তপুর এসএসসি ২০০০ ব্যাচের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত মুরাদনগরে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত:৮১ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক!

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী সৌরভ কে বিয়ে করে প্রশংসায় ভাসছেন কেয়া মনি

রানা ইস্কান্দার রহমান
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১৪ মার্চ, ২০২২
  • ২০৬ বার পঠিত

গাইবান্ধা জেলা ব্যুরো প্রধানঃ স্রোতে গা ভাসিয়ে চলতেই মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। তবে যুগে যুগে কিছু মানুষ এসেছেন যারা স্রোতের বিপরীতে চলে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। স্রোতের বিপরীতে চলা এমনই এক সুন্দরী তরুণীর দেখা পাওয়া গেল গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায়। যিনি নিজে একজন সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষ হওয়া সত্তে¡ও বিয়ে করেছেন বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী এক তরুণকে। যা ছুঁয়ে গেছে গাইবান্ধাসহ পুরো দেশের মানুষের হৃদয়।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের কেয়ামনির ১৮ বছর বয়সী কেয়ামনি সুশ্রী হওয়া সত্তে¡ও ২৫ বছর বয়সী সৌরভ ঘোষ সোনা নামে এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীকে বিয়ে করেছেন। সৌরভকে আদর-ভালোবাসা দিয়ে সুস্থ করে সংসার জীবনে সফল হয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চান এই তরুণী।

কয়ামনি গাইবান্ধার সুন্দগঞ্জের পূর্ব ছাপরহাটি গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী শ্রী গণেষচন্দ্র মোহন্তর চতুর্থ মেয়ে। আর সৌরভ গাইবান্ধা পৌরসভার ডেভিড কোম্পানি পাড়ার অ্যাডভোকেট সুশীল কুমার ঘোষের দ্বিতীয় ছেলে। হিন্দু রীতি অনুযায়ী গত ৪ মার্চ জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।বিয়ের পর কেমন কাটছে তাদের জীবন- দেখতে শনিবার (১২ মার্চ) দুপুরে শহরের ডেভিট কোম্পানি পাড়ার বাসায় কথা হয় সাংবাদিকের সঙে ।
সৌরভ এর কাছে বউ কোথায় জানতে চাইলে সৌরভ জানান, কেয়ামনিকে বউ বলে মানতে নারাজ সৌরভ। বউ নয়, কেয়ামনি তার গার্লফ্রেন্ড (প্রেমিকা)। পরে দুজনকেই চেয়ারে পাশাপাশি বসান মা সুলেখা দাস।গল্পের এক পর্যায়ে কেয়ামনি জানান, নয় দিনের সংসার জীবনে সৌরভের অনেক ভাব-ভাষাই বুঝতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। তবে শুরুটা অনেক কঠিন ছিল। কেয়ামনি বিশ্বাস করেন তার এই যুদ্ধে কিছুটা সময় লাগলেও তিনি সফল হবেন।

কেয়ামনি আরও বলেন, সৌরভের বাহ্যিক চেহারা ও কথাবার্তায় কিছুটা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী মনে হলেও আচরণগত তার কোনো ত্রুটি নেই। আমি আমার জীবনের সবটুকু দিয়ে তাকে স্বাভাবিক করে তুলতে চাই। আমি পারব, এটি আমার বিশ্বাস। বাইরের লোক আমাকে নিয়ে অনেক নেতিবাচক মন্তব্য করতেই পারে, তাতে আমার কিছু আসে যায় না।
কেন এত ত্যাগ আর প্রতিজ্ঞা? এমন প্রশ্নের জবাবে কেয়ামনি বলেন, প্রথম দেখাতেই সৌরভকে আমার ভালো লেগেছিল। আর সেই ভালো লাগা এক সময় ভালোবাসায় রুপ নেয়। পরে তাকে আমি বিয়ে করি।সৌরভের মা সুলেখা দাস বলেন, গর্ভ ধারণের আট মাস ১০ দিনের মাথায় অপরিণত বয়সে জন্ম হয় সৌরভের। ডাক্তার তার বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হওয়ার ব্যাপারে আগেই বলেছিলেন।
কেয়ামনির পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সুলেখা বলেন, কেয়ামনি শিক্ষিত পরিবারের যোগ্য মেয়ে। বিয়ের মাত্র আট দিনেই আমার ছেলেটাকে আপন করে নিয়েছে। সেবা করছে। এখন সৌরভকে নিয়ে আর চিন্তা নেই। আমরা দেশ ও দেশের বাইরে সৌরভের চিকিৎসা করিয়েছি, কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। তবে, আমি মনে করি, আমার বউমার সেবা আর ভালোবাসা পেলে স্বাভাবিক হয়ে যাবে সৌরভ। চিকিৎসা বিজ্ঞান এই মেয়েটির কাছে হার মানবে।

কেয়ামনির বাবা শ্রী গণেষ চন্দ্র মোহন্ত বলেন, কেয়ামনি নিজে থেকেই যখন বিয়ে করতে চেয়েছে তখন আমরা ওকে বাধা দেইনি। এখন ওরা সুখী হলেই আমরা সুখী। আমার মেয়েটা ছোট থেকেই অনেক নরম। মানুষের প্রতি ওর অনেক মায়া।
বর্তমান সমাজে অনেক ক্ষেত্রেই প্রতিবন্ধীদের অবহেলা করার প্রবণতা রয়েছে। কেয়ামনির মতো তরুণী জেনে বুঝে সৌরভকে ভালোবেসে তাকে বিয়ে করার বিষয়টি ছুঁয়ে গেছে গোটা দেশ। সুখী হোক কেয়ামনি-সৌরভ, সুন্দর হোক তাদের সংসার জীবন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এ জাতীয় আরো খবর..
এই পত্রিকার সকল সংবাদ, ছবি ও ভিডিও স্বত্ত্ব সংরক্ষিত © ২০২১ দৈনিক মাতৃজগত    
কারিগরি সহযোগিতায়ঃ Bangla Webs
banglawebs999991