গাইবান্ধা জেলা ব্যুরো প্রধানঃ
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ঘুগা আব্দুল জলিল উচ্চ বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটি গঠনের লক্ষ্যে ১৮ মার্চের ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছে গোবিন্দগঞ্জ সিনিয়র সহকারী জজ (চৌকি) আদালত। পাশাপাশি এলাকাবাসী ও সাধারণ অভিভাবকরা জাল-জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত সকলের শাস্তির দাবি তুলেছে।
মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) সিনিয়র সহকারী জজ মো. মামুনুর রশিদ ঘুগা আব্দুল জলিল উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠনের যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধে নিষেধাজ্ঞা দেন। বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুসা ম্যানেজিং কমিটি গঠনের সকল কার্যক্রম বন্ধে আদালতের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, উপজেলার গুমানীগঞ্জ ইউনিয়নের ঘুগা আব্দুল জলিল উচ্চ বিদ্যালয়টি (ইআইআইএন ০০-১২১২১৬, এমপিও কোড ৮৭০৩০৬১৩০৪) বিগত সময়ে কোভিড-১৯ এর কারণে অ্যাডহক কমিটি দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসে। বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শিক্ষাবোর্ডের নির্দেশনায় নিয়মিত কমিটি গঠনের জন্য প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুজাউল ফারুক রতন কাগজপত্রে অসামজস্যর মাধ্যমে পায়তারা চালাতে থাকে। তিনি অতি গোপনে ও যোগসাজসে প্রতিষ্ঠানের দাতা সদস্য সংগ্রহ ও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অন্যান্য সদস্য নির্বাচিত করার পাশাপাশি অভিভাবক সদস্য নির্বাচনে ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করেন। বিষয়টি ফাঁস হলে অভিভাবক ও এলাকাবাসী বিক্ষুদ্ধ হয়ে জাল-জালিয়াতির কমিটি গঠন ও উৎকোচের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ষড়যন্ত্র বন্ধে বিজ্ঞ আদালতের আশ্রয় নেয়। আদালত উভয় পক্ষের কাগজপত্র যাচাই শেষে নানাবিধ সন্দেহের অবকাশ প্রতীয়মান হওয়ায় পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ম্যানেজিং কমিটি গঠনে গৃহীত সকল কার্যক্রম বন্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
আদলতের আদেশ সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহযোগীরা অতি গোপনে যোগসাজসীভাবে কাগজাদী তৈরি করেছে; ভোটার তালিকার হালনাগাদের নোটিশ, সংশোধনের নোটিশ, তালিকা প্রকাশ, নির্বাচনের তফসিল নোটিশ ইত্যাদিতে জাল-জালিয়াতির আশ্রয় গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের সভা ও বর্ণিত তফশিলে যথেষ্ট গড়মিল রয়েছে; নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্রেও একাধিক ত্রুটি এমনকি প্রার্থীদের প্রস্তাবক ও সমর্থনকারীদের ভোটার নম্বর উল্লেখ নাই। এছাড়া প্রার্থীদের প্রস্তাবক ও সমর্থনকারীরাই আদালতের দ্বারস্থ হয়; প্রধান শিক্ষক ও অ্যাডহক কমিটির সদস্যরা অনেকটাই যোগসাজসীভাবে নিজেদের লোকদের নিয়ে ম্যানেজিং কমিটি গঠনের চেষ্টারত ছিল।
এ ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুজাউল ফারুক রতন জানান, আদালত নিয়মিত ম্যানেজিং কমিট গঠনে ভোটগ্রহণ সহ সব কার্যক্রম বন্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। ১৮ মার্চ (শুক্রবার) অভিভাবকদের ভোটগ্রহণ বন্ধ করা হয়েছে। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।
এদিকে প্রতিষ্ঠানটির সাধারণ অভিভাবক ও এলাকার জনসাধারণ গোপন ম্যানেজিং কমিটি গঠন করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের স্বার্থে উৎকোচ গ্রহণের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ভবিষ্যত পরিকল্পনা ভেস্তে দেওয়ায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে। তারা জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র তৈরির ঘটনায় সম্পৃক্ত দোষি ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।