গাইবান্ধা জেলা ব্যুরো প্রধানঃ
দুর্নীতির চরম শিখরে পৌঁছে গেছে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মাহবুব হোসেন, এনেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞ ডা: মাহবুব আকন্দ ও উচ্চমান সহকারী জাকির হোসেনসহ অনেকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেখানে দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে চাচ্ছেন। সেখানে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মাহবুব হোসেন তিনি ও তার দপ্তরকে দুর্নীতির চরম শিখরে গেথে ফেলেছে। এতে করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মান ক্ষুন্ন হবার প্রতিয়মান হচ্ছে।
গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে জেনারেল হাসপাতাল ( সদর) ইন্টার্নশিপ পদে জেলার বিভিন্ন স্থান হতে আসা ভর্তি হতে ইচ্ছুক প্রার্থীদের ক্লাস ফি বাবদ কোনো প্রকার রশিদ ছাড়া ১০ হাজার টাকা করে ১০লক্ষ ও ভাইবা বাবদ ১শ ইন্টার্নশিপ শিক্ষার্থী প্রতি ৫শ টাকা করে মোট ১০লক্ষ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো: মাহবুব হোসেন, এনেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞ ডা: মো: মাহবুব আকন্দ ও উচ্চমান সহকারি জাকির হোসেন এর বিরুদ্ধে। হাসপাতালে উচ্চমান সহকারি জাকির হোসেন এর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক এসব টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে সত্যতা পাওয়া গেছে ও টাকা নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন তত্ত্বাবধায়ক।
গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতাল ঘুরে ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সূত্রে জানা গেছে- গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতাল (সদর)-এ বরাবরের ন্যায় এবারও ইন্টার্নশিপ এডমিশন/ক্লাস ফি’র জন্য শিক্ষার্থীদের থেকে শিক্ষার্থী প্রতি অগ্রিম ১০ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়ে তা ভাগবাটোয়ারা ও লুটপাট করে খাচ্ছে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: মো: মাহবুব হোসেন, এনেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞ ডা: মো: মাহবুব আকন্দ ও উচ্চমান সহকারি জাকির হোসেন ছাড়াও অনেকে। গত বছর থেকে তারা ইন্টার্নশিপ শিক্ষার্থী প্রতি এসব টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। গতবছর কয়েকমাসে কিস্তি আকারে প্রতি মাস বাবদ ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছিল শিক্ষার্থীরা। কিন্তু ২০২২ সালে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে ১০ হাজার টাকা একবারে নিচ্ছে ও চাপ প্রয়োগ করছে। এই টাকার কোনো রশিদ পাচ্ছেনা শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও গতবছর ইন্টার্নিরত শিক্ষার্থীরা ভাতা পাইলেও এবার তারা ভাতা পাচ্ছেন না বা তাদেরকে ভাতা প্রদান করবে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ১শ জনেও অধিক শিক্ষার্থীর ভর্তি বা ক্লাস ফি বাবদ ১০ হাজার টাকা ও ভাইবা পরীক্ষায় পাশ করানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৫শ টাকা করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তত্ত্বাবধায়ক ও তার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আবার ইন্টার্নশিপে ভর্তিকৃত অনেক শিক্ষার্থী তার নিকটজনকে নিয়ে গেলে কারও কারও কাছ থেকে ১০ হাজারের পরিবর্তে ৫ থেকে ৬/ ৭ হাজার টাকা নিয়েও ভর্তি নিচ্ছে।
” ঢাকার মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন পরিচালক-অধ্যাপক ডা: মো: আব্দুর রশিদ” কর্তৃক তত্ত্বাবধায়ক বরাবর ” স্বাপকম/চিশিচ/মেশমেক-২/২০০৯/২৮ তারিখ: ১৩ জানুয়ারি ২০১০ এর স্বাক্ষরিত সকল জেনারেল হাসপাতাল ( সদর) হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক বরাবর চিঠি সূত্রে জানা গেছে- মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত বেসরকারি পর্যায়ে মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল ম্যাটস এর স্থাপন নীতিমালায় বিবিধ-১১ (৪) আলোকে বেসরকারি মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল ম্যাটস করা ছাত্রছাত্রীদের ইন্টার্নশিপ ট্রেনিংয়ের জন্য আপনার প্রতিষ্ঠানে কার্যক্রমের ব্যঘাত না ঘটলে স্থায়ীভাবে অনুমতি দিতে চিঠি প্রেরন করেছে। আর এই চিঠির পরিপেক্ষিতে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে ইন্টার্ণীতে ভর্তিচ্ছুক বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ম্যাটস এর প্রায় শতাধিক ছাত্রছাত্রীদের কাজ থেকে ১০ হাজার করে মোট ১০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেবার উপক্রম করছেন তত্ত্বাবধায়ক ডা: মো: মাহবুব হোসেন, এনেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞ মাহবুব আকন্দ ও উচ্চমান সহকারি জাকির হোসেন সহ অনেকে।
“নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থীদের সাথে কথা হলে তারা জানায়- ইন্টার্নিতে ভর্তি হতে আমাদের থেকে ক্লাস ফি বাবদ ১০ হাজার টাকা করে আদায় করছে তারা। আর এই টাকার কোনো রশিদ পাচ্ছিনা আমরা। সে সাথে ইন্টার্নিরত অবস্থায় ভাতা পাওয়ার বা দেবার নিয়ম থাকলেও আমরা ভাতা পাচ্ছিনা এবং টাঙ্গাইল সহ বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে ইন্টার্ণিতে ভর্তি হতে সামান্য টাকা নিলেও গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে প্রতি মাস বাবদ ১০ মাসের একবারে ১০হাজার টাকা করে প্রতি ইন্টার্নির কাছ থেকে তত্ত্বাবধায়ক ও এ্যানেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞ ডা: মো: মাহবুব আকন্দ এর নির্দেশে উচ্চমান সহকারী জাকির হোসেন আমাদের কাছে বিনা রশিদে টাকা আদায় করছে। সে সাথে আমাদের ভাতার টাকা লুটপাট করছে।
“টাকার বিষয়ে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের উচ্চমান সহকারি “জাকির হোসেন” এর সাথে সরাসরি কথা হলে তিনি বিষয়টি স্বীকার করে বলেন- ইন্টার্নিতে ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে রশিদ বিহীন ১০ হাজার টাকা করে আদায় করছেন। তত্ত্বাবধায়ক মাহবুব হোসেন ও এনেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞ মাহাবুবুর রহমান স্যারের নির্দেশে এই টাকা আমি নিয়ে তাদেরকে প্রদান করি।
গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতাল এর এনেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞ ডা: মাহবুব আকন্দ এর সাথে সরাসরি কথা বললে তিনি টাকা নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে জানান- বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এখানে ইন্টার্নশিপ করতে আসায় অফিস খরচ ও ক্লাস করানোর উপকরন বিষয়ে প্রতি মাস ১ হাজার টাকা করে ১০ মাসের ১০ হাজার টাকা একবারে অফিশিয়ালি নেয়া হচ্ছে শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষর নিয়ে। আর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী হওয়ায় ইন্টার্ণশিপ দের কোনো বেতন দেবার নিয়ম নেই।
শুধু তাই নয়- এছাড়াও ঢাকার মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে তত্ত্বাবধায়ক বরাবর ইন্টার্নির বিষয়ে ইস্যু করা চিঠির ডকুমেন্ট চেলে তা দিতে নারাজ ডা: মাহবুব আকন্দ। এতে করে বোঝা যাচ্ছে থলের মধ্যে বিড়াল লুকিয়ে আছে।
উল্লেখ্য, টাঙ্গাইলে ম্যাটস সহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী