গাজীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ গাজীপুরের শ্রীপুরে স্বেচ্ছাসেবীর রক্ত বিক্রির অভিযোগ উঠেছে মাওনা চৌরাস্তার নিউ পদ্মা ডিজিটাল হাসপাতাল কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে আজ শুক্রবার (১৮ মার্চ) সকাল থেকে হাসপাতালের সামনে গাজীপুর ও আশপাশেরর ৩০টি রক্তদাতা সংগঠনের সদস্যরা। প্রতিবাদের মুখে উপজেলা নির্বাহি অফিসার মো. তরিকুল ইসলামের ভ্রাম্যমাণ আদালত ওই হাসপাতালকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
জানা যায়, গত বুধবার (১৬ মার্চ ) ওই হাসপাতালে পিয়া (২২) নামের এক নারীর সিজারিয়ান অপারেশন হয়। এ জন্য তার বি- নেগেটিভ রক্তের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। রোগীর স্বামী অটোরিকশা চালক বিজয় রক্ত ব্যবস্থা করার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। রক্তের জন্য রোগীর স্বামীর নিকট প্রথমে ৭হাজার টাকা দাবি করা হয়। পরে ৬হাজার টাকায় রক্ত দিতে রাজী হয় হাসপাতালের লোকজন। স্বেচ্ছাসেবীর রক্ত বিক্রি করে রোগীর নিকট থেকে হাতিয়ে নেয় ৬হাজার টাকা।
স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠন সিএইচবি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা পারভেজ প্রধান জানান, বিপ্লব চন্দ্র সরকার নামে একজন স্বেচ্ছাসেবী বিনামূল্যে ওই রোগীকে রক্ত দান করেন। গাজীপুর ও আশপাশেরর ৩০টি রক্তদাতা সংগঠনের লোকজন এ ঘটনায় শুক্রবার সকালে হাসপাতালের সামনে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করে। স্বেচ্ছাসেবীর রক্ত বিক্রির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। প্রথমে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিপ্লবের কাছ থেকে এক ব্যাগ রক্তের জন্য ৭হাজার টাকা দাবি করেন। তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে ৬হাজার টাকা রক্ত কেনা বাবদ পরিশোধ করেন।
রক্তদাতা বিপ্লব চন্দ্র সরকার জানান, নিউ পদ্মা হাসপাতালের মালিক মো. শাহাবুদ্দিন দরিদ্র রোগীর জন্য এক ব্যাগ বিগ নেগেটিভ রক্তের প্রয়োজন বলে তাকে ফোন দেন। এর পর গত বুধবার(১৬মার্চ) বিকেল তিনটা ১৫ মিনিটের দিকে তিনি নিউ পদ্মা হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে এক ব্যাগ রক্ত দান করেন। এর বিনিময়ে তিনি কোনো টাকা নেননি। এক মায়ের অপারেশনের জন্য এ রক্ত তিনি বিনামূল্যে দান করেছেন।কিন্তু রক্ত দেয়ার পর তিনি রোগীর স্বামী বিজয়ের কাছ থেকে জানতে পারেন হাসপাতালের মালিক তার নিকট থেকে রক্তের জন্য ৬হাজার টাকা নিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, রক্ত বিক্রির বিষয়টি শুনে দুঃখ পেয়েছি। মানবতার সেবায় বিনামূল্যে দেয়া রক্ত এভাবে বিক্রি করা খুবই দুঃখজনক।
নিউ পদ্মা হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক পক্ষের মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, রক্ত বিক্রি করা হয়নি। সিজারিয়ান অপারেশনের খরচ বাবদ ৬হাজার টাকা জমা নেয়া হযয়েছে। তিনি রক্ত বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করেন।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, রক্ত বিক্রির অপরাধে হাসপাতালে মালিককে ২০হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, ভুক্তভোগী নারীর সকল চিকিৎসা খরচ সম্পুর্ণ বহন করবে হাসপাতাল কতৃপক্ষ। রক্তের জন্য নেয়া ৬ হাজার টাকা ও ফেরত দিবে।