গাজীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ গাজীপুরের কালিয়াকৈরে হাত, পা, মুখ বেঁধে গলা কেটে চালক মনিরুল ইসলামকে (২২) খুন করে অটোরিক্সা ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারী। ক্লুলেস এ ঘটনার চারদিনের ব্যবধানে রহস্য উদঘাটন করেছে গাজীপুর জেলা পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত ৫ কিশোর ও যুবককে গ্রেফতার এবং ছিনতাইকৃত অটোরিক্সা উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহষ্পতিবার (২৪ মার্চ) বিকেলে গাজীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম শফিউল্লাহ এ তথ্য জানিয়েছেন।
হত্যার শিকার মনিরুল ইসলাম সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার দুলদিয়ার গ্রামের কাঙ্গাল প্রামানিকের ছেলে। গ্রেফতারকৃতরা হলো শান্ত (২০), সুমন দাস (২০), শাহীন ইসলাম (১৯), লিপন ওরফে রিপন (২১) এবং আলম হোসেন (২৮)।
এসপি এস এম শফিউল্লাহ জানান, গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ির আমবাগ এলাকার ভাড়া বাসায় থেকে অটোরিক্সা চালাতো মনিরুল ইসলাম। গত ১৭ মার্চ বিকেলে বাসা থেকে অটোরিক্সা নিয়ে বের হয়। রাতে বাসায় না ফেরায় স্বজনেরা সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি। পরদিন বিকেলে কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক বরাবো গ্রামের সরকারি পুকুরের পাশে আকাশমনি গাছের বাগানে হাত-পা বাঁধা ও মুখে স্কচটেপ পেঁচানো অজ্ঞাত এক যুবকের লাশ পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসি। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজ উদ্দিন আহমদ মেডেকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে স্বজনেরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মনিরুল ইসলামের লাশ শনাক্ত করে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।
তিনি জানান, ঘটনার পরপরই পুলিশের একাধিক টিম ক্লুলেস এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান শুরু করে। পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ওই ৫ জন কিশোর ও যুবককে বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করে। এসময় তাদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে নিহতের ছিনতাইকৃত অটোরিক্সা ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলা এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে
পুলিশ সুপার গ্রেফতারকৃতদের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, ঘটনার দিন বিকেলে যাত্রীবেশে শান্ত, শাহীন ও সুমন দাস কোনাবাড়ির আমবাগ এলাকা থেকে মনিরুলের অটোরিক্সা ভাড়া করে কালিয়াকৈরের মৌচাক চা বাগান এলাকায় নিয়ে যায়। রাত ১০টার দিকে সেখান থেকে তারা ওই রিক্সা নিয়ে বরাবো এলাকার সরকারি পুকুরের পার্শ্ববর্তী আকাশমনি গাছের বাগানে যায়। সেখানে শান্ত ও শাহীন স্কচটেপ দিয়ে মনিরুলের মুখ ও দুই হাত পেঁচিয়ে ফেলে এবং ঝুট কাপড় দিয়ে দুই পা বেঁধে ফেলে। পরে তারা ঝুট কাপড় দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে মনিরুলকে শ্বাসরোধ করে। পরে সুমন দাস এন্টিকাটার দিয়ে গলাকেটে মনিরুলকে খুন করে নিহতের অটোরিক্সাটি নিয়ে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। ছিনতাইকৃত ওই অটোরিক্সা মহানগরের বাসন থানা এলাকার আলমের কাছে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করে। এর প্রেক্ষিতে ক্লুলেস ও চাঞ্চল্যকর এ হত্যার রহস্য উন্মোচন হয়েছে।