নিজস্ব প্রতিবেদকঃ আগুনে পুড়ে ঘরের শেষ চিহ্নটুকুও আর নেই। যেখানটায় ঘর ছিল তার এক কোনায় পড়ে আছে আধা পোড়া চাল। এর পাশেই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ঝলসানো লেপ-তোশক,হাঁড়ি-পাতিল। পুড়ে যাওয়া ঘরের কাট কয়লার দিকে তাকিয়ে নির্বাক বসে আছেন দুই জননীর মাতা যমুনা বেগম।
যমুনা বেগমের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার সাজাইল ইউনিয়ন রাইতকান্দি গ্রামে। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ২টার দিকে তার বাড়ি আগুনে পুড়ে যায়।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারী) সকালে সরেজমিনে যেয়ে দেখা যায়, আগুনে পুড়ে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া টিনগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। পোড়া বাড়ি দেখতে ভিড় করছে স্থানীয় লোকজন। আর ঘরের দিকে তাকিয়ে ফুফিয়ে কাঁদছেন যমুনা বেগম।
যমুনা বেগম বলেন, বুধবার রাতে এশার নামাজের পর আমার ২ সন্তান নিয়ে খাওয়া দাওয়া শেষ করে প্রতিদিনের মত ঘুমিয়ে পড়ি। আমার স্বামী মোঃ দেলোয়ার হোসেন ঢাকায় থাকেন। রাত আনুমানিক ১টা ৪৫ মিনিটের সময় আগুন আগুন চিৎকার শুনে চোখ খুলে দেখতে পাই আমার পুরো ঘরে আগুন জ্বলছে। তখন আমার ২ সন্তানকে নিয়ে আমি ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। ততক্ষণে আমার রান্নার ঘর সহ পুরো বাড়ি আগুনে পুড়ে যায়। এখন আমি এই ২ সন্তান নিয়ে কোথায় যাবো দিশা খুঁজে পাচ্ছিনা।
যমুনা বেগমর স্বামী দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমি ঢাকায় একটা ছোট চাকুরি করি। আমার সারা জীবনের পারিশ্রমিক দিয়ে একটা ঘর দিয়েছি। রাতে আমার বাড়িতে কোন রান্না হয়নি, কারেন্ট লাইন থেকেও কোন আগুন লাগেনি। তাহলে আগুন ধরলো কী ভাবে। এটা সম্পুর্ণ শত্রুতা করে আগুন লাগানো হয়েছে।
আগুনের খবর পেয়ে আমি বৃহস্পতিবার সকালেই বাড়িতে আসি। আমার বাবা মোঃ বিলায়েত হোসেন ও পাড়াপড়শি মাধ্যমে জানতে পারি যখন আগুনে আমার ঘর পুড়ছে তখন আমাদের পাশের বাড়ির মোঃ ইনামুল হকের ছেলে মোঃ আমিনুল হক আমার বাড়ির পিছ দিয়ে দৌড়ে পালাচ্ছে দেখতে পায়। পরে সকলে মিলে আমিনুল’কে পালানোর সময় দাবড়িয়ে ধরেন। আমিনুল আগুন লাগানোর বিষয় শিকারও করে।
আমিনুলের এই কার্যকলাপ অনেক পুরনোই। এ বিষয়ে পরিতানের জন্য একাধিক গ্রাম্য বিচার, কাশিয়ানী নির্বাহী কর্মকর্তা এবং কাশিয়ানী থানায় একাধিকবার অভিযোগও করা হয়েছিল।
যমুনা বেগমের পরিবার এখনও কোন সরকারি সহায়তা পাননি। সাজাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মাহবুব আলম সেলিম বলেন, যমুনা বেগম ও দেলোয়ার হোসেন খুবই গরিব মানুষ। ছোট একটা চাকরি দিয়ে সংসার চালায়। আগুনে তাদের বাড়ি পুড়ে গেছে। বিষয়টি ইউএনও জানান হবে।