গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার শালমারা ইউনিয়নের ঘুঘাগাড়ামারা গ্রামে জমিজমা নিয়ে দ্ব›েদ্বর বিবাদ মেটাতে গিয়ে ওই গ্রামের হাফিজার রহমান (৬৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত ও অপর দুই আইনজীবিসহ ৫ জন আহত হয়েছেন। নিহত হাফিজার রহমান ওই গ্রামের মৃত মছির উদ্দিনের ছেলে। আহত ২ জনকে শুক্রবার রাতে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাফিজার রহমান মারা যান। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই নারীকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও এলাকাবাসি সুত্রে জানা গেছে, ওই উপজেলার ঘুঘাগাড়ামারা গ্রামের জবেদ আলীর ছেলে আব্দুস ছাত্তার ও মৃত বাবলু মিয়ার ছেলে নাজমুল ইসলামের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমাজমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।
সম্প্রতি ছাত্তার মিয়া এককভাবে খুঁটি দিয়ে ওই বিরোধপূর্ণ জমির সীমানা নির্ধারণ করেন। পরে ওই খুঁটি প্রতিপক্ষ নাজমুল ইসলাম উপড়ে ফেলে তার দখলে নেন। এরপর মামলা হলে আদালত উভয়পক্ষকেই জমিতে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে নাজমুল ইসলামসহ প্রতিপক্ষের লোকজন নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ওই জমির দখল নিতে যায়।
এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ শুরু হলে এলাকাবাসির উদ্যোগে সালিশী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। শালিসের সিন্ধান্ত মনমতো না হওয়ায় নাজমুল ইসলাম তার সহযোগীদের নিয়ে শালিসকারীদের উপর হামলা চালিয়ে মারপিট করে। ওই গ্রামের হাফিজার রহমান (৬৫), তার ছেলে গাইবান্ধা বার এসোসিয়েশনের আইনজীবি সাজু মিয়া (৩৫) ও সাদেক আলীর ছেলে অপর আইনজীবি আব্দুর রশিদ (৩২) সহ ৬ জন গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। এর মধ্যে মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হাফিজার রহমান ও তার ছেলে অ্যাডভোকেট সাজু মিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাদের ২ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। ওইদিন দিবাগত রাত ৯টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাফিজার রহমান মারা যান।
শুক্রবার রাতে এলাকায় এ মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে গ্রামবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এ সময় অভিযুক্ত নাজমুলের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে বিক্ষুব্ধরা। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই এলাকার নব নির্বাচিত ইউপি সদস্য শাহজাহান আলীর স্ত্রী জোসনা বেগম ও তার মেয়ে তিথি আক্তারকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। গতকাল শনিবার দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সি-সার্কেল) উদয় সাহা, ওসি ইজার উদ্দিনসহ পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইজার উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।