সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার: মোঃ শাকিল খান রাজু:
ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’র প্রভাবে ভয়াবহ জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে ভোলার মনপুরা উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টার দিকে মেঘনা নদীর পানি হঠাৎ করেই বিপদসীমার ৬০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করে, যার ফলে ৫ থেকে ৭ ফুট উচ্চতার জোয়ারে তলিয়ে যায় উপজেলার চরাঞ্চল ও নিচু বসতিগুলো। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অন্তত তিন হাজার মানুষ।
বিশেষ করে বেড়িবাঁধবিহীন চরকলাতলী ও চরনিজাম এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। গবাদিপশু মারা যাওয়ার ঘটনাও নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় প্রশাসন। মনপুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিখন বনিক জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরির কাজ চলছে।
সারা রাত ধরে দমকা হাওয়া ও ভারি বৃষ্টিতে উপকূলীয় জনপদে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। বৃহস্পতিবার দুপুরে হঠাৎ পানি বেড়ে গেলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয় এবং ঘরবন্দি হয়ে পড়েন হাজারো মানুষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হাজিরহাট ইউনিয়নের দাসেরহাট, চরমরিয়ম, সোনারচর ও চরযতিন গ্রামসহ ১ নম্বর মনপুরা ইউনিয়নের লঞ্চঘাট, আন্দিরপাড় ও কাউয়ারটেক এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল পানির নিচে চলে গেছে। এসব এলাকায় গৃহপালিত পশু, রাস্তাঘাট ও বসতঘর ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ভোলা ডিভিশন-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, “মেঘনার পানি বিপদসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিকভাবেই প্লাবিত হয়েছে। এটি ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’র প্রভাবে সৃষ্ট উচ্চ জোয়ারের ফলাফল।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পানি বাড়ার গতিবেগ ছিল এতটাই দ্রুত যে অনেকেই ঘর থেকে বের হওয়ার সুযোগ পাননি। উপকূলজুড়ে এখন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে—আশঙ্কা করা হচ্ছে, আবহাওয়া আরও খারাপ হলে দুর্ভোগ বাড়বে আরও।