সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:১৭ পূর্বাহ্ন

চরাঞ্চলের গর্ভবতী মা ও শিশুর দিবা-রাত্রি সেবায় চালু হলো ‘মমতার তরী’

রানা ইস্কান্দার রহমান
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২১ জুন, ২০২২
  • ১৭৯ বার পঠিত

গাইবান্ধার জেলা ব্যুরো প্রধানঃ

প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের গর্ভবতী মা ও নবজাতক শিশুর জরুরি ও নিরাপদ স্থানান্তরসহ এবং দ্রুত উন্নত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে নিয়ে আসার জন্য এসকেএস ফাউণ্ডেশন, সেভ দ্য চিলড্রেন এবং স্বাস্থ্য ও পরিববার পরিকল্পনা অধিদপ্তর যৌথভাবে গাইবান্ধায় চালু করেছে বিশেষ নৌকা – ‘মমতার তরী’। Basic Life Support, জরুরি ঔষধ, শয্যা, ওয়াশরুম, বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থাসহ এবং ২৪ ঘন্টা নিরবিচ্ছিন্ন নৌ-পথ পারাপারের ব্যবস্থা রেখে চালু হয়েছে বিশেষ এই নৌকা। ২০ জুন ২০২২, গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার বালাসী ঘাটে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিশেষ এই নৌকার উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মো. অলিউর রহমান, জেলা প্রশাসক, গাইবান্ধা।

‘মমতার তরী’ উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধান অতিথি বলেন, “অন্যান্য অধিকারের মতোই স্বাস্থ্যও মানুষের মৌলিক অধিকার। যোগাযোগ প্রতিবন্ধকতার কারণে চরের লোকেরা উন্নত স্বাস্থ্যসেবা থেকে পিছিয়ে রয়েছে। পিছিয়ে পড়া চরের প্রান্তিক মানুষের বিশেষ করে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবায় এই নৌকা বিশেষ ভূমিকা রাখবে। এটা একটি সুন্দর এবং এলাকা উপযোগী উদ্যোগ।“

ফুলছড়ি উপজেলার চেয়ারম্যান জিএম সেলিম পারভেজের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আলাউদ্দিন, সেভ দ্য চিলড্রেন’র এ দেশীয় পরিচালক ওনো ভ্যান ম্যানেন, KOICA BD-এর এ দেশীয় উপ-পরিচালক হন সাং ক্যাং এবং সেভ দ্য চিলড্রেন কোরিয়ার পরিচালক (GDP) মিনজি ক্যাং।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার বলেন, “আশাকরি, মা ও শিশুর সেবায় এই নৌকা সুবিধা চরের জনসাধারণকে জানানোর জন্য এখানকার স্থানীয়, শিক্ষিত ও সচেতন যুব সমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন।“

সেভ দ্য চিলড্রেন-এর এ দেশীয় পরিচালক বলেন, “বন্যা ও নদীভাঙ্গনে সৃষ্ট দুর্গমতায় গর্ভবতী মা ও নবজাতক শিশুদের জরুরি ও তাৎক্ষণিকভাবে নিরাপদ ও সেবাদান কেন্দ্রে পৌছানোর জন্য এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।“

ফুলছড়ি উপজেলার নির্বাহী অফিসার বলেন, “চরের সাথে জেলা শহরের যোগাযোগ জটিলতায় চরের গর্ভবতী মা ও নবজাতক শিশু অনেক সময় পথেই মারা যায়। এই নৌকা সেই আশঙ্কা অনেকটা দূর করবে বলে মনে করি।“

KOICA BD ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, “এলাকার মানুষের সেবায় এই উদ্যোগ টিকিয়ে রাখার জন্য সকলের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করা দরকার। তবেই টেকসই উন্নয়ন করা সম্ভব।“

অনুষ্ঠানের সভাপতি বলেন, “এই সেবাটি চালুর মাধ্যমে চরাঞ্চলের গর্ভবতী মা ও নবজাতক শিশুর অনাকাংক্ষিত মৃত্যুর সংখ্যা কমে যাবে। চরাঞ্চলের মানুষের সেবায় এই সেবাটি চলমান রাখা এবং আরো প্রসারিত করা দরকার।

অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানিয়ে এসকেএস ফাউণ্ডেশনের উপ-নির্বাহী প্রধান ড. ইমরুল কায়েস মনিরুজ্জামান বলেন, “দেশে উন্নয়ন হয়েছে, দেশ এগিয়ে গেছে। তারপরও, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলো উন্নয়নের দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোর মধ্যে গাইবান্ধার চরাঞ্চল অন্যতম। এই বাস্তবতায় চরাঞ্চলের গর্ভবতী মা ও নবজাতকের নিরাপদ, জরুরি এবং উন্নত প্রসূতিকেন্দ্রে স্থানান্তরের মাধ্যমে মা ও শিশু মৃত্যু রোধ অনেকাংশে সম্ভব হবে বলে এসকেএস ফাউণ্ডেশন মনে করে।“

প্রত্যন্ত চর অধ্যুষিত গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ও এরেন্ডাবাড়ী ইউনিয়ন, এবং সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের গর্ভবতী ও প্রসূতি মা এবং নবজাতক শিশুর বিলম্বে এবং বিড়ম্বনায় স্থানান্তরজনিত মা ও শিশু-মুত্যু রোধে বিশেষ এই নৌকা সেবা-সুবিধার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এ জাতীয় আরো খবর..
এই পত্রিকার সকল সংবাদ, ছবি ও ভিডিও স্বত্ত্ব সংরক্ষিত © ২০২১ দৈনিক মাতৃজগত    
কারিগরি সহযোগিতায়ঃ Bangla Webs
banglawebs999991