মোঃ মাইনুল ইসলাম লাল্টু সিনিয়র ষ্টাফ রিপোর্টারঃ আজ প্রায় ১১মাস থেকে আমার বুকের ধন আব্দুর রহমানকে দেখিনি। জানিনা কখনো দেখতে পাবো কি না? বেঁচে আছে কি মারা গেছে তাও জানতে পারি না। আমি আমার মানিককে ফিরে পেতে চাই। আমি প্রশাসনের দুটি পা ধরে আকুতি জানাছি,তারা যেন সর্বাত্মক চেষ্টা করে আমার সন্তানকে উদ্ধার করে দেয়।
কথা গুলো বললেন জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার দেবীনগর গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের স্ত্রী ডলিয়ারা বেগম। তিনি আরো জানান গত ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ও ২২-০৪-২০২৫খ্রী: তারিখে আমি শিবগঞ্জ থানায় অভিযোগ করে কোন ফলাফল পাইনি। এমনকি কোর্টে একটি মামলা করেছি। সেটির কোন তদন্তও হয়নি।
সরজমিনে গিয়ে ডলিয়ারারা বেগমের পারিবারিক,এলাকাবাসী, ও ডলিয়ারা বেগমের স্বাক্ষরিত শিবগঞ্জ থানায় গত গত ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ও ২২-০৪-২০২৫খ্রী: ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ কোর্টের মামলা নং ১০৮২ সূত্রে জানা গেছে গত ১০ জুলাই ২০২৪ খ্রী: তারিখে একই এলাকার কুরবান আলি,আকাশ আলি,রফিক উদ্দিন ও তোতা সহ আরো কয়েকজন জাহাঙ্গীর হোসেন ও ডলিয়ারা বেগমের ছেলে আব্দুর রহমান(১৮)কে রাজমিস্ত্রির কাজে নিয়ে যাবার কথা বলে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। এরপর থেকে আর আব্দুর রহমানের খোঁজ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ কারী ডলিয়ারা বেগম জানান যখনই তাদের কাজে আমরা সন্তানের খোঁজ খবর নিতে যাই,তখনই আমার কাছে টাকা চাই। কখনো ২,৩০,০০০ টাকা,কখনো আড়াই লাখ টাকা কখনো ৬০ হাজার টাকা। টাকা দিলেই তার ছেলেকে এনে দিবে বলে দাবী করে। এমনকি টাকা না দিলে আমাকে ও পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকীও দেয়। তিনি আরো বলেন আমার বিশ্বাস তারা আমার ছেলেকে গুম করে রেখেছে এবং টাকা দিলেই ফেরত দিবে।
কিন্তু আমার স্বামী দিন আনে দিন খাই। কোথায় এত টাকা পাবো? এলাকার খতিজা বেগম,ফিতন বেগম,হারুল-অর রশিদ সহ অনেকেই জানান তারা আব্দুর রহমানকে রাজমিস্ত্রির কাজ দেয়ার নাম করে নিয়ে গেছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত আব্দুর রহমান ফিরে আসেনি। এমনকি কোন যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। তবে আব্দুর রহমানে সাথে থাকা একই গ্রামের বাদশাহ পাড়ার শামীম জানালেন আমরা চোরাইপথে একসংগে প্রায় ১৬/১৭জন ভারতে গিয়েছিলাম রাজমিস্ত্রির কাজে।
বাংলাদেশের আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পরই পরই চোরাই পথে যাওয়া কাউকে একসাথে থাকতে না দেওয়ায় বিভিন্ন স্থানে যাওয়ার সময় ভারতের পুলিশের হাতে পাঁচ জন ধরা পড়ি। আমরা বিভিন্ন কায়দা কৌশল করে চার জন,জন প্রতি ভারতীর ৪০ হাজার রুপী খরচ করে জামিনে কোন রকমে বাড়ি এসেছি। কেউ কেউ এখনো ভারতে চোরাইভাবে রাজ মিস্ত্রির কাজ করছে। আব্দুর রহমানের মা ডলিয়ারা বেগমকে অনেকবার বুঝানো হয়েছে যে আমরা যে ভাবে এসেছি সেভাবে তাকে আনার জন্য ভারতীর ৪০ হাজার রুপী খরচ হবে।
কিন্তু সে আমাদের কথায় বিশ্বাস না করে উল্টো মামাল করেছে। তার ছেলেকে আমরা জোর করে নিয়ে যায়নি। সে নিজ ইচ্ছায় গিয়েছে। কুরবান আলির পিতা রফিক উদ্দিনও একই কথা বললেন। একই কথা জানালেন শিবগঞ্জ পৌর সভার ৯নং ওয়ার্ডের বি এনপির সভাপতি মানিক উদ্দিন,আসমাউল আরো কয়েকজন। তারা আরো জানান স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি।
এব্যাপারে ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা শিবগঞ্জ থানার এস আই রেজাউল হক জানান গত ২২-০৪-২০২৫ খ্রী: তারিখের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পারি যে কোর্টে মামলা হয়েছে। এমতাবস্থায় কোর্টের নির্দেশ ছাড়া আমরা তদন্ত করতে পারি না। তাই ফিরে এসেছি। অন্যদিকে শিবগঞ্জ থানার ওসি(তদন্ত) এস এম শাকিল হাসান জানান, আমার জানা মতে এ ঘটনাটির ব্যাপারে কোর্টে মামলা হয়েছে এবং ডিবির তত্বাবধানে আছে। তবে ঘটনাটি খুব দু:খ জনক।