এমএইচ খালেদ:ছাতকে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা,প্রধান ও সহকারি শিক্ষক,উচ্চ্মান সহকারি, অফিস সহকারি,পিয়ন সহ ১শ`৬৮টি পদ শূন্য রয়েছে। উচ্চমান সহকারি,অফিস সহকারি ৩টি পদটি থাকার শিক্ষা কার্যক্রমে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে। শিক্ষক শুন্যতায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সকল পাঠ্যবই গুলো ঠিক মতো পড়ানো হচ্ছে না। ফলে দাপ্তরিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ছে। এতে দেখা দিয়েছে শিক্ষা কার্যক্রমে স্থবিরতা।
কয়েক বছর ধরে হিসাব সহকারি নুর এ আলমকে দিয়ে প্রতিনিয়ত জোড়া তালি দিয়ে চলছে অফিসে কার্যক্রমে। এর মধ্যে নেই পিয়ন ও।
দীর্ঘদিন এক বছর ধরে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকতার পদটি ও শুন্য থাকায় শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কাঠামো এখন ভেঙ্গে পড়েছে। সহকারি শিক্ষা কর্মকতার ৮জনের মধ্যে দু`জন আছে ।
৩৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় ফলাফলের দিকেও পিছিয়ে পড়ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। সহকারী শিক্ষকের ৯১টি পদ শূন্য থাকার ফলে বিদ্যালয় গুলোর শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক মান নিয়ে তুলনামূলক ভালো ফলাফল করতে পারছে না। শিক্ষকদের পদ শূন্য থাকার বিষয়ে আবেদন-নিবেদন করেও সুফল হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়-২০২১ সালে ২৩ ফ্রেরুয়ারি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকতাকে নানা অনিয়ম দুনীতির অভিযোগ মানিক চন্দ্র দাসকে নানা অনিয়ম দুনীতির অভিযোগে ছাতক থেকে জগন্নাথপুর উপজেলায় বদলী করার পর থেকে ছাতক প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকতার পদটি শুন্য হয়। এর পর ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন সহকারি শিক্ষা কর্মকতা মাসুম মিঞ্চা।
বিদ্যালয় গুলোতে শিক্ষক সংকটে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন মতো পাঠ্য বাইয়ের সিলেবাস শেষ করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে এসব বিদ্যালয়ে প্রতিনিয়ত জোড়া তালি দিয়ে চলছে পাঠদান। শিক্ষক সংকটের কারনে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সকল পাঠ্যবই গুলো ঠিক মতো পড়ানো হচ্ছে না।
উপজেলায় ১৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় সরকারীসহ মোট ১৮৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ১২২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মধ্যে ৯৭টিতে দপ্তরি কাম নৈশ্য প্রহরি কর্মরত রয়েছে। বাকীগুলো শুন্য আছে।
প্রধান শিক্ষক শুন্য পদের বিদ্যালয় গুলো হচ্ছে পীরপুর ও গৌরিপুর,বনগাঁও, রাসনগর, ৪৩নংচানপুর,শাহআরফিননগর,মোল্লাআতা,৯১নংনোয়াগাও,সুদখালি,১০০নংকুর্শি,১০৪নং আলমপুর,মোহাম্মদপুর,কহল্লা, সদুখালী, মহদী, কুরশি,বসন্তপুরজনমঙ্গল ,নরসিংহপুর তালুপাট, ,মন্ডলপুর, গাগলাজুর,রায়সন্তোষ পুর,বাংলাবাজার,রাউলী,এলঙ্গী,রহমতপুর,বিনন্দপুর,আনুজানি,জহিরপুর,দক্ষিনকুর্শি,রসুলপুর,কুর্শিপুর্বপাড়া,একতা,গোয়ালগাও,মায়েরকুল,কাশিপুর,সরিষাপুরওহবিপুর,বানায়ত,মোগলাগাও,শ্রীপতিপুর,বিনন্দপুর, বড়পলিরগাঁওসহ ৩৭টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদশুন্য রয়েছে দীর্ঘদিন ধরেই ।
পাশাপাশি ৯১টি সহকারী শিক্ষক ও ১১টি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষকের পদ শুন্য রয়েছে। বিদ্যালয় গুলোতে শিক্ষক সংকটে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন মতো পাঠ্য বাইয়ের সিলেবাস শেষ করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে এসব বিদ্যালয়ে প্রতিনিয়ত জোড়া তালি দিয়ে চলছে পাঠদান। শিক্ষক শুন্যতায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সকল পাঠ্যবই গুলো ঠিক মতো পড়ানো হচ্ছে না। বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সময় মতো পদোন্নতি না থাকায় প্রধান শিক্ষকের পদ বছরের পর বছর শুন্যই থেকে যাচ্ছে বলে সংশি¬ষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
শিক্ষক সংকটের বিষয়ে একাধিক অভিভাবক জানান- শিক্ষার্থীদের মেধা মনন ও প্রতিভা বিকাশে উপযুক্ত স্থান প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখানে যে ভাবে গড়ে তোলা হবে সে ভাবেই তারা গড়ে উঠবে। তাই অবহেলা না করে দ্রুত শূন্য পদের বিপরীতে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া প্রয়োজন।
শিল্প নগরী ছাতক উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা এখন বহুমূখী সমস্যায় জর্জরিত। বেশীরভাগ বিদ্যালয় গুলোতে বৈদ্যুতিক সংযোগ না থাকায় প্রচন্ড গরমে বিদ্যালয় বিমূখ হয়ে পড়ছে অনেক ক্ষুদে শিক্ষার্থী।
এছাড়া কয়েকটি বিদ্যালয়ে রয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও টয়লেটের সমস্যা। ভবন ও শিক্ষক সংকটে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায়ও ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের প্রতিনিয়তই নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এতে শিক্ষা কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মোট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৮৫টি। এর মধ্যে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১২২টি, রেজিষ্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৪১টি ও কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১২টি। এ উপজেলায় মোট শিশু সংখ্যা ১৬হাজার ৫শ’ ৪৫ জন। অধিকাংশ ইস্কুলে
২/৩ জন শিক্ষক দিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান চলছে।
ছাতক উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাসুম মিঞ্চা বলেন- শূন্য পদের কারণে শিক্ষা কার্যক্রমে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বরাবরে একাধিকবার আবেদন-নিবেন করা হলেও কোন সুফল হচ্ছে না।
এব্যাপারে সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রহমান বলেন,শিক্ষা কর্মকতাসহ অফিসের শুন্য পদে সমস্যা, প্রধান শিক্ষক ও জর্জরিত বিদ্যালয় গুলোর ও শিক্ষক স্বল্পতার বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।