বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৪৬ অপরাহ্ন

ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৫ জন গ্রেফতার, ছিনতাইকৃত অটোরিক্সা ও মোবাইল সেট উদ্ধার।

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২২
  • ১৬০ বার পঠিত

মোঃ শাহ সৈয়দ খাঁন ময়মনসিংহ জেলা ব্যুরো প্রধানঃ

ময়মনসিংহ ৩১/১০/২০২২ তারিখ ১২.১৫ ঘটিকায় পাগলা থানাধীন খুরশিদ মহল ব্রীজের পূর্ব ঢালে রাস্তার দক্ষিন পাশে ঝোপঝাড়ের আড়ালে রেখে যাওয়া একজন অজ্ঞাতনামা পুরুষ ব্যক্তি, বয়স অনুমান ৪৫ বছর এর লাশ পাওয়া যায়। মাননীয় পুলিশ সুপার, ময়মনসিংহ মহোদয় নিহত ব্যক্তির পরিচয় উদ্ধার, হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকারীদের গ্রেফতারের জন্য জেলা গোয়েন্দা শাখা, ময়মনসিংহকে নির্দেশ প্রদান করেন। জেলা গোয়েন্দা শাখা, ময়মনসিংহ- এর একটি চৌকস টিম হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনের জন্য পাগলা থানা পুলিশের সহিত যুগপদভাবে অভিযান পরিচালনা করে। নিহত ব্যক্তি মোঃ নাছির উদ্দিন (৪৫), পিতা-মৃত আব্দুর রহিম, সাং-তেতুলিয়া, থানা-গফরগাঁও, জেলা-ময়মনসিংহ।তিনি দুই সন্তানের পিতা। অটোরিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। প্রতিদিনের ন্যায় গত ২৯/১০/২০২২ তারিখ বিকেল বেলা যাত্রী বহনের জন্য বাড়ী থেকে অটোরিক্সা নিয়ে বের হয়। রাত গড়িয়ে সকাল হলেও নাছির উদ্দিন (৪৫) বাড়ী ফিরে না আসায় পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে উৎকণ্ঠা দেখা দেয়। পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীরা চারদিকে খোঁজাখুজির একপর্যায়ে ৩১/১০/২০২২ তারিখ ১২.১৫ ঘটিকায় ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানাধীন খুরশিদ মহল ব্রীজের পূর্ব ঢালে রাস্তার দক্ষিন পাশে ঝোপঝাড়ের আড়ালে লাশ পাওয়ার সংবাদ পেয়ে পরিবারের লোকজন এসে লাশ সনাক্ত করে।এতদসংক্রান্তে নিহত নাছির উদ্দিন (৪৫)- এর ছোট ভাই নুরুল আমিন (৪০) বাদী হয়ে অভিযোগ দায়ের করলে পাগলা থানার মামলা নং-০১,তারিখ-০১/১১/২০২২

ধারা-৩৯২/৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়।অজ্ঞাতনামা আসামিরা ২৯/১০/২০২২ তারিখ ঘটনাস্থলে নাছিম উদ্দিন (৪৫)- কে হত্যা করে তার চালিত অটোরিক্সা ও ব্যবহৃত মোবাইল সেটটি ছিনিয়ে নেয়। জেলা গোয়েন্দা শাখা, ময়মনসিং- এর টিম ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকান্ড ও অটোরিক্সা ছিনতাইয়ের কাজে জড়িত আসামি ১।মোঃ মকবুল হোসেন (৫৫), পিতা-মৃত হযরত আলী, মাতা-জুলেখা বানু, সাং-কন্যামন্ডল উত্তর পাড়া, বর্তমান কন্যামন্ডল আদর্শ গ্রাম, থানা-পাগলা, জেলা-ময়মনসিংহ, ২। জাবেদ (২৫), পিতা-আবুল হাসেম, মাতা-আছমা, সাং-ছোট আজলদি ধামর বাড়ী, ৩। মোঃ কাজল মিয়া (৬০), পিতা-মৃত সুরুজ আলী, মাতা-মৃত সুফিয়া খাতুন, সাং-ছোট আজলদি কোণপাড়া, ৪। মোঃ শরীফ (৩২), পিতা-মোঃ আহছান উল্লাহ, মাতা-মৃত মনোয়ারা খাতুন, সাং-সম্মানিয়া, ৫। মোঃ সোহেল মিয়া (২২), পিতা-মোঃ হাছেন উল্লাহ, মাতা-মৃত মনোয়ারা বেগম, সাং-সম্মানিয়া, সর্ব থানা-পাকুন্দিয়া, জেলা-কিশোরগঞ্জদেরকে গ্রেফতার করে। আসামি মকবুল হোসেন এর হেফাজত হতে নিহত নাছির উদ্দিন (৪৫)- এর মোবাইল সেটটি উদ্ধার হয়। আসামীদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আসামি মোঃ মকবুল হোসেন (৫৫) একজন পেশাদার ও অভ্যাসগত অপরাধী। একেক সময়ে ভিন্ন ভিন্ন লোকজনকে ডেকে এনে দীর্ঘদিন যাবৎ সে ময়মনসিংহ ও কিশোরগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় চালককে কখনো মারপিট করে, কখনো নেশাজাতীয় বিষ প্রয়োগে অচেতন করে আবার কখনো নির্দিষ্টস্থানে রেখে দেওয়া অটোরিক্সা ছিনতাই করে আসছে। উক্ত আসামিরা জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় সাম্প্রতিক সময়ে একটি অটোরিক্সা চুরি চক্র গড়ে তোলার জন্য সংঘবদ্ধ হওয়ার পক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে।মোঃ মকবুল হোসেন (৫৫)- এর বিরুদ্ধে একাধিক চুরি, ডাকাতি, অস্ত্র ও হত্যা মামলা রয়েছে। কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানাধীন পুলেরঘাট বাজারে আসামি মোঃ মকবুল হোসেন (৫৫) একটি সেলুনে চুল কাটার কাজের আড়ালে অপরাধ চক্রের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ ও পরিকল্পনায় জড়িত থাকে। গত ২৭/১০/২০২২ তারিখ আসামি মোঃ মকবুল হোসেন (৫৫) গ্রেফতারকৃত অন্যান্য আসামিদেরকে কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানাধীন পুলেরঘাট বাজারে ডেকে এনে চালক হত্যা ও অটোরিক্সা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। ২৯/১০/২০২২ তারিখ দুপুর ০২.৩০ ঘটিকায় পুলেরঘাট বাজারে আসামি ১।মোঃ মকবুল হোসেন (৫৫), ২। জাবেদ (২৫), ৩। মোঃ কাজল মিয়া (৬০), ৪। মোঃ শরীফ (৩২) গণ একত্রিত হয়ে প্রথমে হোসেনপুর এবং পরবর্তীতে সন্ধ্যা অনুমান ০৭.০০ ঘটিকায় ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও জামতলা চৌরাস্তায় আসে। পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক আসামিরা যাত্রীবেশে হোসেনপুর যাওয়ার কথা বলে রাত ০৮.০০ ঘটিকায় নাছির উদ্দিন (৪৫) এর চালিত অটোরিক্সায় উঠে। রাত অনুমান ০৮.৪৫ ঘটিকায় হোসেনপুর ব্রীজ এর পূর্ব ঢালে নির্জন জায়গায় পৌঁছে নাছির উদ্দিন (৪৫)- এর গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ রাস্তার দক্ষিন পাশে ঝোপঝাড়ের আড়ালে রেখে দিয়ে অটোরিক্সা ও নাছির উদ্দিন (৪৫)- এর ব্যবহৃত মোবাইল সেটটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। আসামি মোঃ সোহেল মিয়া (২২)- এর হেফাজত হতে ছিনতাইকৃত অটোরিক্সাটি উদ্ধার করা হয়। আসামিদেরকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হচ্ছে। কিশোরগঞ্জ, গাজীপুর ও টাঙ্গাইল জেলার সাথে ময়মনসিংহ জেলার সীমান্তবর্তী অপরাধ প্রবন এলাকায় এধরনের অপরাধচক্র যাতে সংঘটিত হতে না পারে সেজন্য জেলা পুলিশ, ময়মনসিংহ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এ জাতীয় আরো খবর..
এই পত্রিকার সকল সংবাদ, ছবি ও ভিডিও স্বত্ত্ব সংরক্ষিত © ২০২১ দৈনিক মাতৃজগত    
কারিগরি সহযোগিতায়ঃ Bangla Webs
banglawebs999991