বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:০৫ অপরাহ্ন

জগন্নাথপুরের এক নারী প্রতারনার শিকার,কাজী ও স্বামীসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মামলা দায়ের!

রাসেল আহমদ,(সিনিয়র রিপোর্টার,সিলেট):::
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৮ মে, ২০২৩
  • ৯৮ বার পঠিত

 

 

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কাজি মইনুলের বিরুদ্ধে কাবিন জালিয়াতির গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে।ভুক্তভোগী নারী শাহনাজ পারভিন লিছা আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।মামলাটি বর্তমানে তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে পিবিআই। অভিযুক্ত কাজি জগন্নাথপুর পৌরসভার ৪,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের কাজী হলিয়ারপাড়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ। কাজি মইনুল ইসলাম পারভেজ জগন্নাথপুর উপজেলার হবিবপুর নিবাসী মৃত আলিফ মিয়া(কেরানী সাব) এর চতুর্থ পুত্র।

ভুক্তভোগী শাহনাজ পারভিন লিছার পরিবার সুত্রে জানা যায়,লিছার স্বামী চুনু মিয়া,দেবর সোলেমানের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকায় সংশ্লিষ্ট কাজি বাধ্য বশিভূত হয়ে লিছার কাবিনে লিছার নাম ঠিকানা মুছিয়া তথায় সিলেটের দক্ষিণ সুরমার লালা বাজারের আবদুল আলীর কন্যা সাজেদা বেগম নামের এক মহিলার ঠিকানা লিখা হয়। লিছা ও তার পরিবারের অভিযোগ নিকাহ্ নামায় কনের স্বাক্ষরের জায়গায় শাহনাজ পারভিন লিছার দেয়া স্বাক্ষর মুছে সেখানে সাজেদা বেগমের স্বাক্ষর নেয়া হয়। দেন মোহরের পরিমাণও জালিয়াতি করা হয়। এঘটনায় গত ২০ ফেব্রুয়ারী-২০২৩ ইং তারিখে ১৫ জনকে আসামি করে জগন্নাথপুর আমল আদালতে লিছা বাদি হয়ে প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। যার নাম্বার সি,আর, মোং নং ৩৮/২৩ইং (জগঃ)।

আদালত সূত্রে জানা যায়,গত ২৩/০১/২০২২ইং তারিখে জগন্নাথপুর পৌর শহরের বাড়ি জগন্নাথপুর গ্রামের সাজিদ উল্লার পুত্র চুনু মিয়ার সাথে কেশবপুর গ্রামের মৃত আরিফ উল্লাহর মাষ্টার্স পড়ুয়া শাহনাজ পারভিন লিছার রেজিষ্ট্রারি কাবিন মুলে ৫ লক্ষ টাকা দেন মোহরে বিবাহ সম্পন্ন হয়। যার বালাম নাম্বার ৮/২২। ঔসময় কনে পক্ষের স্বাক্ষী হিসাবে কাউন্সিলর আলাল হোসেন বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন। তাদের দাম্পত্য জীবনে বিগত ১৩,১১,২০২২ ইং তারিখে এক কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহণ করে বিদ্যমান আছে। যার নাম সামায়রা আয়াত। ছুনু মিয়া তার স্ত্রী লিছাকে আইএলটিএস পড়ানোর জন্য সিলেটস্থ আইইএলটিএস কোচিং সেন্টারে ভর্তি করান। স্পাউস ভিসায় স্ত্রীকে লন্ডন নেয়ার জন্য চুনু মিয়া শশুর বাড়ি থেকে ১২লক্ষ টাকাও নেন বলে জানা যায়। এর ই মধ্যে সু-চতুর চুনু মিয়া জাল জালিয়াতির মাধ্যমে অন্যত্র বিয়ে করে লন্ডনে পাড়ি জমানোর সংবাদে লিছা এবং তার পরিবারে মারাত্মক উৎকন্ঠার সৃষ্টি হয়। লিছার পরিবারের পক্ষ থেকে বার বার কাজি মইনুল পারভেজের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার অফিসে লিছার বিয়ের রেজিষ্ট্রেশনের বিষয়টি অস্বীকার করায় লিছা মানুষিক ভাবে ভেঙে পড়েন। লিছা তার অবুঝ সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিচলিত হয়ে পড়েন। লিছার পরিবারের পক্ষ থেকে কাজি অফিসে যোগাযোগ করলে শেষ পর্যন্ত কাবিন জালিয়াতির রহস্য উদ্ঘাটিত হয়।

ভুক্তভোগী লিছা জানান,বর্তমানে মামলাটি পিবিআই কর্তৃক তদন্ত চলমান রয়েছে। কাবিন জালিয়াতির এমন জঘন্য গুরুতর অমানবিক ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কাজি নিজেকে রক্ষার জন্য তার অফিসের সোলেমান এবং কুতুব উদ্দিনকে ব্যবহার করছেন। তদন্ত কর্মকর্তাকে বাধ্য বশিভূত করার অপতৎপরতা অব্যাহত রাখছেন বলে জানা যায়। এছাড়াও কাজি মইনুলের বিরুদ্ধে দূর্নীতির আরও বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে বলে জানা যায়। জগন্নাথপুর লন্ডনী এলাকা হওয়ায় প্রতারণার বিয়ে নিয়ে প্রায়ই সংবাদের শিরোনাম হয়। কাজী মইনুল সিলেটে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। কিন্তু নিয়ম বহির্ভূতভাবে নিকাহ্ রেজিস্ট্রার এর মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বিভিন্ন ব্যক্তিদের দিয়ে কাজি মইনুল করেন মর্মে জানা যায়।

লিছার ভাই আকমল হোসেন জানান,আমার বোনের সাথে প্রতারনা করা হয়েছে,কাজীসহ যারা জালিয়াতি ও প্রতারনায় লিপ্ত তাদের আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।ইতিমধ্যে মামলার ৩জন আসামি দেশ থেকে পালিয়ে বিদেশে চলে গেছে। মামলার ৩নং আসামি সুলেমান যার মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা দিয়ে কাজী কাজি মইনুল ইসলাম পারভেজের সাথে তাদের কাবীন জালিয়াতির চুক্তি হয়েছে সেও খুব শীঘ্রই বিদেশে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।বর্তমানে মামলার সকল আসামি পলাতক রয়েছে।উক্ত বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অত্র মামলার সকল আসামিকে অতি শীগ্রই গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোরদাবি জানাচ্ছি।

বাদি পক্ষের সংশ্লিষ্ট আইনজীবী নজরুল ইসলাম এঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এবিষয়ে কাজি মইনুল ইসলাম পারভেজের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এ জাতীয় আরো খবর..
এই পত্রিকার সকল সংবাদ, ছবি ও ভিডিও স্বত্ত্ব সংরক্ষিত © ২০২১ দৈনিক মাতৃজগত    
কারিগরি সহযোগিতায়ঃ Bangla Webs
banglawebs999991