গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের শ্রীকলা দক্ষিণপাড়া গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বসতবাড়িতে হামলা চলিয়ে ভাংচুর-লুটপাট ও হত্যার চেষ্টা অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ফলে সন্ত্রাসীদের হুমকির মুখে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে প্রকৃত জমির মালিকরা।
মামলা সুত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের মৃত খয়বর হোসেনের ছেলে মনির উদ্দিনের সঙ্গে প্রতিবেশী মৃত কাফি সরকারের ছেলে রেজাউল করিমের সাথে জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলে আসছিল। মনির হোসেন বাড়িঘর নির্মাণ করে বিগত ৪০ বছর থেকে সেখানে বসবাস করে আসছে। হঠাৎ করে রেজাউল করিম ওই জমির দাবিদার সেজে তা দখল করার পায়তারা চালাচ্ছে। এরই জের ধরে গত ১০ জানুয়ারী গভীর রাতে মারাত্মক অস্ত্রেসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আকস্মিকভাবে মনির হোসেনের বাড়িতে হামলা চালায় এবং বাড়ি ঘর ভাংচুর করে মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। এসময় বাধা দিতে গেলে হামলাকারিরা মল্লিকা বেগম ও মনিরা খাতুনকে মারপিট করে শ্লীলতাহানী ঘটায়। শুধু তাইনয়, মনির উদ্দিনের ছেলে আতিকুর রহমানকে অপহরণ করে রেজাউলর বাড়িতে ৫ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে হত্যার উদ্দেশ্যে শারীরিক নির্যাতন চালায়। এই পরিস্থিতিতে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করা হলেও পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আতিকুর রহমানকে উদ্ধার করে এবং ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শন করে। এসময় পুলিশ ও গ্রামবাসীরা মনির উদ্দিনের পরিবারকে ওই জমিতেই অস্থায়ীভাবে পলিথিন দিয়ে তাবু টানিয়ে বসবাসের ব্যবস্থা করেন। এব্যাপারে থানায় মামলা দায়ের করা হলেও আসামিদের কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। এরই ফলশ্রæতিতে পুলিশ কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় ভুমিদস্যু রেজাউল করিম ও তার সন্ত্রাসী লোকজন বেপরোয়া হয়ে পুনরায় ১৭ জানুয়ারী সোমবার আসামীরা জামিনে এসে ওই অস্থায়ী পলিথিনের তাবু ভেঙ্গে দেয়ায় ওই পরিবারটি এখন খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে। এব্যাপারে সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি থানার অফিসার ইনচার্জকে এবিষয়ে জরুরীভাবে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পরিবারটি খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করলেও থানা কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
মামলার বাদি মনির হোসেনের মা মোজমা বেগম বলেন, এ ঘটনায় সাদুল্লাপুর থানায় মামলা দেয়ার পর সন্ত্রাসীরা প্রাণনাশসহ নানা ধরণের হুমকি প্রদান করছে। ফলে আমরা ভয়ে বাড়িছাড়া হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি।
সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার রায় বলেন, এ ঘটনায় মনিরের মা মোজমা বেগম বাদি হয়ে একটি মামলা করেছে। এলাকাবাসিরা মানবিক কারণে মোজমা বেগমের বসতবাড়িতে ফিরে আনার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।