শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০১:৩০ পূর্বাহ্ন
ঘোষনা
হিরো উমেন স্কলারশীপ বিতরণ র‌্যাব -৫ এর অভিযানে কষ্টি পাথরে বিষ্ণু মূর্তি উদ্ধার ঝিনাইদহে ভর্তুকি মুল্যে টিসিবি’র পণ্য বিক্রি শুরু কটন কারখানা পরিদর্শন করলেন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-৫, ময়মনসিংহ ইউনিটের পুলিশ সুপার ঝিনাইদহে হারানো ও চুরি হওয়া ১০৫ টি মোবাইল, প্রতারণা করে নেওয়া প্রায় ৭ লাখ টাকা উদ্ধার সাতক্ষীরায় প্রধানমন্ত্রীর গাডি বহরে হামলা মামলার আসামি যশোরে আটক বিএনপি সত্যি ভারতীয় পণ্য বর্জন করছে কিনা, জানতে চান প্রধানমন্ত্রী শ্রীপুরে মসজিদের ইমাম ও এতিম অসহায়দের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ বঙ্গবন্ধু কন্যার নির্দেশ, খেটে খাওয়া মানুষের পাশে থাকার ;ঈদ উপহার বিতরণে নিখিল চিলমারীতে স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীর সংবাদ সম্মেলন

জাতীয় বাজেটের ৪০ ভাগ কৃষি খাতে বরাদ্দের দাবিতে গাইবান্ধায় সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের মিছিল ও সমাবেশ

রানা ইস্কান্দার রহমান
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৬ জুন, ২০২২
  • ১৪২ বার পঠিত

গাইবান্ধা জেলা ব্যুরো প্রধানঃ

৫জুন, রবিবার সকাল ১১টায় সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট এবং বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলন গাইবান্ধা জেলার উদ্যোগে জেলা শহরে এক বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে অর্থমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।মিছিল পুর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাম্যবাদী আন্দোলনের জেলা সদস্যসচিব মনজুর আলম মিঠু, বীরেন চন্দ্র শীল, সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের জেলা সংগঠক জাহিদুল হক, কৃষ্ণ চন্দ্র পাল, বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের জেলা সংগঠক পারুল বেগম, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের জেলা আহবায়ক শামিমআরা মিনা। বক্তাগন বলেন বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ, দেশের মোট শ্রমশক্তির অর্ধেক কৃষি খাতে নিয়োজিত। অথচ সম্ভাবনাময় এই খাতটি সবচেয়ে অবহেলিত। সার, বীজ,কীটনাশক, সেচ, বিদ্যুৎসহ সকল কৃষি উপকরণের দাম ক্রমাগত বাড়ছে। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সার,বীজ, কীটনাশকে ভেজাল দিয়ে মুনাফা লুটছে। কৃষক লাভজনক দাম তো দূরের কথা, ফসলের উৎপাদন খরচও তুলতে পারছে না। ফলে ক্ষুদ্র কৃষক জমি হারিয়ে ভূমিহীন এবং মাঝারি কৃষক গরীব কৃষকে পরিণত হচ্ছে। খরা, বন্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসল নষ্ট হয়ে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। করোনাকালেও কৃষক ঝুঁকি নিয়ে উৎপাদন অব্যাহত রেখে ১৮ কোটি মানুষের মুখে অন্ন যুগিয়েছে। সরকার যে কৃষি প্রণোদনার কথা বলছে তা ধনী কৃষক বা উৎপাদনের সাথে যারা যুক্ত নয় তারাই পাচ্ছে, দলীয়করণ- দুর্নীতির ফলে প্রকৃত কৃষক কিছুই পাচ্ছে না। কৃষি প্রধান বাংলাদেশে কৃষির সঙ্গে যুক্ত মানুষগুলোই সবচেয়ে বিপর্যস্ত। ক্ষেতমজুরদের এমনিতেই বছরে ৯ মাস কাজ থাকে না ফলে সারা বছরের কাজ ও খাদ্যের নিশ্চয়তা নেই। উপরন্তু কৃষিতে ক্রমাগত যান্ত্রিকীকরণের ফলে তাদের কাজ আরও সীমিত হচ্ছে, যা বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় সেই সংকট আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। কাজের প্রয়োজনে নিজ এলাকার বাইরে গেলে সেখানে নিরাপদ যাতায়াতসহ স্বাস্থসম্মত খাদ্য ও আবাসনের কোন আয়োজন থাকেনা।সামাজিক নিরাপত্তা খাতের বরাদ্দ নিয়েও চলে ব্যাপক দুর্নীতি-অনিয়ম। তহশিল অফিস, ভূমি অফিস, সাব রেজিস্ট্রি অফিস, সেটেলমেন্ট অফিস, পুলিশ থানা ও ব্যাংকে ঘুষ-দুর্নীতি-হয়রানির শিকার হচ্ছে কৃষক। দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে মেরে দিচ্ছে পাচার করছে, সেই ঋণখেলাপী ব্যাংক ডাকাতদের বিরুদ্ধে কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বরং সমাদর করা হচ্ছে । অথচ ১০/২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ফসলের দাম না পাওয়া ও বন্যা-খরাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসল নষ্ট হওয়ায় পরিশোধ করতে না পারলে কৃষকের নামে সার্টিফিকেট মামলা দিয়ে হয়রানি ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হচ্ছে। সাম্রাজ্যবাদী বহুজাতিক কোম্পানির বন্ধ্যা বীজ কৃষিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। কৃষক কৃষি উপকরণ কিনতেও ঠকে, ফসল উৎপাদন করে বেচতেও ঠকে। তাই আসন্ন জাতীয় বাজেটে কৃষি খাতে উন্নয়ন বরাদ্দের ৪০ ভাগ বরাদ্দ দিয়ে কৃষি-কৃষক-ক্ষেতমজুরদের রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

নেতৃবৃন্দ বলেন প্রতিবছর শ্রমশক্তি যতই বাড়ছে সেই তুলনায় কর্মসংস্থান বাড়ছে না। কিন্তু রাষ্ট্রীয় শিল্প-কলকারখানা বন্ধ করা হচ্ছে ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চলছে ছাঁটাই। চাল-ডাল-আটা-ভোজ্যতেল সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি জিনিসের দাম এখন সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। কিন্তু দেশে শ্রমিক, কৃষক, চাকরিজীবী, ছোট দোকানদারসহ সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি। জ্বালানি তেল ও সকল পরিবহনের ভাড়া বেড়েছে। শিক্ষা-চিকিৎসার খরচ, বাড়িভাড়া ক্রমাগত বাড়ছে। তাই আসন্ন জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে শ্রমজীবী ও নিম্নআয়ের মানুষের জন্য সারাদেশে আর্মিরেটে নিত্যপণ্য সরবরাহ করাসহ নিম্নে উল্লেখিত দাবীসমুহ বাস্তবায়ন করার জোর দাবি জানান।

দাবিসমূহঃ

১। আসন্ন জাতীয় বাজেটে উন্নয়ন বরাদ্দের ৪০ভাগ কৃষি খাতে বরাদ্দ দিয়ে সার-বীজ-কীটনাশক এর দাম কমাও। বিএডিসি’র মাধ্যমে সরবরাহ নিশ্চিত কর। রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে আলু-সবজি সংরক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত কোল্ড ষ্টোরেজ নির্মান কর।

২। শ্রমজীবী-নিম্নআয়ের মানুষদের জন্য আসন্ন জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে সারাবছর আর্মিরেটে রেশনে চাল-ডাল-আটা-তেলসহ সকল নিত্যপণ্য সরবরাহ কর।

৩। উৎপাদন খরচের সাথে ৩৩% বাড়তি মুল্য যুক্ত করে কৃষি ফসলের দাম নির্ধারণ কর। হাটে হাটে সরকারি ক্রয় কেন্দ্র চালু করে ইরি-বোরো মওসুমে ন্যূনতম ১কোটি মেট্রিক টন ধান সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় কর। ঘুষ, দুর্নীতি, দলীয়করণ বন্ধ কর।

 

৪। ক্ষেতমজুর-দিনমজুরদের সারা বছরের কাজ চাই। নিজ এলাকার বাইরে কাজ করতে যাওয়া শ্রমজীবীদের নিরাপদ যাতায়াত, আবাসন ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার আয়োজন করতে হবে।

 

৫। ভিজিডি, ভিজিএফ, কর্মসৃজন প্রকল্পসহ সামাজিক নিরাপত্তার গ্রামীণ প্রকল্পে ঘুষ, দুর্নীতি, দলীয়করণ বন্ধ কর। বয়স্ক-বিধবা-প্রতিবন্ধীদের মাসিকভাতা ন্যূনতম ১০হাজার টাকাসহ সকল প্রকল্পে বরাদ্দের পরিমাণ ও উপকারভোগীদের সংখ্যা বাড়াও।

৬। ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত কৃষি ঋণ মওকুফ কর। সহজ শর্তে সুদমুক্ত কৃষি ঋণ চালু কর। হয়রানি বন্ধ ও সার্টিফিকেট মামলা প্রত্যাহার কর। এনজিও এবং মহাজনী ঋণ নিষিদ্ধ কর।

৭। বন্ধ পাটকল, চিনিকল চালু কর। বেকার সমস্যা সমাধানে কৃষিভিত্তিক নতুন শিল্প -কারখানা নির্মাণ কর।

৮। পাহাড় ও সমতলের আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দাও, মাতৃভাষায় শিক্ষা ও ভূমির অধিকার এবং জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত কর। খাস জমি ভূমিহীনদের দিতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এ জাতীয় আরো খবর..
এই পত্রিকার সকল সংবাদ, ছবি ও ভিডিও স্বত্ত্ব সংরক্ষিত © ২০২১ দৈনিক মাতৃজগত    
কারিগরি সহযোগিতায়ঃ Bangla Webs
banglawebs999991