
মোঃ পারভেজ ঝিনাইদহ প্রকৃতির বৈরী আচরণে চরম বিপাকে পড়েছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষকরা। গত কয়েকদিনের দমকা হাওয়া ও অকাল বৃষ্টিতে মাঠের পাকাধান লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। ঝড়ো বাতাসে জমির ধানগাছগুলো মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন একই দৃশ্য— সোনালি ধানের শীষ আর সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে নেই, যেন কৃষকের স্বপ্নগুলো মাটিতেই লুটিয়ে পড়েছে। কৃষকরা জানান, তারা ধান কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, এমন সময় হঠাৎ প্রবল বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসে মাঠের ধান পড়ে যায়। এতে কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে অতিরিক্ত শ্রম ও খরচ বাড়বে। পাশাপাশি মাটির সংস্পর্শে আসায় শীষে ফাঙ্গাস ধরার আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। উপজেলার বাবরা গ্রামের কৃষক আবু সাঈদ বলেন, ধান কাটতে আর মাত্র কয়েক দিন বাকি ছিল। কিন্তু এরই মধ্যে বাতাসে সব ধান পড়ে গেছে। এখন কাটা ও শুকানোর ঝামেলাও বেড়ে যাবে, ফলনও কম হবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুব আলম রনি বলেন, বাতাসে ধান পড়ে গেলে শীষে আর্দ্রতা বেড়ে যায়। এতে দানার মান নষ্ট হয় এবং ফলন ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত ধান কেটে শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে। স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ধান মাটিতে পড়ে গেছে। ইতোমধ্যে ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের কাজ শুরু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য প্রণোদনা বা পুনর্বাসন কর্মসূচি বিবেচনা করা হবে বলেও জানানো হয়েছে। অন্যদিকে কৃষকরা বলছেন, উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগে এমন ক্ষতি হলে যদি ধানের ন্যায্যমূল্য না পান, তাহলে লোকসান সামাল দেওয়া কঠিন হবে। প্রকৃতির এই রুদ্ররূপ আবারও মনে করিয়ে দিল— কৃষকের ঘাম ঝরানো পরিশ্রমের ফসল শেষ মুহূর্তে কতটা অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে যায়। সময়মতো সরকারি সহায়তা ও প্রযুক্তিগত পরামর্শ না পেলে এই ক্ষতি তাদের জীবিকায় বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়াতে পারে।