রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৯:৩০ পূর্বাহ্ন
ঘোষনা
সহস্রাধিক রোজাদারকে নিয়ে ইফতার করলেন সাবেক যুবদল নেতা হাবিবুর রহমান রাব্বি মহানগর উত্তর বিএনপি’র পক্ষ থেকে পল্লবী ৩,নং ওয়ার্ডে ইফতার বিতরণ। সংস্কারের নামে নির্বাচন পেছানোর সুযোগ নেই- আমিনুল হক বাংলাদেশ সেন্ট্রাল প্রেসক্লাব ও মাতৃজগত পরিবারের পক্ষ থেকে ইফতার সামগ্রী বিতরণ গোদাগাড়ীতে ৫ কেজি হেরোইন জব্দ, দুই নারী গ্রেপ্তার মহানগর উত্তর বিএনপি’র পক্ষ থেকে ক্যান্টনমেন্ট থানার ইফতার বিতরণ ঘুসের ৩৭ লাখ টাকাসহ গভীর রাতে গাইবান্ধার নির্বাহী এলজিইডির প্রকৌশলী আটক শিবগঞ্জে  বাক প্রতিবন্ধীকে  ধর্ষণের অভিযোগে আটক ৩ সন্ত্রাস নৈরাজ্যের প্রতিবাদ ও মাগুরায় শিশু আছিয়ার ধর্ষণকারীর বিচারের দাবিতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে শ্রমিকদলের বিক্ষোভ ঠাকুরগাঁওয়ে ২ ইটভাটায় জরিমানা এবং ৭ দিনের মধ্যে ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ

ঝিনাইদহের কালিগঞ্জে জ্বিনের ডাক্তার সেজে প্রতারণা

লালন মন্ডল,ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৩
  • ২২৬ বার পঠিত

ঝিনাইদহের কালিগঞ্জে জ্বিনের ডাক্তার সেজে প্রতারণা

লালন মন্ডল,ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জে সাধারণ রোগীদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে জ্বিন দ্বারা চিকিৎসার নামে এবং নিজ নামের আগে কবিরাজ লাগিয়ে মোঃ মুন্না হাসান ইমন (১৮) নামের এক যুবকের নামে রোগীদের নিকট থেকে প্রতারণার মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রতারক কথিত এই কবিরাজ কালিগঞ্জ উপজেলার ৩ নং কোলা ইউনিয়নের কাদিরডাঙ্গা গ্রামের মোঃ মন্তেজ আলী এবং ফিরোজা বেগম দম্পতির বড় ছেলে। কথিত জ্বিনের ডাক্তার নামে পরিচিতি পাওয়া মুন্না হাসান ইমনের ব্যাপারে তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, তিনি রোগীদের বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার নামে নিজ ও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকার সহজ-সরল সাধারণ মানুষের নিজের বশে আনা একাধিক জ্বিনের দ্বারা চিকিৎসা প্রদানের কথা বলে প্রতিনিয়ত প্রতারণা করে চলেছেন। তার নিকট আসা রোগীদের মধ্যে নারীদের সংখ্যাই বেশি। প্রত্যেক রোগীকে প্রথম ৫০ টাকা দিয়ে সিরিয়ালের রশিদ সংগ্রহ করতে হয়। তারপর সিরিয়াল মেনে একটি ছোটো টিনের ঘরে অত্যন্ত গোপনীয়তা রক্ষা করে মোবাইলবিহীন রোগীকে প্রবেশ করানো হয়। টিনের ঘরে বসে থাকা ভুয়া কবিরাজ মুন্না নানারকম আয়ুর্বেদিক ও গাছগাছালির ঔষধ, তৈল পড়া, পানি পড়া এবং তাবীজ রোগীদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে ৫ শত থেকে ৭ শত টাকা আদায় করে নেন। সবমিলিয়ে এই প্রতারক জনপ্রতি অধিকাংশ রোগীর নিকট থেকে ৭ শত থেকে ১ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে । জ্বর, ঠান্ডা, মাথা ব্যথা, হার্টের সমস্যা,টিউমার,জরায়ু, বন্ধ্যাত্বা, মেয়েদের গোপনীয় রোগের জটিল সমস্যা, সন্তান না হওয়া, কানে ব্যথা, কোমরে ব্যথা, হাঁপানি, এ্যাজমা, পলিপাস,কিডনির সমস্যসহ এমন কোন রোগ নেই যে রোগের চিকিৎসা তিনি করছেন না। আবার তার রোগী দেখার টিনের ঘরের ভিতরে আল্লাহর দান কবিরাজী আয়ুর্বেদিক ও হাকিমি দাওয়াখানা “নামক একটি ব্যানার ও টাঙ্গিয়ে রেখেছেন। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, প্রায় ৫ বছর আগে থেকেই জ্বিন পরিদের মাধ্যমে নানা রকম রোগের চিকিৎসা দেওয়া শুরু করলেও বর্তমানে তিন মাস হলো শত শত লোকের সমাগম ঘটছে তার বাড়িতে। বিভিন্ন স্থান থেকে আগত রোগীরা তার বাড়ির উঠান ও আশপাশে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষমান অবস্থায় বসে থাকে কবিরাজকে একবার দেখানোর জন্য। কবিরাজ প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রোগী দেখেন। তার এই প্রতারণার কাজে তার কৃষক পিতা কৃষি কাজ বাদ দিয়ে কবিরাজী কাজে ছেলেকে সাহায্য করার জন্য নির্দিষ্ট ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে এবং মা ছোট একটি দোকানে তেল, পানির বোতলসহ সিরিয়ালের টোকেন বা টিকিট বিক্রি করে ভুয়া কবিরাজ সাজা ছেলেকে সাহায্য করে থাকেন প্রতারক কবিরাজের মা ফিরোজা বেগমের সাথে এই প্রতিবেদকের কথা হলে তিনি বলেন, বর্তমানে দূর-দূরান্তের মানুষ রাত ২ টা থেকে আসা শুরু করে আমাদের বাড়িতে। সপ্তাহে সোমবার ও শুক্রবার জ্বিনের ডাক্তার বসে আমার ছেলের ঘাড়ে। বাকী দিনগুলো জ্বিনের মাধ্যমে আমার ছেলে কবিরাজী করে থাকে।
পার্শ্ববর্তী জেলা মাগুরার শালিকা থেকে প্যারালাইসিস রোগী হান্নান বিশ্বাসকে তার পরিবারের লোক এই কবিরাজের কাছে দেখাতে নিয়ে এসেছেন। এখানে আগেও দুদিন এনেছেন হান্নান বিশ্বাসকে। অনেক টাকার ওষুধও দিয়েছিল কবিরাজ ছেলেটা কিন্তু কোন কাজ হয়নি। তবুও শেষবারের মতো আবার এনেছেন রোগীর সুস্থ হওয়ার আশায় কবিরাজ বাড়ি আসা কালিগঞ্জ উপজেলার মোস্তবাপুর গ্রামের নুর মোহাম্মদ বলেন, আশপাশের লোকের মুখে শুনে আগে একবার এসেছিলাম আমার পাইলসের সমস্যা নিয়ে। সেদিন সব মিলিয়ে প্রায় ২ হাজার টাকার ঔষধ দিয়েছিল, কিন্তু কোনো কাজ হয় নি।তাই আজ আবারও আসলাম,দেখি কি হয়।
কবিরাজ মোঃ মুন্না হাসান ইমন বলেন, মানুষের কাজ না হলে এত লোক আমার কাছে আসে কেন? এখানে রোগীদের সাথে কোন প্রতারণা করা হয় না।আমি কিছু না সব জ্বিনে করে।
কোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আল আজাদ বলেন, আমি শুনেছি অল্প বয়সের এই কবিরাজ প্রতিদিন অনেক রোগী দেখছেন। তিনি কিভাবে কি করছেন তা খোঁজ-খবর না নিয়ে বলতে পারব না। তবে অনিয়ম বা প্রতারণার মত কোন কিছু ঘটলে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে যা করনীয় তাই করা হবে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আলমগীর হোসেন জানান, জ্বীনের দ্বারা চিকিৎসার বাস্তবিক কোন ভিত্তি নেই। প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে ওই কবিরাজের বাড়িতে যেয়ে তার কার্যক্রম যাচাই করে দেখা হবে।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান জানান,প্রথমত মানুষকে সচেতন হতে হবে। নিজেদের মধ্যে উপলব্ধি আসতে হবে যে, তিনি চিকিৎসার নামে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন কিনা সে ব্যাপারে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা ওই কবিরাজের ব্যাপারে খোঁজখবর নেব। প্রতারণা এবং অনিয়ম কিছু পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই পত্রিকার সকল সংবাদ, ছবি ও ভিডিও স্বত্ত্ব সংরক্ষিত © ২০২১ দৈনিক মাতৃজগত    
Developed By Bangla Webs
banglawebs999991