স্টাফ রিপোর্টারঃ
ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ, রাতোর,বাংলাগড়, ফুটানি, ধামেরহাট,ভেলাই,ফরিঙ্গাদীঘি সহ ঠাকুরগাঁও,পীরগঞ্জ ও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঝড়ো হাওয়ার সাথে তুমুল বেগে ঝড়বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টি হয়। শিলা বৃষ্টিতে মানুষ আহত ঘড়বাড়ি সহ ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
রবিবার ১০ই এপ্রিল দুপুর ২টার পর থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত এ শিলাবৃষ্টিতে আম, লিচু, ভুট্টা, মরিচ ধানসহ অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে৷ রাণীশংকৈল উপজেলার রাতোর ইউনিয়নের বাংলাগড় গ্রামের বাগান মালিক আব্দুল জলিল জানান,মানুষের কাছে লিজ নিয়ে প্রায় পনেরো বিঘা জমিতে (৫০শতকে) আমের বাগান রয়েছে। বৈরী আবহাওয়ায় আমের মুকুল এমনিতেই জ্বলেগিয়ে গুটি কম ছিল, তারপর আবার আজকের এই হঠাৎ ঝড়ো হাওয়ার সাথে শিলাবৃষ্টি বাগানের আম ঝড়ে পড়ে গেছে। বাগান গুলোই আমার বেঁচে থাকার স্বপ্ন ছিল হঠাৎ শীলা বৃষ্টিতে সব স্বপ্ন শেষ গেল। গরকতগাঁও গ্রামের কৃষক আনছার আলী জানান, প্রায় পাঁচ বিঘা জমিতে বোরো ধান ও ছয় বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করি। কৃষি আমার একমাত্র ভরসা, হঠাৎ ঝড়ো হাওয়া ও শীলা বৃষ্টিতে ধান, ভুট্টা সহ সব কিছুই ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে।বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার লাহিড়ী এলাকার মরিচ চাষি ফরিদুল ইসলাম জানান, কয়েকদিন পরই মরিচ তোলার কথা ছিল। কিন্তু শিলা বৃষ্টিতে দুই বিঘা জমির মরিচ ঝড়ে পড়েছে। প্রতিবছর মরিচ বিক্রি করেই তিনি সংসারের সিংহভাগ খরচ বহন করেন বলে জানান তিনি।আরেক বাগান ব্যবসায়ী রাজু বলেন, প্রায় সাড়ে তিনশ গাছের আমের গুটি ও পাতা ঝড়ে গেছে। আমি একদম পথে বসে গেলাম। এর আগের শিলাবৃষ্টিতেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলাম। সে ধকল সামলাতে না সামলাতেই আবারও শিলাবৃষ্টি আমার সবকিছু সর্বশান্ত করে দিয়েছে। গাছে যেসব আমের গুটি আছে সেগুলো দিয়ে কি হবে দেখি আল্লাহ পাক এর জন্য কি মঙ্গল রেখেছেন।এছাড়াও জেলার বিভিন্ন এলাকায় বড় বড় শীলা বৃষ্টির কারণে গাছপালা সহ ঘরবাড়ির টিনের চালা ফুটা হয়ে গেছে বলে জানা গেছে।বাংলাগড় গ্রামের অনেকের থাকার ঘরের সমস্ত টিনের চালা বড় বড় শীলা পাথর পড়ে ফুটা হয়ে গেছে বলে লক্ষ করা গেছে।জেলার কৃষি কর্মকর্তা আবু হোসেন জানান ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন স্থানে শিলাবৃষ্টিতে কৃষকের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে মরিচ,ভূট্টা,ধান,আম ও লিচুর গুটিসহ আরও অন্যান্য ফসলেরও ক্ষতি হয়েছে। তবে কত হেক্টর জমিতে কি কি ফসলের ক্ষতি হয়েছে তা জানতে মাঠে কাজ করছি আমরা। পরবর্তীতে এর সঠিক হিসাব জানাতে পারবো। এদিকে রাণীশংকৈল পৌরসভা কলেজ পাড়ার মিষ্টির দোকানদার দুলু ও তার কর্মচারী নেকমরদ বাজারে দোকানরত অবস্থায় শিলা পাথরের আঘাতে আহত হয়েছেন বলে জানা যায়।