শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৫৭ অপরাহ্ন
ঘোষনা
আখাউড়ায় নববধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ার অভিযোগ ময়মনসিংহের নতুন জেলা প্রশাসক সাইফুর রহমানকে ফুলের শুভেচ্ছা জানালেন আব্দুল মোমিন ভোলা শহরে চায়ের আড্ডায় ভোলার কবিদের কবিতা পাঠ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে হামিদুর ইসলাম হামিদ এর মহিলা সমাবেশ: জনস্রোতে পূর্ণ অডিটোরিয়াম, ধানের শীষে ভোট দিতে অধীর ঝিনাইদহ-৪! কক্সবাজারের উখিয়া সরকারি জমিতে গড়ে ওঠা ২৫০ টি অবৈধ স্হাপনা উচ্চেদ ধর্মকে রাজনীতির অস্ত্র বানানো বিশ্বাসঘাতকতা: আমিনুল হক জামাইয়ের নির্যাতনে ভেঙে পড়া মন—শাহজাদপুরে শাশুড়ির মর্মান্তিক আত্মহত্যা দুর্গাপুরে মাছ ধরতে নিষেধ করায় বিধবা নারীর ওপর হামলার চেষ্টা, থানায় জিডি আখাউড়ায় তারেক রহমানের জন্মদিনে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প গাজীপুরের শ্রীপুরের ফিনিস কয়েল কারখানায় ভয়াবহ অগ্নি কান্ড উদ্ধার তৎপরতায় ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট। ঢাকা–সিলেট মহাসড়কে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ—ভূমি অধিগ্রহণের স্থাপনাও সরানোর প্রস্তুতি ডেঙ্গাগ্রাম চৌরাস্তায় সড়ক দুর্ঘটনায় :প্রাণ গেলো ১জনের আহত ২ প্রবাসী ব্যবসায়ীদের চট্টগ্রামে বিনিয়োগের আহবান মেয়র ডা, শাহাদাতের ঢাকায় চুয়াডাঙ্গা–২ আসনের প্রবাসী ভোটারদের সাথে মতবিনিময় সভা তারেক রহমানের ৬১তম জন্মদিন আজ যুগে যুগে এদেশের মানুষ বিএনপির প্রতি আস্থা রেখেছে … বিএনপি মনোনীত প্রার্থী লায়ন হারুনুর রশিদ সাম্প্রতিক আগুনে পুড়ছে দেশ, আতঙ্কে মানুষ: এই সন্ত্রাসের শেষ কোথায়? তারেক রহমান: আগামীর বাংলাদেশের কাণ্ডারি দেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের ভূমিকা রাখতে হবে: মেয়র ডা. শাহাদাত কাশিমপুরের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি।

তারেক রহমান: আগামীর বাংলাদেশের কাণ্ডারি

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৫
  • ৪৮ বার পঠিত

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে কয়েকজন নেতা এমন আছেন, যাদের নাম শুধু রাজনৈতিক অঙ্গনে নয়, জনগণের হৃদয়ে ও স্মৃতিতেও গেঁথে রয়েছে। তারেক রহমান তাদের অন্যতম। ২০ নভেম্বর, ১৯৬৫ সালে জন্মগ্রহণ করা এই নেতা শুধু বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নন, তিনি এক বাস্তবিক রাজনৈতিক কাণ্ডারি, যিনি দেশের ভবিষ্যতকে নতুন রূপ দিতে এবং গণতান্ত্রিক মূল্যের ওপর ভিত্তি করে রাজনীতি পরিচালনার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

তারেক রহমানের রাজনৈতিক যাত্রা এককথায় বলতে গেলে শুধু পারিবারিক উত্তরাধিকার নয়, বরং সংগ্রাম, নেতৃত্ব, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন পরিকল্পনা এবং তৃণমূলের শক্তি সৃষ্টির এক অবিস্মরণীয় প্রক্রিয়ার গল্প। তিনি পিতার মৃত্যুর শোক থেকে রাজনৈতিক বুদ্ধিমত্তার প্রাথমিক পাঠ গ্রহণ করেন, এবং মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে ছোট বয়সেই রাজনীতিতে প্রবেশের সাহস দেখান। ১৯৮১ সালের ৩০ মে, যখন তার পিতা রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান এক নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হন, তখন মাত্র ১৩ বছরের এক কিশোর হিসেবে তারেকের বুক ফেটে যায়। সেই শোকই পরবর্তীতে তার রাজনৈতিক জীবনের শক্তি ও প্রেরণার মূলধন হয়ে দাঁড়ায়।

তারেক রহমানের শিক্ষাজীবনও তাঁর রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করেছে। তিনি সেন্ট জোসেফ কলেজ, ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল কলেজ এবং আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা লাভ করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হলেও, পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র হিসেবে তার দৃষ্টিভঙ্গি আরও বিস্তৃত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রেটিস, প্লেটো, অ্যারিস্টটল, হাবস, লক, রুশো, ভলতেয়ার এবং কার্ল মার্কসের রাজনৈতিক দর্শন অধ্যয়ন করে তিনি কেবল জ্ঞানার্জন করেননি; বরং তা তাঁর রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা, দলের নেতৃত্ব ও নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে গভীর প্রভাব ফেলে।

তারেক রহমানের রাজনৈতিক পরিচিতি শুরু হয় ১৯৮৮ সালে, যখন তিনি জন্মভূমি বগুড়ার গাবতলী থানা বিএনপির একজন সাধারণ সদস্য হিসেবে দলের সঙ্গে যুক্ত হন। মাত্র ২২ বছর বয়সে তিনি রাজনৈতিক কার্যক্রমে হাতেখড়ি দেন। তার কার্যক্রম শুধু রাজনৈতিক দলের জন্য নয়, বরং তৃণমূল পর্যায়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। বগুড়ায় তিনি যে সংগঠন তৈরি করেন তা পরবর্তীতে দেশের অন্যান্য জেলার জন্যও উদাহরণ হয়ে ওঠে।

১৯৯১ এবং ১৯৯৬ সালে যখন তার মা, বেগম খালেদা জিয়া, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পাঁচটি আসনে বিপুলভাবে নির্বাচিত হন, সেই আসনের নিবিড় দেখভালের দায়িত্ব পড়েছিল তারেকের ওপর। তিনি জনগণের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করেন, উন্নয়নমূলক কাজের দিকে মনোযোগ দেন এবং তৃণমূল পর্যায়ে দলকে শক্তিশালী করেন। বগুড়ার মডেল রাজনীতির মাধ্যমে তিনি শুধু বিএনপির জন্য নয়, দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দলের কাছে উদাহরণ স্থাপন করেন, কিভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংগঠনকে মেলাতে হয়।

২০০১ সালের নির্বাচনে তারেক রহমানের ভূমিকা ছিল অমূল্য। ১৯৯৯ সালে তিনি রাজধানীর বনানীতে একটি বিশেষ রাজনৈতিক অফিস প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে তিনি নিভৃতে গবেষণা করেন, সারাদেশের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেন এবং নির্বাচনী কৌশল প্রণয়ন করেন। তার এই সুসংগঠিত পরিকল্পনা বিএনপিকে ২০০১ সালের নির্বাচনে সর্বব্যাপী বিজয় এনে দেয়। উল্লেখযোগ্য যে, তিনি কোনো মন্ত্রিত্ব বা এমপি পদ গ্রহণ করেননি; বরং দলের সাংগঠনিক ভিত্তি শক্তিশালী করাই তার লক্ষ্য ছিল।

২০০২ সালে তিনি দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব হন এবং এর পরবর্তী সময়ে বিএনপিকে তৃণমূল পর্যায়ে শক্তিশালী করার জন্য ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। দেশের ৭০ হাজার গ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত দলের সংগঠন পুনর্গঠন এবং পুনরায় সুসংগঠিত করা একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ ছিল। তারেকের নেতৃত্বে, বিএনপি শুধু শক্তিশালী হয়ে ওঠে না, বরং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার নতুন মানদণ্ডও স্থাপন করে।

তরুণ নেতৃত্ব হিসেবে তারেক রহমান ছাত্রদলের কার্যক্রমে বিশেষ মনোযোগ দেন। তিনি ছাত্রদলকে এক নতুনভাবে গড়ে তোলেন, যেখানে শিক্ষাঙ্গন ভেতরে সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশ থাকে। শিক্ষার্থীরা সেখানে রাজনীতির শিক্ষার্থী হিসেবে বিকাশ লাভ করে। তিনি গ্রাম-গ্রামে গিয়ে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করেন এবং তৃণমূলের স্বতঃস্ফূর্ত উদ্দীপনা বজায় রাখেন। দেশের ২৩টি জেলার লক্ষাধিক ইউনিয়ন প্রতিনিধি তিন মাস ধরে স্বতঃস্ফূর্ত উৎসবের মতো সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। এ ধরনের উদ্ভাবনী সংগঠন এবং অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিরল।

তারেক রহমানের নেতৃত্ব কেবল সাংগঠনিক দক্ষতায় সীমাবদ্ধ নয়। তিনি সামাজিক উন্নয়নমূলক কার্যক্রমেও নিবেদিত। কৃষক ভর্তুকি, বয়স্ক ভাতা, নারী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি এবং পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধির মতো কার্যক্রমে তিনি সক্রিয়ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করেন। তাঁর হাতে গণতান্ত্রিক নীতি, দলীয় শৃঙ্খলা এবং জনগণকেন্দ্রিক উন্নয়ন কর্মসূচি একসাথে পরিচালনার দক্ষতা আছে।

২০০৭ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতায় সামরিক সমর্থিত সরকারের সময় তিনি দেশের রাজনৈতিক পরিবেশের চাপে বাধাপ্রাপ্ত হন। মিথ্যা মামলা ও বিদেশে চিকিৎসার জন্য বাধ্যতামূলক অবস্থায় থাকলেও, তারেক রহমান ধৈর্য, সহিষ্ণুতা এবং নীতি মেনে চলার এক চূড়ান্ত পাঠ আমাদের সামনে রেখেছেন। এই সময়ের অভিজ্ঞতা তাঁকে শেখায়, নেতার ক্ষমতা কেবল পদে নয়, বরং নীতি, ধৈর্য এবং নেতৃত্বের মানদণ্ডে।

২০০৯ সালে তিনি বিএনপির সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং ২০১৮ সালে যখন বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দী হন, তখন তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এই অবস্থান থেকে তিনি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। তাঁর নেতৃত্ব কেবল দলের জন্য নয়, দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতেও এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
ব্যক্তিগত জীবনে তারেক রহমান একজন পরিবারপ্রিয় ও দায়িত্বশীল মানুষ। ১৯৯৪ সালে তিনি ডাঃ জোবায়দা রহমানকে বিয়ে করেন। তাঁদের একটি কন্যা রয়েছে। রাজনৈতিক ব্যস্ততার মাঝেও তিনি পরিবারকে সময় দেন, যা তাঁর চরিত্রের আরও মানবিক দিক উন্মোচিত করে।

আজকের দিনেও তারেক রহমানের রাজনৈতিক চরিত্র বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক অনন্য দৃষ্টান্ত। তিনি কেবল উত্তরাধিকারী নেতা নন; তিনি তৃণমূল শক্তির প্রতিষ্ঠাতা, গণতান্ত্রিক নীতির পৃষ্ঠপোষক এবং দেশের সর্বস্তরের মানুষের উন্নয়নের প্রবক্তা। তাঁর নেতৃত্বে বিএনপি শুধু শক্তিশালী দলই নয়, বরং দেশের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতির অঙ্গিনিও শক্তিশালী হয়েছে।

সমাজের প্রত্যেক স্তরে জনগণের আস্থা অর্জন, সাংগঠনিক দক্ষতা এবং রাজনৈতিক দূরদৃষ্টি- এগুলোই তারেক রহমানকে বাংলাদেশের আগামীর কাণ্ডারি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তাঁর নেতৃত্ব নতুন এক অধ্যায় রচনা করবে। সেই অধ্যায়ে গণতন্ত্র, নীতি, দায়িত্ববোধ এবং জনগণের আস্থা হবে মূলমন্ত্র।

সংক্ষেপে বলা যায়, তারেক রহমানের জীবন ও রাজনৈতিক যাত্রা আমাদের শিক্ষা দেয় যে নেতৃত্ব কেবল ক্ষমতা নয়; এটি সংগ্রাম, পরিকল্পনা, জনগণের সঙ্গে সংযোগ এবং সর্বোপরি ন্যায় এবং নীতির ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের এক দৃঢ় যোদ্ধা, যিনি দেশের ভবিষ্যতকে উন্নয়নের শীর্ষে নিয়ে যাওয়ার জন্য অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও প্রজ্ঞার প্রদর্শন করছেন।

তারেক রহমানের এই যাত্রা, সংগ্রাম, এবং অর্জন কেবল বিএনপি বা রাজনৈতিক দলের জন্য নয়, পুরো জাতির জন্য অনুপ্রেরণা। এই কারণেই তিনি আজকের দিনে কেবল একজন নেতা নয়, বরং জনগণের আশা, স্বপ্ন এবং দেশের উন্নয়নের প্রতীক। তার নেতৃত্বের প্রতিটি পদক্ষেপ আমাদের শেখায়- যেন এক নিখুঁত কৌশল, দূরদৃষ্টি এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ একসাথে মিলিত হলে কীভাবে একটি দেশকে অগ্রগতির শিখরে নিয়ে যাওয়া যায়।

লায়ন ড. এ জেড এম মাইনুল ইসলাম পলাশ
লেখক, সাংবাদিক, কলামিস্ট ও মানবাধিকারকর্মী

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই পত্রিকার সকল সংবাদ, ছবি ও ভিডিও স্বত্ত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫ দৈনিক মাতৃজগত    
Developed By Bangla Webs
banglawebs999991