শেখ মোঃ করিম বকসো,তাড়াশঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে রোরো ধান আবাদের জন্য ‘ট্রে’ পদ্ধতিতে ধান গাছের চারা উৎপাদন করছেন দঘী সগুনা গ্রামের কৃষকেরা। এ ব্যাপারে তাদের প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা দিচ্ছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। এই পদ্ধতিতে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ট্রেতে চারা উৎপাদন করা হয়। এতে ধানের উৎপাদন খরচ কমানোসহ শ্রমিক সংকট নিরসন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় পরীক্ষামুলকভাবে ট্রেতে সিড সোয়িং যন্ত্রের মাধ্যেমে ধানের বীজ বপন করা হয়েছে। এই বীজ প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে রোপণ করা যাবে। এই পদ্ধতিতে উৎপাদিত ১৫ থেকে ২০ দিনের চারা মাঠে রোপণ করা যাবে। প্রতিটি ট্রেতে ২০০ গ্রাম থেকে ২৫০ গ্রাম করে ধানের বীজ বপন করা হয়। ট্রের ওপর নির্দিষ্ট পরিমাণ রাসায়নিক ব্যবহারে রোগ প্রতিরোধের পাশাপাশি বীজ বপনের ১৩ থেকে ১৫ দিন পর ধানের চারাগুলো মাদুরের মতো করে তোলা হয়। এরপর চারা রোপণ যন্ত্র রাইস ট্রান্সপ্লান্টের মাধ্যমে মাঠে রোপণ করা হয়। এ পদ্ধতিতে একজন শ্রমিক একটি মেশিন দিয়ে দিনে প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে পারবেন। ট্রে পদ্ধতিতে চারা টেনে তুলতে হয় না, তাই চারার শিকড় ছিঁড়ে না। ফলে শিকড় দ্রুত মাটি থেকে খাদ্য গ্রহণ করে এবং গাছ দ্রুত বেড়ে ওঠে।
তাড়াশ উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের দিঘীসগুনা গ্রামের কৃষক গোলজার হোসেন বলেন, ‘এ পদ্ধতিতে ধানের চারা আগে কখনো চাষ করিনি। প্রথমবারের মতো কৃষি অফিসের তত্ত্বাবধানে এবছর আমি ১৮০০ট্রেতে সমলয় পদ্ধতিতে বোরো ধানের বীজ বপন করেছি।
তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সনাতন পদ্ধতির চেয়ে এই পদ্ধতিতে ধান চাষে ফলন বাড়ে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ। সনাতন পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি না করে প্লাস্টিকের ফ্রেম বা ট্রেতে বীজ বপনে ৩: ২ অনুপাতে মাটি ও গোবরের মিশ্রণ দিয়ে বীজতলা তৈরি করা হয়। এরপর বীজ সীড সোয়িং যন্ত্রের মাধ্যেমে বপন করে অর্ধেক মাটি ও গোবর মিশ্রণে পানি দিয়ে ভিজিয়ে সমতল জায়গায় রাখা হয়। বীজতলা তৈরির তিন দিনের মধ্যে অঙ্কুর বের হয়।
২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে চারা উৎপাদন করে রোপণ করা সম্ভব। এই পদ্ধতিতে কৃষক ভালো মানের চারা উৎপাদন করে অল্প সময়ের মধ্যে অধিক জমিতে ফসল ফলাতে পারেন। এ ছাড়া এই বীজতোলা থেকে ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্রের সাহায্যে জমিতে রোপন করা হবে। ধান পাকার পর হারভেস্টার মেশিনের মাধম্যে ধান কাটা হবে।