মোঃ সনজব আলী হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি। দালালদের সরকারি আশ্রয়-প্রশয় দিয়ে ঘুষসহ নানামুখী দুর্নীতিমূলক কর্মকান্ড চালানোর অভিযোগ ওঠেছে হবিগঞ্জ বিআরটিএ’র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। সরেজমিনে অনুসন্ধানেও বেরিয়ে এসেছে অনিয়মের নানা চিত্র। গাড়ির ফিটনেস, লাইসেন্স করতে গেলে ভোগান্তির বিস্তর অভিযোগ সেবা নিতে আসা মানুষদের। সকল কিছু অনলাইনে হলেও থেমে নেই দালালের দৌরাত্ম। দালালদের টাকা না দিয়ে কোনো কাজই হয় না এই অফিসে।ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ির রেজিস্ট্রেশন না দেয়ার বিধান থাকলেও উৎকোচের বিনিময়ে লার্নার (শিক্ষানবিশ) কার্ডধারীদের নিয়মিতই রেজিস্ট্রেশন দেয়া হচ্ছে হবিগঞ্জ বিআরটিএ এর অফিস থেকে। ড্রাইভিং লাইসেন্সের পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেয়ার বিনিময়েও নেয়া হচ্ছে বাড়তি টাকা। চুক্তিমতো টাকা না দেয়া হয় তাহলে পরীক্ষায় ফেইল দেখানো হয়। বাধ্য হয়ে অনেককেই তাদের কথামতো টাকা দিতে হয়। লোক দেখানো মাত্র প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা নেয়া হয়। বাকী সব চলে গোপনে। সেবাগ্রহীতাদের অভিযোগ, দালালদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে এই কার্যালয়টি। ওই অফিসের কর্মকর্তার যোগসাজশে গড়ে ওঠেছে দালালদের শক্তিশালী সিন্ডিকেট।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিকভুক্তভোগীর অভিযোগ, গাড়ির
ফিটনেস এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে এলে ভোগান্তির শেষ নেই।দালাল না ধরলে কোনো কাজইহয় না। লাইসেন্স প্রতি দুই গুণ,তিন গুণ টাকা বেশি দিতে হয়।এই অফিসে বাড়তি উৎকোচ ছাড়া কোন ফাইলই স্বাক্ষর করা হয় না। এমনকি এই অফিসের এক টেবিলে গেলে বলে ওই টেবিলে যান। আকারে-ইঙ্গিতেটাকাও দাবি করা হয়। আবার দালালদের মাধ্যমে টাকা নেয়া হচ্ছে। দালালদের মাধ্যমে টাকা দিলে গাড়ীর ফিটনেসসহ যেকোন সমস্যা নিমিষেই সমাধান হয়ে যাচ্ছে।হবিগঞ্জ বিআরটিএ অফিসে কয়েকদিন ঘুরে দেখা গেছে, বাস, মিনিবাস, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, হায়েসসহ বিভিন্ন যানবাহন প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০টি এমনকি কোন কোন দিন শতাধিক গাড়ীরও ফিটনেস সার্টিফিকেট দেয়া হয়। নানান সমস্যার কথা বলে দেড় থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়ে দালালরা ফাইলে নির্ধারিত সাংকেতিক চিহ্ন দিয়ে দেন। পরে ওই গাড়ীর ফাইলটি সহকারি পরিচালকের টেবিলে পৌঁছলে তিনি সাংকেতিক চিহ্ন দেখে বুঝতে পারেন টাকা লেনদেন হয়েছে এবং ফাইলটি কে পাঠিয়েছে। পরে তিনি ফাইলটি স্বাক্ষর করেন।হবিগঞ্জ বিআরটিএ অফিস থেকে দালালদের দৌরাত্ম ও ঘুষ, বাণিজ্য বন্ধের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।