হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে জামাতার হাতে শ্বশুড় খুন হওয়ার ঘটনায় ২৬ বছর পড় জামাতাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে ১ লাখ টাকা জরিমানা আনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়।
গতকাল সোমবার দুপুরে হবিগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ হালিম উল্ল্যাহ চৌধুরী এ দন্ডাদেশ প্রদান করেন। দন্ডপ্রাপ্ত আসামী হল, উপজেলার মধ্যসমত গ্রামের মৃত আনফর উল্ল্যাহর পুত্র সিরাজুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষের মামলা পরিচালনা করেন স্পেশাল পিপি মোঃ মোস্তুফা মিয়া।
মামলার বিবরণে জানা যায়, রমজানপুর গ্রামের নিহত কৃষক হান্নান মিয়ার কন্যা মিনা আক্তারের সাথে ঘটনার ৬ মাস আগে সিএনজি চালক সিরাজুল ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের আগেই সিরাজুল অন্য নারীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি জানতে পারে মিনা। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কলহ সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে সিরাজুল ২য় বিয়ে করার জন্য মিনার উপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।
১৯৯৬ সালের ২২ জুন সকালে পুণরায় সিরাজুল মিনাকে ২য় বিয়ের জন্য চাপ দেয়। এতে মিনা রাজি না হলে তার উপর নির্যাতন চালায় সে। বিষয়টি শুণে মিনার বাবা হান্নান মিয়া মিনার স্বামীর বাড়িতে যায় এবং তাকে বাঁধা দেয়। এসময় সিরাজ ক্ষিপ্ত হয়ে তার শ্বশুর হান্নানকে ফিকল দিয়ে বুকে আঘাত করে পালিয়ে যায়। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থা আশংকা জনক হলে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপতালে প্রেরণ করা হয়।
সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওইদিন সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী হাদেছা খাতুন বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর পুলিশ সিরাজকে গ্রেফতার করে কোর্টে প্রেরণ করে। পরে উচ্চ আদালত থেকে সে জামিনে বেরিয়ে আসে।
দীর্ঘ ২৬ বছর পর ১০ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহন শেষে এ আদেশ দেয়া হয়। ওই কোর্টের পেশকার মোঃ ফজলু মিয়া জানান, রায়ের আগ থেকেই আসামী পলাতক ছিল।