মোঃ রাসেল ব্যুরো প্রধান নাটোর :
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) গাইবান্ধা জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ছাবিউল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) স্থানীয় সরকার বিভাগ (এলজিইডি) উন্নয়ন শাখার সচিব মো. নিজাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, মো. ছাবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে কর্মস্থল ত্যাগ এবং গাড়িতে অবৈধ অর্থ বহন ও তা যৌথ বাহিনী কর্তৃক জব্দ করার বিষয়টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশের অভিযোগ আনা হয়।
প্রজ্ঞাপনে তার এহেন কার্যকলাপের প্রেক্ষিতে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা ২০১৮ অনুসারে সাময়িক বরখাস্ত এবং বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
একই সঙ্গে প্রজ্ঞাপনে কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ১২ (১) অনুসারে ছাবিউল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করার কথাও উল্লেখ করা হয়।
এরআগে, গত রবিবার (১৬ মার্চ) ছাবিউল ইসলামকে এলজিইডির প্রধান কার্যালয় থেকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) আবদুর রশীদ মিয়া স্বাক্ষরিত এক নোটিসে নির্বাহী প্রকৌশলী ছাবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে কেনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা চিঠি পাওয়ার সাত কর্মদিবসের মধ্যে জানতে চাওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, যৌথ বাহিনীর সদস্যরা গত বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাতে নাটোর–বগুড়া মহাসড়কের সিংড়া উপজেলায় যানবাহনে তল্লাশির সময় নাটোর অভিমুখে একটি ব্যক্তিগত গাড়ি থামিয়ে প্রায় ৩৭ লাখ টাকাসহ মো. ছাবিউল ইসলামকে আটক করে। পরে তাঁকে ও গাড়ির চালককে সিংড়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন তদন্তকারী কর্মকর্তা তলব করামাত্র হাজির হবেন, এমন শর্তে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান তিনি। তবে ছাবিউল ইসলাম ওই টাকা তাঁর জমি বিক্রির টাকা বলে দাবি করেন। তবে এর সমর্থনে তিনি কোনো প্রমাণ দিতে না পারায় ওই টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন নাটোরের সিংড়া আমলি আদালত।
এদিকে, ঘটনার পর থেকেই গাইবান্ধার কর্মস্থলে অফিস করেনি নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ছাবিউল ইসলাম। মঙ্গলবারও অফিসে অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। এ বিষয়ে বক্তব্য পাওয়া যায়নি নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ছাবিউল ইসলামের। এমনকি তার মুঠফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।
অভিযোগ রয়েছে, ছাবিউল ইসলাম ২০০৫ সালের ২১ ডিসেম্বর গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে যোগ দেন। সেখানে ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টানা ১৪ বছর ১ মাস ২২ দিন কর্মরত ছিলেন। এরপর জ্যেষ্ঠ সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে গাইবান্ধা জেলা এলজিইডি কার্যালয়ে ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি যোগ দেন তিনি। পরে পদোন্নতি পেয়ে দীর্ঘ ২১ বছর ধরে তিনি গাইবান্ধা জেলায় কর্মরত আছেন। এরমধ্যে মাঝে ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর তাকে বরিশালে বদলি করা হলেও মাত্র ২৩ দিনের মাথায় আবারও গাইবান্ধায় জেলায় নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে যোগদেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে চাকরি করায় তার বিরুদ্ধে ঠিকাদারের কাছে কমিশন ও ঘুষ বাণিজ্য করে বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক হয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।