গাইবান্ধা জেলা ব্যুরো প্রধানঃ
নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ – বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ ” এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ- ২০২২ উপলক্ষে গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মৎস্য অফিসের যৌথ আয়োজনে উপজেলা কর্মরত গণমাধ্যমের ব্যক্তি বর্গের সাথে মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ২৩ জুলাই শনিবার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুজ্জামান নয়নের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার সরকারের পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান একেএম মোকসেদ চৌধুরী বিদ্যুৎ। এসময় উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকগণ উপস্থিত উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার সরকার লিখিত বক্তব্যে উপস্থিত সকলকে স্বাগত শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্যের শুরুতে প্রথমেই শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সকল শহীদদের ও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন স্বাধীনতা যুদ্ধে সকল শহীদ বীরমুক্তিযোদ্ধাদের যাদের জীবনের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন সার্বভৌম দেশ পেয়েছি । তিনি আরো বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন “মাছ হবে দ্বিতীয় বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী সম্পদ। সুধিবৃন্দ এবারের মৎস্য সপ্তাহের প্রতিপাদ্য নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ”। আপনারা অবগত আছেন আমাদের প্রাণিজ আমিষের প্রায় ৬০% যোগান দেয় মাছ। মোট জিডিপির ৩.৫০ শতাংশ এবং কৃষিজ জিডিপির ২৫.৭২% মৎস্য খাতের অবদান।বর্তমান মৎস্যবান্ধব সরকারের বিভিন্ন কর্মকান্ডের ফলে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ি বিগত১০ বছরের হিসেবে মৎস্য উৎপাদন প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে হয়। দেশের সাফল্য আজ বিশ্ব পরিমণ্ডলেও স্বীকৃত। ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে ১ম অভ্যান্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ আহরণে বাংলাদেশ ৩য় এবং বন্ধ জলাশয়ে মাছ উৎপাদনে ৫ম জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা, পুষ্টি চাহিদা পুরণ, কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে মৎস্যখাত গুরুত্বপূর্ণ অবদান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন “বিল-ঝিল, হাওড়, বাঁওড়, নদীনালায় পরিকল্পিতভাবে মাছ চাষ করতে হবে । মাছের চেয়ে এতো নিরাপদ আমিষ আর নেই”। মৎস্য চাষ সম্প্রসারণে গবেষণা থেকে প্রাপ্ত ২৬ টি লাগসই প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারণ করা হচ্ছে যার মধ্যে এ উপজেলায় প্রযুক্তি গুলো হলো- রুই জাতীয় মাছের মিশ্র চাষ, গলদা চিংড়ি চাষ, তেলাপিয়া চাষ, পাঙ্গাস চাষ, কৈ শিং মাগুর মাছের চাষ, পাবদা গুলশা চাষ, নার্সারী পুকুরে পোনা পালন, বিল নার্সারী স্থাপন, মৎস্য অভয়াশ্রম স্থাপন ইত্যাদি। আপনার অবগত আছেন দেশীয় প্রজাতির ছোট মাছ চাষে পলাশবাড়ী উপজেলা এগিয়ে যাচ্ছে। বেকার যুবকরা। মাছ চাষে মনোযোগ দেওয়ায় তাদের বেকারত্ব দুর হচ্ছে। পলাশবাড়ী উপজেলার মাছের উৎপাদন ৩৯৪৫ মে.টন এবং চাহিদা ৪৬৬৮ মে.টন। আমাদের মাছের ঘাটতি রয়েছে তা আগামীতে মাঠ পর্যায়ে চাষিদের নিবিড় ভাবে পরামর্শ দিয়ে এবং উন্মুক্ত জলাশয় গুলো সুষ্ঠু ব্যাবস্থাপনার মাধ্যমে ঘাটতি পূরণে সক্ষম হবো এজন্য আপনাদের সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি। আপনাদের মূল্যবান সময় দিয়ে আজকের এই মত বিনিময় সভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সপ্তাহব্যাপি অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ জানিয়ে আজকের মত বিদায় নিচ্ছি। জয় বাংলা।
শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুজ্জামান নয়ন ও সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার সরকার।