স্টাফ রিপোর্টারঃ
আর মাস খানেকের মধ্যে মাঠ থেকে ধান মাড়ানো কাজ শুরু করবে কৃষক। কিন্তু পুরো বোরো মৌসুমে নওগাঁর নিয়ামতপুরে কৃষকের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ব্যক্তি মালিকানা সেচযন্ত্র ও বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) গভীর নলকূপ অপারেটরদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে হতাশ কৃষক বলছেন সবকিছু মিলিয়ে বোরোধান থেকে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন তাঁরা।
বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় বিএমডিএর গভীর নলকূপ রয়েছে ৬০৪ টি এবং ব্যক্তি মালিকানা সেচযন্ত্র রয়েছে প্রায় ১ হাজার ১শ টি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলায় ২০ হাজার ৪৮৫ হেক্টর জমিতে বোরোধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ২২ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে বোরোধানের চাষ হয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ১৩শ হেক্টর জমি বিএমডিএর অধীনে এবং বাঁকিগুলো ব্যক্তি মালিকানা সেচযন্ত্রের অধীনে চাষ হচ্ছে।
উপজেলা সেচ কমিটি সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ নভেম্বর সেচ কমিটির সভায় বোরো মৌসুমে ব্যক্তগত সেচযন্ত্রের মাধ্যমে উপজেলার হাজিনগর, নিয়ামতপুর, রসুলপুর ও পাঁড়ইল ইউনিয়নে ১৬ শ টাকা এবং চন্দননগর, ভাবিচা, শ্রীমন্তপুর ও বাহাদুরপুর ইউনিয়নে ১৪ শ টাকা বিঘা প্রতি নির্ধারণ করা হয়।
সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সব ইউনিয়নে সেচ কমিটির নির্ধারিত ফির থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে। উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের টিটিহার এলাকায় নির্মল ও ইমরান আলি বাবু ৩ হাজার টাকা নিচ্ছে প্রতি বিঘা হিসেবে।
টিটিহার এলাকার কৃষক আব্দুস সামাদ সহ অনেকেই বলেন, তবে সেচের রেট এত কম আমরা জানতে পারি নি। মাইকে সকলকে জানালে আর বেশি টাকা নিতে পারবে না।
শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের রামকুড়া মোড়ে এক লাইনে তিনটি মর্টার চালান মুরশেদ আলম নামের কৃষক। তার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি সবকিছু বৈধ নয় কিন্তু জমিতে সঠিকভাবে পানি দেওয়ার স্বার্থে এ কাজ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
ওই সেচযন্ত্রের অধীন কৃষক মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ২৫ শ টাকার নিচে পানি দিচ্ছেন না সেচযন্ত্রের মালিক। অগ্রিম টাকা না দিলেই পানি আটকে দেন বলে জানান ওই কৃষক। হাজিনগর ইউনিয়নের দোস্ত পুর এলাকার হাবিবুর রহমান ও ওবায়দুল সহ ২০-২৫ জন কৃষক জানান ওই গ্রামের ব্যক্তিমালিকানাধীন গভীর নলকূপের মালিক তুফানি এবং পলাশ পান্না ও রামেশ্বর কৃষকদের কাছ থেকে বিঘাপ্রতি ২ হাজার ২০০ করে টাকা দাবি করেন। কৃষকেরা উপজেলা সেচ কমিটির নির্ধারিত রেট অনুযায়ী টাকা দিতে চাইলে তুফানি এবং পলাশ পান্না ও রামেশ্বর তা নিতে সেচে পানি দেওয়া বন্ধ রাখতে চেয়েছেন অতিরিক্ত সেচ চার্জ নেওয়ার কথা স্বীকার করে
বিএমডিএ সহকারী প্রকৌশলী মতিউর রহমান বলেন, অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। সেচ কমিটির নির্ধারণ করা ফি মাইকের মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। অতিরিক্ত ফি আদায় করলে ডকুমেন্ট সহকারে অভিযোগ পেলে ব্যবস্হা গ্রহণ করা হবে।
সেচ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়ে আমার জানা নেই। অভিযোগ করলে অবশ্যই ব্যবস্হা গ্রহণ করা হবে।