জহিরুল হক জহির স্টাফ রিপোর্টার:-
বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলা শহরের বাস স্ট্যান্ড অবস্থিত বাপ্পি মিষ্টান্ন ভান্ডার। আলো ঝলমলে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কাচের শোকেসে স্তরে স্তরে সাজানো রয়েছে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ক্রেতারা সর্বোচ্চ দাম দিয়ে মিষ্টি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন অহরহ।
নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র বলছে, প্রতিদিন এই দোকান থেকে উপজেলা বাসির চাহিদার অধিকাংশ মিষ্টি সরবরাহ করা হয়। আর এই সমস্ত মিষ্টি তৈরি হয় যে কারখানাতে সেই কারখানায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মিষ্টি তৈরি হয় বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। শুধু এই একটি মিষ্টির দোকানই নয়, শহরের অন্যান্য মিষ্টির দোকান গুলোর অবস্থা প্রায় একই। দোকান চকচক করলেও এর কারখানায় দেখা মিলবে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, দুর্গন্ধ ময়লা আবর্জনার স্তুপ। এছাড়া যে সমস্ত পাত্রে করে দোকানে মিষ্টি পৌঁছে দেয়া হয় সেগুলোও নোংরা।
বাকেরগঞ্জের সচেতন মহল বলছেন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ও কেমিক্যাল ব্যবহার করে খাদ্য উৎপাদন করা হলে পেটের অসুখ থেকে শুরু করে দীর্ঘমেয়াদী ধীর গতির বিভিন্ন অসুখে আক্রান্ত হবে মানুষ। প্রশাসনিকভাবে এই সব দোকানের কারখানায় অভিযান চালানো প্রয়োজন। কিন্তু প্রশাসন কেন যে এই সমস্ত স্থানে অভিযান চালান না তা এক বিশাল রহস্য বলে মনে করছেন তারা।
এই কারখানাতে গেলে ৫ জন কর্মচারীর দেখা মেলে। মিষ্টি কি স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে তৈরি করা হচ্ছে? এমন প্রশ্নের কোন উত্তর জানা নেই তাদের তবে তারা স্বীকার করেন হাতে হ্যান্ডগ্লোভস এবং মাথায় ক্যাপ পরা দরকার। কর্মচারীদের গায়ে কোনো পোশাক নেই দুই হাতে মিষ্টি তৈরি করছে শরীর দিয়ে ঝরছে ঘাম।
দৈনিক মাতৃজগত সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কারখানাটি বিআইপি কলোনির পানি উন্নয়ন বোর্ডের সরকারি জমির উপর নির্মাণ করা হয়েছে। কারখানাটির একপাশে পাবলিক টয়লেট, অপর পাশে ড্রেনের উপর ময়লা আবর্জনার স্তুপ এরি মধ্যে মিষ্টি তৈরি করা হচ্ছে। কারখানার চারপাশে ও মধ্যে মশা মাছি পোকা মাকড় ভন ভন করছে। খোলা জায়গায় একপাশে দুধের তৈরি ছানা বিছিয়ে রাখা হয়েছে শুকানোর জন্য তার উপরে মশা মাছি বসে রয়েছে। টিনের পাত্রে মিষ্টি শিরা করে ভিজিয়ে রাখা হয়েছে শিরার সাথে ভেসে রয়েছে মাছি। কোন পাত্রেই ঢাকনা দেয়া নেই। টিনের চালা দিয়ে বৃষ্টির পানি ঢুকে মেঝেতে স্যাঁতস্যাঁতে পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। বাহির থেকে পাবলিক টয়লেট ও ড্রেনের ময়লার স্তূপের গন্ধ জীবাণু কারখানার ভিতরে প্রবেশ করছে।
এ বিষয় বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: শংকর প্রসাদ অধিকারী জানান,অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে উৎপাদিত খাদ্য মানবদেহে প্রবেশ করলে সবচেয়ে বেশি দৃশ্যমান ক্ষতিগুলো হয় আমাদের লিভার, কিডনি, হৃৎপি- ও অস্থিমজ্জার। ধীরে ধীরে এগুলো নষ্ট হয়ে যায়। বাচ্চা ও বৃদ্ধদের বেলায় নষ্ট হয় তাড়াতাড়ি, তরুণদের কিছুটা দেরিতে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল চন্দ্র শীল জানান, ভেজাল বিরোধী অভিযান সহ বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে, এছাড়াো বাজার মনিটরিং সহ নানাবিধ অসঙ্গতিতে প্রশাসনিক মোবাইল আদালত সবসময়ই কাজ করছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও তথ্য পেলে অবশ্যই সেই সমস্ত স্থানে অভিযান চালানো হবে।