শেখ মোঃ হুমায়ুন কবির, চিফ রিপোর্টার:
এ উৎসব শুধু আনন্দের নয়; বরং আল্লাহর প্রতি আনুগত্য ও সমাজের প্রতি দায়িত্বশীলতার প্রতীক। সত্যিকারের কোরবানি হলো মহান আল্লাহ্ তা’য়ালা’র প্রতি নিঃশর্ত আনুগত্য ও নিজের প্রিয় জিনিস ত্যাগ করার মানসিক প্রস্তুতি।
পবিত্র ঈদ-উল আযহা উপলক্ষে দেশ ও দেশের বাহিরের সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, জাতীয় দৈনিক মাতৃজগত পত্রিকা’র সম্পাদক ও বাংলাদেশ সেন্ট্রাল প্রেসক্লাব (কেন্দ্রীয় কমিটি’র) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি খান সেলিম রহমান।
শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি বলেন, আজ (৭’ই জুন ২০২৫) শনিবার। পবিত্র ঈদ-উল আযহা অর্থাৎ কোরবানি’র ঈদ। ঈদু-উল আযহার মূল কাহিনি ইব্রাহিম (আঃ)-এর ত্যাগের ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত। কোরআনের সুরা সাফফাতে (আয়াত: ১০০-১১১) বর্ণিত হয়েছে যে মহান আল্লাহ্ তা’য়ালা স্বপ্নে ইব্রাহিম (আঃ)-কে তাঁর প্রিয় পুত্র ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি করার নির্দেশ দেন।
ইব্রাহিম (আঃ) এ নির্দেশ পালনের জন্য প্রস্তুত হন এবং ইসমাইল (আঃ) নিজেও আল্লাহর ইচ্ছার প্রতি সম্পূর্ণ সমর্পণ প্রকাশ করেন। তাঁদের এ আনুগত্য ও ত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে আল্লাহ ইসমাইল (আঃ)-এর পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানির জন্য প্রেরণ করেন।
এ ঘটনা মুসলিমদের শিক্ষা দেয় যে সত্যিকারের কোরবানি হলো আল্লাহর প্রতি নিঃশর্ত আনুগত্য ও নিজের প্রিয় জিনিস ত্যাগ করার মানসিক প্রস্তুতি।
ইমাম তাবারি (মৃ. ৩১০ হি.) তাঁর তাফসিরে তাবারি গ্রন্থে ব্যাখ্যা করেন, কোরবানির আচার শুধু পশু জবাই নয়; বরং এটি নফসের লোভ, অহংকার ও ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণের প্রতীক। তিনি উল্লেখ করেন, ইব্রাহিম (আঃ)-এর ত্যাগ ছিল আধ্যাত্মিক জিহাদের একটি রূপ, যা মানুষকে আল্লাহর নৈকট্য লাভে সহায়তা করে।
খান সেলিম রহমান আরও বলেন, পবিত্র ঈদ-উল আযহার দিন আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে যে পশু জবাই করা হয়, তাকে ‘কোরবানি’ বলা হয়। কোরবানির শাব্দিক অর্থ ত্যাগ। ১০ জিলহজ ঈদু-উল আযহা পালন করা হয়।
কোরবানি সুন্নাতে ইব্রাহিম (আঃ), কোরবানি ইবাদত হিসাবে যদিও হযরত আদম (আঃ)-এর যুগ থেকে হয়ে আসছে, কিন্তু পরবর্তী সময়ে হযরত ইব্রাহিম (আঃ)-এর একটি ঐতিহাসিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশেষ বৈশিষ্ট্য নিয়ে শুরু হয়েছে। কোনো কোনো বর্ণনা মতে, এ স্বপ্ন তিনি পরপর তিন রাত দেখেন। স্বপ্নে তিনি একমাত্র প্রিয়পুত্র ইসমাইল (আঃ)-কে কোরবানি করতে আদেশপ্রাপ্ত হন। এ সময় ইসমাঈল (আঃ) এর বয়স ছিল (১৩ বছর)।
ঈদু-উল আযহার গুরুত্ব অপরিসীম। পবিত্র কোরআন-হাদিসে এ ব্যাপারে যথেষ্ট তাগিদ দেওয়া হয়েছে। মহান আল্লাহ্ তা’য়ালা বলেন, কোরবানির পশুগুলোকে তোমাদের জন্য আল্লাহর নিদর্শন গুলোর অন্তর্ভুক্ত করেছি। এর মধ্যে তোমাদের জন্য কল্যাণ রয়েছে। ইসলামের এই ‘মহান নিদর্শন’ যা ‘সুন্নাতে ইব্রাহিম হিসাবে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি নিজে মদিনায় প্রতিবছর আদায় করেছেন এবং সাহাবিরাও নিয়মিত ভাবে কোরবানি করেছেন।
কোরবানি একটি প্রতীকী ব্যাপার। মহান আল্লাহ্ তা’য়ালা’র জন্য আত্মত্যাগের একটি দৃষ্টান্ত মাত্র। সারা বছরই আল্লাহর নৈকট্য লাভের প্রত্যাশায় নিজ সম্পদ অন্য মানুষের কল্যাণে ত্যাগ করতে হবে। নিজের পশুত্ব, নিজের ক্ষুদ্রতা, নীচতা, স্বার্থপরতা, হীনতা, দীনতা, আমিত্ব ও অহংকার ত্যাগের মনোভাব যদি গড়ে ওঠে, তবে বুঝতে হবে, পবিত্র ঈদ-উল আযহা অর্থাৎ কোরবানির ঈদ সার্থক হয়েছে, কোরবানি সার্থক হয়েছে। নইলে এটি নামমাত্র একটি ভোগবাদী অনুষ্ঠানই থেকে যাবে চিরকাল।
খান সেলিম রহমান আরও বলেন, আসুন আমরা সকলেই। নিজের পশুত্ব, নিজের ক্ষুদ্রতা, নীচতা, স্বার্থপরতা, হীনতা, দীনতা, আমিত্ব ও অহংকার ত্যাগের মনোভাব গড়ে তুলি। পাশাপাশি জবাইকৃত পশুর গোশত আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের মধ্যে বিলিয়ে দিয়ে সমাজে সাম্যের বাণী প্রতিষ্ঠা করি। ঈদের দিন নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানী দিয়ে পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখি।
অগণিত পাঠক, লেখক, বিজ্ঞাপনদাতা, এজেন্ট, হকার। বাংলাদেশ সেন্ট্রাল প্রেসক্লাব (কেন্দ্রীয় কমিটি) সহ সকল শুভানুধ্যায়ী’কে জানাই পবিত্র ঈদুল আযহার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ঈদ মোবারক, ঈদ মোবারক, ঈদ মোবারক।
খান সেলিম রহমান
সম্পাদক
জাতীয় দৈনিক মাতৃজগত পত্রিকা।
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি
বাংলাদেশ সেন্ট্রাল প্রেসক্লাব (কেন্দ্রীয় কমিটি)।