নিজস্ব প্রতিবেদক: বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ, অন্যথায় ফেসবুকে ছেড়ে দিবে বলে ১০ লাখ টাকা দাবি ঘটনায় দৈনিক সমকালের শরীয়তপুর প্রতিনিধি ও দৈনিক রুদ্রবার্তা সম্পাদক শহীদুল ইসলাম পাইলটের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় ভিকটিমের মেডিকেল সম্পন্ন করা হয়েছে। সোমবার ৭মার্চ দুপুরে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালে বংশাল থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক পাভেল মিয়া ভিকটিমের মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন করান।
জানাগেছে, পুরাতন ঢাকার এক নারী সাংবাদিকের সাথে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সম্পর্ক গড়ে বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে কৌশলে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। পরে দীর্ঘদিন ধরে তাকে বিয়ের স্বীকৃতির কথা বলে ঘুরাতে থাকেন। বিষয়টি সাংবাদিক নেতাদের কাছে জানিয়ে কোন সুরাহা না পেয়ে সম্প্রতি ঐ নারী সাংবাদিক ফেসবুকে আত্মহত্যার ঘোষণা দেন। তাৎক্ষনিক বংশাল ও লালবাগ থানা পুলিশ তাকে আইনী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বলেন। পরদিন ভিকটিম নিজে বাদী হয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি বংশাল থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহন করেন, যার নং ৬৩ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারা।
জানাগেছে, সম্প্রতি দুজনের একান্তমূহুর্তের ভিডিও চিত্রের স্কীনশর্ট, অনৈতিক কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। দুই পুত্র সন্তানের মাতা ওই বিধবা নারী (৪০) সাংবাদিকের স্বামী ৩ বছর আগে মারা যান। এরপর থেকেই নানা ছুঁতোয় তার কাছে ফোনে, ম্যাসেঞ্জারে কল দিয়ে কিংবা সরাসরি প্রথম স্ত্রীর সাথে পারিবারিক নানা সমস্যার কথা বলে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করে আসছিলেন পাইলট। প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় নানা ছলছুতোয় তাকে বাসায় গিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং গোপনে ধারণকৃত ভিডিও ভাইরাল করা হবে বলে কৌশলে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। পাইলট বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ছিলেন। পাইলটের বিরুদ্ধে নারীঘটিত অভিযোগের কারণে চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারী সংগঠন থেকে বহিস্কার করা হয়।
একটি সূত্র জানিয়েছেন, কয়েক বছর আগে পাইলট শরীয়তপুর এলাকায় এক নারীর ঘরে অনৈতিক মেলামেশাকালে এলাকাবাসি ধরে পুলিশে দেয়। এ ঘটনায় দীর্ঘদিন হাজতবাস করেন। পরে মামলাটি স্থানীয় এক রাজনীতিবিদের মধ্যস্থতায় বিপুল অঙ্কের টাকার বিনিময়ে সাজামুক্ত হন।
এদিকে পত্রিকার এজেন্ট ব্যবসায়ী পাইলটের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার খবর শরীয়তপুরের কোন সাংবাদিক প্রকাশ করে তবে তার পত্রিকা শরীয়তপুরে ঢুকতে দেবেনা মর্মেও হুশিয়ারী দেয়া হচ্ছে বলে স্থানীয় কতিপয় সাংবাদিক জানিয়েছেন।
সোমবার দুপুরে ভিকটিম নারী সাংবাদিক স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মেডিকেল শেষে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, ওরা ধর্ষণ ঘটনা ধামাচাপা এবং আলামত নষ্ট করতেই আমার বিরুদ্ধে খাগড়াছড়ির রামগড়ে একটি অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিয়ে ডেকে নিয়ে চুরির মিথ্যা নাটক সাজিয়ে মামলা দায়ের করে পাইলটের সহযোগি মিতু গং। প্রায় ১৫ দিন আত্মগোপনে থেকে ৬ মার্চ উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে মেডিকেল করাতে দেরী হয়। পাইলটের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা তুলে নিতে কৌশলে বিভিন্নজন দ্বারা ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।