রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৩:৪৬ অপরাহ্ন
ঘোষনা
সহস্রাধিক রোজাদারকে নিয়ে ইফতার করলেন সাবেক যুবদল নেতা হাবিবুর রহমান রাব্বি মহানগর উত্তর বিএনপি’র পক্ষ থেকে পল্লবী ৩,নং ওয়ার্ডে ইফতার বিতরণ। সংস্কারের নামে নির্বাচন পেছানোর সুযোগ নেই- আমিনুল হক বাংলাদেশ সেন্ট্রাল প্রেসক্লাব ও মাতৃজগত পরিবারের পক্ষ থেকে ইফতার সামগ্রী বিতরণ গোদাগাড়ীতে ৫ কেজি হেরোইন জব্দ, দুই নারী গ্রেপ্তার মহানগর উত্তর বিএনপি’র পক্ষ থেকে ক্যান্টনমেন্ট থানার ইফতার বিতরণ ঘুসের ৩৭ লাখ টাকাসহ গভীর রাতে গাইবান্ধার নির্বাহী এলজিইডির প্রকৌশলী আটক শিবগঞ্জে  বাক প্রতিবন্ধীকে  ধর্ষণের অভিযোগে আটক ৩ সন্ত্রাস নৈরাজ্যের প্রতিবাদ ও মাগুরায় শিশু আছিয়ার ধর্ষণকারীর বিচারের দাবিতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে শ্রমিকদলের বিক্ষোভ ঠাকুরগাঁওয়ে ২ ইটভাটায় জরিমানা এবং ৭ দিনের মধ্যে ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ

প্রধান মন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘরে স্বপ্নের জাল বুনছেন একসময়ের গৃহহীন মানুষেরা

মোঃআশরাফুল ইসলাম রাজু
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৫ এপ্রিল, ২০২২
  • ২৮২ বার পঠিত

নীলফামারি জেলা ব্যুরো প্রধানঃ
০৫ এপ্রিল ২০২২খ্রিঃ
বাবা হামার গরিব মাইনষের জীবন কচুয়ার ঢোপের মোতন ভাসি বেড়ায়, হামার থাকিবার কোন জাগা নাই।হামার দ্যাশের সরকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হামার ঘরক পাকা ঘর দেওছে আবার জমিও দেওছে হামার নামে আল্লাহ ঝনে হামার মাও কোনাক ভালো থোয়,হামার টিএনও(ইউএনও) স্যার খুব ভালো মানুষ দুই চাইর দিন পর পর আইসেছে আর মিস্ত্রির ঘরক ভালো করি ঘরের কাম করির কওছে ওমরায় আছে জইন্নে হামরা জলঢাকার মানুষ আইজ সুখোত আছি।

নীলফামারি জেলাধীন জলঢাকা উপজেলার শিমুলবাড়ি হাজিপাড়া আশ্রায়ন প্রকল্পের বাসিন্দা একসময়ের গৃহহীন নিম্নআয়ের মানুষের মধ্য থেকে এই জোসনা বেগম(৬০)নামের মহিলাটির মুখ থেকে বেরিয়ে আসা কথাগুলো যেন বার বার মনে করিয়ে দিচ্ছে কতটা খুশিতে দিনক্ষণ পার করছে আজকে এই পাকা ঘর পাওয়ার কথা শুনে আমেনার মত হাজারো দুস্তশ্রেনির মানুষেরা।জীবনের টানাপোড়ানোর দিন ভূলে আজ তারা নতুন করে জীবনের স্বপ্ন বুনছেন একসময়ের এসকল গৃহহীন নিম্নআয়ের মানুষগুলো।মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে পেয়েছেন ঘর। জীবন সায়াহ্নে এসে আবার নতুন করে সংসারে মেতেছেন হাজারো দম্পতি। নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন সুন্দর জীবনের।

মোছাঃজাকিয়া বেগম (৪০)এর সঙ্গে কথা হচ্ছিলো তার নতুন ঘরের বারান্দায়। দিনের বেশিরভাগ সময় সেখানে বসেই কাটান তিনি। মাঝে-মধ্যে আঙিনার খোলা জায়গায় পায়চারী করেন, অপলক তাকিয়ে থাকেন ঘরের দিকে। তার কথায়, ‘সবকিছু এখনও স্বপ্ন বলে মনে হয়’। নিজের এমন ঘর হবে- কিছুদিন আগেও কল্পনা করেননি তিনি।

শুধু জাকিয়াই নন, উপহারের ঘর পাওয়া নিম্নআয়ের সবারই স্বপ্ন ও জীবনযাপনে পরিবর্তন এসেছে। হাঠৎ এমন পরিবর্তনে একদিকে যেমন উচ্ছ্বসিত তারা অন্যদিকে নতুন করে বাঁচার তাগিদ তাদের মনে। শুধু নিজের ঘর নয়, পুরো প্রকল্প এলাকাই সাজছে তাদের স্বপ্নময়ী বাস্তবতার আশে। কেউ কেউতো ঘর বুঝে পাওয়ার আগেই চলে এসেছেন নির্মাণাধীন ঘরের তদারকিতে। তাদেরই একজন বৃদ্ধ জামিয়ার রহমান তিনি জানান, ঘর পাওয়ার আগে তিনি কুঁড়েঘরে বাস করতেন। সেই জায়গা নতুন ঘর থেকে ক্ষানিকটা দূরে। ঘর বুঝে পাওয়ার আগে সেখান থেকেই প্রতিদিন ঘরের নির্মাণকাজ দেখভাল করার জন্য হেঁটে চলে আসতেন তিনি। ঘরের দেওয়াল আর মেঝে মজবুত করতে নিজের হাতেই ছিটিয়েছেন পানিও।

ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালে আশ্রয়ণ নামে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়, যা প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে আশ্রায়ন প্রকল্প ২ এর আওতায় তৃতীয় ধাপে দেশের ৬৫ হাজার ৪৭৪টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে ২ লাখ ৫৯ হাজার টাকা মূল্যের আধা-পাকা ঘর উপহার হিসেবে দিতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আসন্ন ঈদের পর কিংবা আগে প্রধানমন্ত্রী গৃহহীন মানুষের হাতে এই ঘর তুলে দিবেন। এর আগে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ঘর নির্মাণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ৩২৯টি। এতে ২ শতক জমির মালিকানাসহ সেমিপাকা দুই রুমের ঘর করে দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে রান্নাঘর, টয়লেট, সুপেয় পানি, বিদ্যুৎ সংযোগ, আঙ্গিনায় হাস-মুরগি পালন ও শাক-সবজি চাষেরও জায়গা রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও গৃহহীনদের এই খুশি দেখে আবেগে আপ্লুত হয়েছেন। সংসদে এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি নিজেই আবেগতাড়িত হয়ে বলেন, গৃহহীনদের ঘর দেওয়া আমার জীবনে সব থেকে বড় আনন্দের দিন। একজন মানুষ, যার কিছু ছিল না, তাকে একটা ঘর দিয়ে তার মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছি। এর থেকে বড় আনন্দের কিছু হতে পারে না। সেদিন আনন্দে চোখের পানি রাখতে পারিনি। আমি অঝোরে কেঁদেছিলাম। কারণ এটাই তো আমার বাবার স্বপ্ন ছিল।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, আগের দুই পর্যায়ের কাজের অভিজ্ঞতায় মুজিববর্ষের উপহারের এসব ঘরকে অধিকতর টেকসই করতে নকশায় আনা হয়েছে পরিবর্তন। জমি নির্বাচনের ক্ষেত্রেও নেওয়া হচ্ছে বিশেষ সতর্কতা। নতুন একক গৃহ নির্মাণের ব্যয়বরাদ্দও বেড়েছে। তৃতীয় পর্যায়ে প্রতিটি ঘরের নির্মাণ খরচ দুই লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগের দুই পর্যায়ে প্রতিটি ঘরের জন্য বরাদ্দ ছিল প্রথম পর্যায়ে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা।

দায়িত্বরত জলঢাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মাহাবুব হাসান বলেন, আমার জন্য এই কাজটি একটি মহৎ কর্মসাধনের বিষয়। এটি খুব চমৎকারভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে গর্বের একটি প্রকল্প। এর মাধ্যমে একটি মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন হচ্ছে। এর মাধ্যমে টেকসই লক্ষমাত্রার আটটি লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।আমি প্রতিনিয়ত এই গৃহনির্মাণ কাজের তদারকি করনের মাধ্যমে মজবুত ভাবে এই ঘরগুলোর কাজ শেষ করে এসকল গৃহহীন মানুষদের মুখে সূর্য ফোঁটানো হাঁসির পানে চেয়ে রয়েছি বলে জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই পত্রিকার সকল সংবাদ, ছবি ও ভিডিও স্বত্ত্ব সংরক্ষিত © ২০২১ দৈনিক মাতৃজগত    
Developed By Bangla Webs
banglawebs999991