মোঃ মিন্টু শেখ ক্রাইম রিপোর্টারঃএকাধিক বিয়ে করে একেক সময় একেক জায়গায় অবস্থান করে সাত বছর পালিয়ে থেকেও শেষ রক্ষা হলো না ফরিদপুরের বিলমামুদপুরে কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া সবুজ মিয়ার। অবশেষে র্যাবের জালে ধরা পড়লেন।
কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া সবুজ মিয়া র্যাবের জালে ধরা পড়েছে।
কিশোরী নাসরিনকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় সাত বছর পালিয়ে বেড়ানোর পর শনিবার (১৩ জুলাই) রাতে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল ঢাকার সূত্রাপুর থানাধীন নারিন্দা কাঁচা বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে।
রোববার (১৪ জুলাই) দুপুরে ফরিদপুর র্যাব ক্যাম্পে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার কে এম শাইখ আকতার।
তিনি জানান, ২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর দুপুরে ফরিদপুর সদর উপজেলার বিলমামুদপুর এলাকার কলাবাগান থেকে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। ওই সময় মৃত নারীর পরিচয় পাওয়া যায়নি। পরে পুলিশ পরিচয় শনাক্ত করে। ওই নারীর নাম নাসরিন এবং তার বাড়ি চট্টগ্রামে।
এরই মধ্যে আরজু মল্লিক নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি জানান, ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী তার বন্ধু সবুজ মিয়া। সে নাসরিনকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ফরিদপুরে নিয়ে আসে। পরে নাসরিনকে বিলমামুদপুরের একটি বাগানে নিয়ে আরজু মল্লিক ও সবুজ মিয়া তাকে ধর্ষণ করে এবং শ্বাসরোধ করে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
কে এম শাইখ আকতার জানান, উক্ত ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ফরিদপুর জেলার কোতোয়ালি থানায় একটি সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যা মামলা করেন। পরবর্তীতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে আরজু মল্লিক ও সবুজ মিয়াকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
গত ২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ধর্ষণ করে হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত সবুজ মিয়া ও আরজু মল্লিককে মৃত্যুণ্ডাদেশ এবং প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আসামি সবুজ মিয়া পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
তিনি আরও জানান, শনিবার রাতে র্যাবের একটি আভিযানিক দল ঢাকার সূত্রাপুর থানাধীন নারিন্দা কাঁচা বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত পলাতক আসামি সবুজকে গ্রেফতার করে।
সবুজ ফরিদপুর সদর উপজেলার মামুদপুর এলাকার বাবুল মিয়ার ছেলে। কোতোয়ালি থানায় সবুজকে হস্তান্তর করা হয়েছে। সবুজ দীর্ঘদিন যাবত মাদারীপুর, উজিরপুর, নওগাঁ, কিশোরগঞ্জ ও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিজের নাম পরিচয় গোপন করে বিভিন্ন ছদ্মবেশ ধারণ করে বসবাস করেছিল। দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিক বিয়ে করেছে এবং নিজের পরিচয় গোপন রেখে সে একেক সময় একেক জায়গায় অবস্থান করতো। সর্বশেষ রাজধানী ঢাকার সূত্রাপুর থানাধীন নারিন্দা এলাকায় গাড়ির মিস্ত্রি পেশায় নিযুক্ত ছিল।