মোঃ আরিফ হোসাইন স্টাফ রিপোর্টঃ
পটুয়াখালীর বাউফলে সূর্য্যমনি ইউনিয়নে ২০০৪ সালে এমপিওভুক্ত হলেও দীর্ঘ দিন ধরে শিক্ষাকার্যক্রম ছাড়াই চলছে ‘পূর্ব ইন্দ্রকুল ফেরেজা কামাল’ বালিকা দাখিল মাদ্রাসা।
নেই কোন শিক্ষার্থী, নেই কোন শ্রেণীকার্যক্রম অথচ ২০০৪ সাল থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে প্রতি মাসে ২লক্ষ ৮হাজার টাকা সরকারি বেতন। এ যেন এক ধরনের সরকারের সাথে প্রতারনা। অথচ দেখার কেউ নেই।
গত ২৩ মে সকাল ১০.৩০ মিনিটের দিকে ওই মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে গেলে দেখা যায় মাদ্রাসার বারান্দা ও শ্রেণি কক্ষে ছাগল ঘুমাচ্ছে। প্রথমে পাওয়া যায়নি কোন শিক্ষক -কর্মচারি। পরে সাংবাদিকদের খবর পেয়ে ওই মাদ্রাসার সভাপতি আবদুল মোতালেব মিয়া আসেন এবং একজন শিক্ষক আসেন।
কেন কোন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক উপস্থিত নেই এমন প্রশ্নের জবাবে সভাপতি বলেন, সুপার অফিসিয়াল কাজে গেছেন। অন্যান্য শিক্ষক কোথায় জানতে চাইলে তার সদুত্তর দিতে পারেননি।
ওই মাদ্রাসার সভাপতি আবদুল মোতালেব মিয়া বলেন, মাদ্রাসাটি ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ২০০৪ সালে এমপিওভূক্ত হয়। ২০০৪ সাল থেকেই শিক্ষক -কর্মচারীরা বেতন পেয়ে আসছে এবং ২০০৬ সালে মিনিষ্ট্রিরি অডিট ও হয়। কত টাকা বেতন পান শিক্ষক -কর্মচারীরা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি (সভাপতি) বলেন এই মাদ্রাসার ১৩জন স্টাফ দুই লাখ আট হাজার টাকা বেতন পান।
ওই মাদ্রাসার জুনিয়র মৌলভী আবদুল জলিলের কাছে শিক্ষক হাজিরা খাতা শিক্ষার্থীদের হাজিরা খাতা দেখতে চাইলে তিনি বলেন, সুপার তার বাসায় রাখছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কতিপয় ব্যক্তি বলেন, এই মাদ্রাসায় কোন শিক্ষার্থীদের আনাগোনা দেখা যায় না শুধু একটা পতাকা উড়ানো থাকে মাঝে মধ্যে। শিক্ষকরা তাদের যারযার বাড়ির কাজকর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। কোনদিন কোনো প্রত্যাহিক সমাবেশ হয় না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ব্লাকবোর্ড গুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় পরে আছে। শিক্ষকদের জন্য কোন কক্ষ নেই, নেই কোন অফিস। একটি অফিস দেখানো হয়েছে তাতে দেখা গেছে একটি নোংরা টেবিল ও একটি চেয়ার, চেয়ার ও টেবিলে দেখা গেছে কবুতরের বিষ্ঠা।
শ্রেণি কক্ষে বিভিন্ন ধরনের ঘাস জন্মান। বোঝা’ই যায় শ্রেণি কক্ষে কখনও কোন শিক্ষার্থীর পা’ই’ পড়েনি।
প্রধান শিক্ষকের তথ্যমতে, খাতা কলমে ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ২৫০ জন। তার মধ্যে কাগজে কলমে প্রতিদিন উপস্থিতি গড়ে ২০ থেকে ৩০ জন থাকলেও বাস্তবতায় ১ জনও নেই।
বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক (সুপার) মাহফুজা বেগম সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আগে অনেক ছাত্রী ছিল। ২০০৯ সালের পর শিক্ষকদের মাঝে ঝামেল হওয়ায় আশপাশের এলাকার শিক্ষার্থী একেবারে নেই। দুরের কিছু শিক্ষার্থী ভর্তি করে এখান থেকে দাখিল পরিক্ষায় অংশগ্রহন করিয়ে বিদ্যালয় টিকিয়ে রাখেছেন।
এ ব্যপারে বাউফল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষাকর্মকর্তা মো. নাজমুল হুসাইন বলেন, শিক্ষার্থী উপস্থিত না থাকলে কোন প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত থাকতে পারে না। আমরা তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ পাঠাবো।