রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:২৮ অপরাহ্ন
ঘোষনা
জিয়াউর রহমানের ৮৯ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শীত বস্ত্র বিতরণ ,শহীদ বিআরটিএ ও পরিবহন মালিক শ্রমিক ফেডারেশনের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও জনসচেতনতা কার্যক্রম  দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তির কামনায় অসহায় মানুষের মাঝে শীত বস্ত্র উপহার  মিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ গিয়াস উদ্দিন মামলার ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৪ জন চাঁদাবাজকে গ্রেপ্তার করেছে।   জুলাই ঘোষণাপত্র সবার মতামতের ভিত্তিতে করতে চাই উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সৌজন্য সাক্ষাত, বেলকুচি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জাকেরিয়া হোসেন। বাসুদেবপুর ইউনিয়ন বিএনপি কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত  রাজশাহীতে (পুনাক) পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ গোদাগাড়ীতে বিএনপির কর্মী সভা অনুষ্ঠিত ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা থেকে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে উচ্চ আদালত বেকসুর খালাস দেওয়ায় নেএকোণায় আনন্দ মিছিল।

বাকেরগঞ্জে শ্রীমন্ত নদী অবৈধ দখলের মহাউৎসব।

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ১৮৪ বার পঠিত

জহিরুল হক জহির স্টাফ রিপোর্টার:- বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলা শহরের প্রান কেন্দ্র থেকে বয়ে যাওয়া এক সময়ের খরস্রোত শ্রীমন্ত নদীর এখন অস্তিত্ব পাওয়া কঠিন। এলাকাবাসী এটিকে মরা খালই ধরে নিয়েছেন। বিলীন হওয়া শ্রীমন্তর দুই পাশে অবৈধ স্থাপনা আর বাসাবাড়ির সুয়ারেজ লাইন মিলে এটি রীতিমতো একটি নালায় পরিণত হয়েছে। সময়ের বিবর্তনে নদীটি এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। সেইসঙ্গে চলছে দখলের মহোৎসব। নদীটির পাড় দখল হয়ে গেছে অনেক আগেই। এখন চলছে মাঝখানের অংশ দখলের প্রতিযোগিতা। নদীর মাঝখানে পৌর কর্তৃপক্ষ সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। কোন প্রকার অনুমোদন ছাড়া অবৈধ এই সেতু অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ কাজ শুরু করায় শ্রীমন্ত নদীপথে নৌ-যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। দেশের নদনদী সংরক্ষনকারী প্রতিষ্ঠান পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নদীর তালিকায় এখনও বাকেরগঞ্জের ‘শ্রীমন্ত নদী’ নামটি রয়েছে। দুপাশের তীর দখল ও দুষনে ‘শ্রীমন্ত’ নদীর ‘শ্রী’ হারিয়েছে বহু বছর আগে। এখন সেটি বিলুপ্তির পথে ধাবিত হয়ে অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। পৌর শহরের মধ্যে শ্রীমন্ত নদীর ৩ কিলোমিটারের পুরোটাই দখলদারদের নিয়ন্ত্রনে। জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রভাবশালী সবই আছেন দখলদারের তালিকায়। শহরের মধ্যে দখলের চিত্রই বলে দেয়- একটি খরস্রোতা নদী কিভাবে হত্যা করা যায়। মাত্র দুই দশক সময়ের মধ্যে শ্রীমন্ত নদীর এমন মৃত্যু হয়েছে বলে জানিযেছেন স্থানীয়রা।

 

অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাকেরগঞ্জ বাস স্ট্যান্ড ব্রীজ সংলগ্ন শ্রীমন্ত নদীতে হকার্স মার্কেট নির্মান করেছে বাকেরগঞ্জ পৌর কর্তৃপক্ষ। ওই মার্কেটের চা দোকানী পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম জানান, নির্মিত এই হকার্স মার্কেটে ৪১ টি দোকান আছে। ছোট দোকান গুলো থেকে ৮৩ হাজার টাকা অগ্রিম প্রদান করে দোকান নিয়েছেন যাহার মাসিক ভাড়া ১৫০০ টাকা। ওই মার্কেটের অপর এক চা ব্যবসায়ী সমির জানান, আমি এই মার্কেটে ২টি দোকান নিয়েছি ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা অগ্রিম দিয়ে। প্রতি মাসে ভাড়া দেই ২ দোদকানে ৮ হাজার টাকা। এভাবেই সব দোকানদার অগ্রিম টাকা দিয়ে দোকান ভাড়া নিয়েছে।

 

২৫ সেপ্টেম্বর সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শহরের পূর্ব পাশ দিয়ে প্রবাহিত তুলাতলী নদী শ্রীমন্ত নদীর উৎস মুখ। শহরে মাঝ দিয়ে পশ্চিম দিকে চলে গেছে নদীটি। শ্রীমন্ত নদী প্রায় ২২ কিলোমিটার লম্বা। তুলাতলী নদী থেকে শুরু হয়ে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত অংশটি মাঝ বরাবরে এসে দুইভাগে বিভক্ত হয়েছে। মুলধারাটি কানকি নামক স্থানে শেখ হাসিনা সেনানিবাসের পাশ দিয়ে পায়রা নদীতে মিশেছে। অপর অংশটি বাকেরগঞ্জের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ন বন্দর কালিগঞ্জ, নেয়ামতি হয়ে মিশেষে বিষখালী নদীর সঙ্গে। পৌর শহরের জনগোষ্ঠীর পানির চাহিদা মেটাতো শ্রীমন্ত নদী। স্থানীয় বাসিন্দা কামাল হোসেন হাওলাদার জানান, শ্রীমন্ত নদীর দুইতীরের বাসিন্দাদের স্যুয়ারেজ সংযোগ দেয়া হয়েছে নদীতে। এতে নদীর পানিও ব্যবহার উপযোগীতা হারিয়েছে।

 

বাকেরগঞ্জ পৌর শহরের একাধিকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ম্যাপ অনুযায়ী শ্রীমন্ত নদীর প্রশস্তততা স্থানভেদে সর্বনিম্ন ১৫০ থেকে ৬০০ ফুট পর্যন্ত। দুই যুগ আগেও এই প্রশস্ততা বহাল ছিল। তখন বাতাসে ঢেউয়ের শব্দ ভেসে বেড়াতো। বাহারী পানসি, লঞ্চ, ট্রলার, নৌকা ছুটতো নদীর বুক চীরে। এ অঞ্চলে বড় বন্দর ও হাট-বাজার নলছিটির মোল্লারহাট, মীর্জাগঞ্জের সুবিদখালী, চান্দুখালী এবং বেতাগী ও পাথরঘাটা উপজেলার পণ্যবাহি নৌযানের প্রধান রুট ছিল শ্রীমন্ত নদী। এসব এখন শুধুই স্মৃতি। দখলের কবলে পড়ে শ্রীমন্ত নদীর উত্তাল ঢেউ আর স্রোত হারিয়ে মরা খালে পরিনত হয়েছে। এখন আর নদী আগের অবস্থায় উদ্ধার নয়, দখলদারের কবল থেকে বর্তমান খালটি বাঁচিয়ে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন বাকেরগঞ্জবাসী।

 

অনুসন্ধানে জানা যায়, পৌর শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদীর দুইপাশে ১, ২, ৩ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের জনপদ। ৫ নম্বর ওয়ার্ডে তুলাতলী নদীতে উৎস্য মুখে থেকেই দখল শুরু। এই ওয়ার্ডের মরহুম আবদুর রশিদ পৌর কাউন্সিলর থাকাকালীন শ্রীমন্ত নদীর উৎসমুখ দখল করে ভবন নির্মান করেছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এরপরে সামনের দিকে যতই অগ্রসর হয়েছে দখলে সরু হয়ে মৃত খালে পরিনত হয়েছে। পৌর শহরে ৩ কিলোটিমার শ্রীমন্ত নদীর পুরোটার চিত্র একই।

 

বাকেরগঞ্জ বাসষ্টান্ড সংলগ্ন সেতুর ওপর দাড়িয়ে দেখা গেছে, নদীর দুইতীর ভরাট করে গড়ে উঠেছে ছোট-বড় পাকা-আধাপাকা অসংখ্য ভবন। সেতুর পশ্চিমে আল আমিন মসজিদ থেকে শুরু হয়ে পুর্বে থানা ভবন পর্যন্ত ১ কিলেমিটারে আফসার মার্কেট, গাজী মঞ্জিলসহ সব পাকা-আধাপাকা নির্মিত হয়েছে শ্রীমন্ত নদী দখল করে।

 

স্থানিয়রা জানান, শ্রীমন্ত নদী দখলদারের দলে আছেন স্থানীয় শীর্ষ জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে প্রভাবশালী অনেকে। ভাঙ্গন ঠেকানোর অজুহাত তুলে ব্লক ফেলে সৌন্দর্যবর্ধনসহ নানা ফন্দিতে নদী দখল করা হয়েছে।

 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরর বাকেরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আবুল খায়ের সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, শ্রীমন্ত নদী তাদের আওতাধীন নয়। তারপরও এটির পানির প্রবাহ ফিরিয়ে আনার জন্য তাদের একটি প্রকল্পর আওতায় প্রায় ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে দুইমাস আগে ৪ দশমিক ৪৮ মিটার খনন করেছেন। এতে পৌর শহরের অংশে পানির প্রবাহ ফিরে এসেছে।

 

Hide quoted text

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী মো: রাকিব হোসেন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের শ্রীমন্ত নদীতে পৌর কর্তৃপক্ষ মার্কেট ও সেতু নির্মাণ করেছে বিষয়টি আমার জানা ছিল না। সরেজমিনে পরিদর্শন করে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।

 

বাকেরগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা সজল চন্দ্র শীল জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সরকারি জমির উপর পৌর কর্তৃপক্ষ মার্কেট ও সেতু নির্মাণ করতে পারে না। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমোদন ছাড়া অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

এ বিষয়ে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তাকে বারবার ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

 

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বাকেরগঞ্জে গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ বিবেচনায় নিয়ে শ্রীমন্ত নদীকে কেন্দ্র করে এর পাড়ে গড়ে ওঠে উপজেলার অনেক বাজার। এখন বর্ষাকালে বিভিন্ন এলাকা থেকে হাট বাজারে এই নদী দিয়ে মালাম

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এ জাতীয় আরো খবর..
এই পত্রিকার সকল সংবাদ, ছবি ও ভিডিও স্বত্ত্ব সংরক্ষিত © ২০২১ দৈনিক মাতৃজগত    
কারিগরি সহযোগিতায়ঃ Bangla Webs
banglawebs999991