বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৩ অপরাহ্ন

বিশ্ব ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগের দিনেই মুখরিত হয়ে উঠেছে টঙ্গীর তুরাগ তীর।

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ১৫১ বার পঠিত

আলমগীর হোসেন সাগর গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি : ইজতেমা শুরুর আগেই মুখরিত তুরাগ তীর শুক্রবার ফজরের নামাজের পর বয়ানের মধ্য দিয়ে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই বিশ্ব সম্মিলনের কার্যক্রম শুরু হবে।

শীত উপক্ষো করে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মুসলমানরা ইজতেমা মাঠে বানানো খিত্তায়-খিত্তায় জড়ো হচ্ছেন; এসেছেন বিদেশিরাও।

বৃহস্পতিবার ভোরে ফজরের পর তাদের জন্য হয়েছে প্রাথমিক আম বয়ান। শুক্রবার ফজরের নামাজের পর বয়ানের মধ্য দিয়ে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই বিশ্ব সম্মিলনের কার্যক্রম শুরু হবে।

ইজতেমা শুরুর আগেই মুখরিত তুরাগ তীর
ইজতেমার আয়োজক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী আব্দুন নূর জানান, বৃহস্পতিবার ভোরে প্রাথমিক আম বয়ান করেছেন ভারত থেকে আসা মাওলানা আবদুর রহমান, বয়ানের বাংলা তরজমা করেছেন মাওলানা আব্দুল মতিন।

রোববার আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত চলবে তাবলীগের ছয় উসুলের এ বয়ান। বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের আলেমরা মূল বয়ান করবেন। মূল বয়ান বাংলাসহ বিভিন্ন ভাষাভাষীদের জন্য তাৎক্ষণিক তরজমা করে শোনানো হবে।

আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে রোববার ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষে ২০ থেকে ২২ জানুয়ারি হবে দ্বিতীয় পর্ব।

প্রায় এক বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিশাল মাঠকে বাঁশের খুঁটির উপর চটের ছাউনি দিয়ে ইজতেমার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। বয়ান মঞ্চ করা হয়েছে ইজতেমা মাঠের পশ্চিম-উত্তরের মাঝ বরাবর।

বয়ান শোনার জন্য লাগানো হয়েছে বিশেষ ছাতা মাইক। বয়ান ও দোয়া মঞ্চ ছাড়া নামাজের মিম্বরও তৈরি করা হয়েছে আলাদাভাবে।

আয়োজক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী মো. মাহফুজ জানান, মহামারীর কারণে গত দুবছর বিশ্ব ইজতেমা না হওয়ায় এবার আগেভাগেই মানুষ আসছে। শুক্রবার মূল পর্ব শুরুর কথা থাকলেও তাবলীগ জামাতের অনুসারী এবং ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা বুধবার থেকেই দলে দলে ইজতেমা ময়দানে এসে অবস্থান নিচ্ছেন। লাখো মানুষের উপস্থিতিতে ইজতেমা ময়দান প্রায় পূর্ণ হয়ে গেছে।

ইজতেমা শুরুর আগেই মুখরিত তুরাগ তীর
বাস, ট্রাক, ট্রেনের চড়ে, অনেকে পায়ে হেঁটে গাজীপুরের টঙ্গীতে আসছেন ইজতেমায় যোগ দিতে। রোববার আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত এ আগমন ধারা অব্যাহত থাকবে।

শুক্রবার দুপুরে এই ইজতেমা মাঠেই হবে জুমার নামাজে দেশের সর্ববৃহৎ জামাত। কাকরাইল মসজিদের মাওলানা জোবায়ের ইমামতিতে কয়েক লাখ মানুষ এই জামাতে নামাজ পড়বেন বলে ধারণা দেন মাহফুজ।

রাজধানী ঢাকা ও গাজীপুরের বিভিন্ন উপজেলা এবং আশপাশের জেলা থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ সেই জামাতে যোগ দিতে আসবেন। ইজতেমা ময়দান ছাপিয়ে কামারপাড়া, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কসহ আশেপাশের অলি-গলিতেও কাতারবদ্ধ হয় জুমার নামাজে অংশ নিতে দেখা যাবে অনেককে।

ইজতেমার আয়োজক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী আব্দুন নূর জানান, পুরো মাঠকে জেলাওয়ারী আলাদা ৯১ ভাগে (খিত্তায়) ভাগ করা হয়েছে। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মানুষ থাকবেন সেসব খিত্তায়।

ইজতেমা শুরুর আগেই মুখরিত তুরাগ তীর
বিদেশি মেহমান যারা আসছেন, তাদের বিমানবন্দরে স্বাগত জানাচ্ছেন আয়োজকরা। তাদের সুবিধার জন্য ইমিগ্রেশন থেকে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিদেশি মেহমানদের জন্য ইজতেমা মাঠের উত্তর-পশ্চিম কোণে আধুনিক সুবিধা সম্বলিত আলাদা থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে।

নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও ময়দানের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ১০ হাজার সদস্য ইজতেমা ময়দান ছাড়াও আশপাশের এলাকার নিরাপত্তা বিধান করবেন। অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে এবার সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যুক্ত করেছে।

আগে এক মঞ্চ থেকে একবারই বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন হত। কিন্তু মাওলানা জোবায়ের এবং মাওলানা সা’দ পক্ষের অনুসারীরা এ নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিভেদে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে দুই পক্ষ বিশ্ব ইজতেমা দুইবারে করার সিদ্ধান্ত নেয়।

করোনাভাইরাসের প্রকোপের আগে দুই বছর দুই ভাগে বিশ্ব ইজতেমা করেছে দুই পক্ষ। মাঝখানে মহামারীর কারণে দুই বছর ইজতেমার কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এবার থেকে এই সম্মিলন আবার শুরু হচ্ছে।

এবার মাওলানা জোবায়েরের অনুসারীরা প্রথম পর্বে ১৩-১৫ জানুয়ারি এবং মাওলানা সা’দ পক্ষের অনুসারীরা ২০-২২ জানুয়ারি ইজতেমা পরিচালনা করবেন। প্রতি পর্বেই শেষ দিনে আখেরি মোনাজাত হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন আশা প্রকাশ করেছেন, দুই পক্ষই একে অপরকে সহযোগিতার মধ্য দিয়ে এই ধর্মীয় সম্মিলনের কাজ সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে শেষ করবেন।

বিদেশ থেকে আসা অতিথিরা প্রথম পর্ব শেষে ইজতেমাস্থল ত্যাগ করে হাজী ক্যাম্পে অবস্থান করবেন। সেখান থেকে তারা নিজ নিজ গন্তব্যে যাবেন। আর দ্বিতীয় পর্বের বিদেশি মেহমান যারা আসবেন তারা ইজতেমা মাঠেই অবস্থান করবেন এবং ইজতেমা শেষে তারা যার যার গন্তব্যে চলে যাবেন।

পুরো ময়দান এলাকায় থাকছে গাজীপুর জেলা প্রশাসন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন, পুলিশ ও র‌্যাবের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। বুধবার সকালে ইজতেমা ময়দানে দুটি গভীর নলকূপের উদ্বোধন করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এ জাতীয় আরো খবর..
এই পত্রিকার সকল সংবাদ, ছবি ও ভিডিও স্বত্ত্ব সংরক্ষিত © ২০২১ দৈনিক মাতৃজগত    
কারিগরি সহযোগিতায়ঃ Bangla Webs
banglawebs999991