শাহ মোঃ আব্দুল মোমেন, রৌমারী (কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধি: গত ১০-১২ দিনে ব্রহ্মপুত্র নদের অব্যাহত ভাঙ্গনের কবলে অন্তত ৬০টি পরিবার ভিটে-মাটি হারিয়েছে। ভূক্তভোগি পরিবার গুলোর পাশে দাড়ায়নি কেউ। ভিটে-মাটি হারিয়ে এখন তারা চরম হতাশা নিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন করছে। নদের মাত্র ১৫ গজ দুরুত্বে সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
বুধবার সরেজমিনে কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের চরনেওয়াজী ঢাকাইয়া পাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, অন্তত ৬০টি পরিবারের বাড়ী-ঘর ও আবাদী জমি ব্রহ্মপুত্রের নদের গর্ভে বিলীন হয়েছে। আরও অর্ধশত বসতবাড়ী, ২টি মসজিদ ও চরনেওয়াজী সরকারী বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে হুমকির মুখে। অনেকেই অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে তাদের বসতঘর। কেউ কোন খোঁজ নিচ্ছে না তাদের।
ভাঙ্গনের কবলে ভিটে-মাটি হারানো ৭০ বছর বয়সী জামাল বয়াতীর সাথে কথা বলে জানাগেছে, বাড়ির ভিটা ছাড়া তাদের বাড়ী তৈরির মত আর কোন জমি-জমা নেই। অন্যের বাড়ীতে আশ্রয়ের জন্য হন্নে হয়ে খুঁজছেন একটু জায়গা। এখনও মেলেনি তার আশ্রয়স্থল। ওই এলাকার বিধবা ববিতা বেগমের এতিম দুই সন্তান নিয়ে রয়েছেন একই সমস্যায়। চুলো জ্বালানোর মত এক মুষ্টি খাবারও নেই তার কাছে। চিন্তায়, রোগে-শোকে ৪০ বছরের ববিতার বয়স মনে হয় ষাটোর্ধ। ববিতা, জামাল, কামাল ও হোসেনদের কাঁন্নায় ভারী হয়েছে আশপাশের পরিবেশ। প্রায় সকলেই আকুতি তাদের বাঁচানোর।
চরনেওয়াজী বালিকা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, “আমার বিদ্যালয়টি নদী ভাঙ্গনের হুমকির মুখে। নদী থেকে বিদ্যালয়ের দুরুত্ব মাত্র ১৫ মিটার। দুই-এক দিনের মধ্যে বিদ্যালয়টি নদী গর্ভে চলে যাবে। আমি উপর মহলে কথা বলেও কোন সারা পাচ্ছি না। এখন কোন উপায় খুঁজে পাচ্ছি না, কি করবো।”
এ বিষয়ে মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ এর ৩নং ওয়ার্ড সদস্য শাহ আলম জানান, “ঢাকাইয়া পাড়ায় যে বাড়ী গুলো ভেঙ্গে গেছে তারা কয়েকদফায় ভাড়ঙ্গনের কবলে পরে শেষ এই এলাকায় বসতি গড়ে। সেটিও এখন ভেঙ্গে গেল। আসলেই এদের আর কোন যাওয়ার জায়গা নাই। তাই সরকারে কাছে দাবী এদের আশ্রয়ের ব্যবস্থাসহ দ্রুত নদী ভাঙ্গনরোধের কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।”
এ বিষয়ে রাজিবপুর উপজেলা নিবার্হী অফিসার অমিত চক্রবর্তী জানান, “নিঃস্ব পরিবারদের তালিকা করে সাময়িকভাবে তাদের জন্য ত্রাণসামগ্রীর ব্যবস্থা করা হবে। সেই সাথে যে পরিবার গুলোর জায়গা-জমি নেই তাদের অন্যত্র আশ্রয়নের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলবো।