নিজস্ব প্রতিবেদক :“সৈরাচারমুক্ত সুবিধাবাদ বিরোধী এক্সপ্রেস” নামের ভুয়া আইডিসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের একাধিক ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে সাংবাদিকদের ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এসব অপপ্রচারের মাধ্যমে জাতির বিবেক হিসেবে পরিচিত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তি ছড়ানো এবং মব সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে সাংবাদিক সমাজ সরকারের প্রতি কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনও এ ঘটনাকে ‘নেক্কারজনক’ উল্লেখ করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।অভিযোগ করা হয়, বিগত সরকারের এমপি-মন্ত্রী কিংবা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে তোলা ছবিগুলোকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এসব ভুয়া পোস্টে বিএনপির নাম ব্যবহার করা হলেও প্রকৃতপক্ষে তারা কিছুই জানে না। বরং সাংবাদিকদের বিএনপির বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকেই। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আসন্ন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সাংবাদিকদের প্রতি রাজনৈতিক দলের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেড়েছে। এ সময় তাদের বিভ্রান্ত ও ক্ষুব্ধ করার জন্য অপপ্রচারকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে একটি চক্র। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ভুক্তভোগী সাংবাদিক বলেন,“আমি ২০ বছর ধরে সাংবাদিকতা করছি। দায়িত্ব পালনের স্বার্থে সবসময় রাজনীতিক ও বিশিষ্টজনদের কাছাকাছি থাকতে হয়, তাদের সাক্ষাৎকার নিতে হয়, সংবাদ সম্মেলন কাভার করতে হয়। এর মধ্যে কিছু ছবি থাকতেই পারে। কিন্তু এখন সেই ছবিগুলো বিকৃতভাবে ব্যবহার করে আমার মতো সাংবাদিকদের হেয় করা হচ্ছে—এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর একটি চক্র নানাবিধ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। মিথ্যা মামলা, চাঁদাবাজি, ভয়-ভীতি প্রদর্শনসহ ফেসবুকে সম্মানী ব্যক্তিদের ছবি ব্যবহার করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কাজ করছে তারা। যারা টাকা দিচ্ছে না, তাদেরকে পুলিশের মাধ্যমে হয়রানি করার ঘটনাও ঘটছে। এর সাথে কিছু অসাধু পুলিশ সদস্যও জড়িত বলে তিনি দাবি করেন।
সাংবাদিক সংগঠনগুলোর নেতারা বলেন,“ভুয়া আইডি ব্যবহার করে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুধু ব্যক্তি নয়, রাষ্ট্রের জন্যও হুমকি। এ চক্রকে দ্রুত আইনের আওতায় না আনলে মুক্ত সাংবাদিকতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সদ্য এশিয়ান টিভির রিপোর্টার শিহাব কে এভাবে আটক করা হয়। তিনি বর্তমানে জেলা হতে রয়েছে।
সাংবাদিক সমাজের দাবি, সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনসহ বিদ্যমান আইনের আওতায় এসব ভুয়া আইডি চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। একইসাথে সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি স্বাধীন সেল গঠন করা জরুরি।