সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার মোঃ শাকিল খান রাজু:
ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নে জেলেদের জন্য বরাদ্দ ভিজিএফ চাউল বিতরণে বড় ধরনের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করছেন, প্রতি কার্ডে ৮০ কেজি করে চাউল দেওয়ার কথা থাকলেও অনেককে দেওয়া হচ্ছে মাত্র ৩২-৩৪ কেজি করে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত ২৫ মে থেকে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের ৬,৬০০ জেলের মাঝে ভিজিএফ কার্ড বিতরণ করা হয়। এরপর ১ জুন থেকে বিভিন্ন ওয়ার্ডে চাউল বিতরণ শুরু হয়। তবে ৪ নম্বর দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফজলুল হক লিটন হায়দারের বিরুদ্ধে চাউল কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী কামাল, মানিক ও সুরেশ জানান, তারা মাত্র ৩৪ কেজি করে চাউল পেয়েছেন। অথচ তারা জানতেনই না যে তাদের পাওয়ার কথা ৮০ কেজি।
সোমবার (২ জুন) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে সকাল থেকে জেলেরা সিরিয়াল ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। উপস্থিত থেকে নিজে চার বালতিতে করে চাউল বিতরণ করছিলেন মেম্বার লিটন হায়দার। তিনি নিজেকে ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচয় দেন, যদিও সেদিন তার ওয়ার্ডের বরাদ্দের চাউল বিতরণ হচ্ছিল না।
তিনি দাবি করেন, প্রতিটি বালতিতে ৯ কেজি ৫০০ গ্রাম করে চাউল দিয়ে থাকেন এবং চার বালতিতে প্রায় ৩৮ কেজি চাউল বিতরণ করছেন। তবে现场ে উপস্থিত সাংবাদিকরা ও স্থানীয়রা কয়েকজনের চাউল ওজন করে দেখেন, সেখানে ৩২-৩৪ কেজির বেশি পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে থাকা ফজলুল হক লিটনের বিরুদ্ধে এর আগেও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাস্থলে সাংবাদিকরা চাউল কম দেওয়ার বিষয়ে লিটন হায়দারের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে অভিযোগ অস্বীকার করেন। পরবর্তীতে যখন ভিডিও প্রমাণ দেখানো হয়, তখন তিনি উত্তেজিত হয়ে সাংবাদিকদের হুমকি দেন। এক পর্যায়ে স্বীকার করেন, “আমি ৪০ কেজি করে দেই, তবে মাপে ১ কেজি কম হতে পারে।”
এদিকে, তার ‘প্যানেল চেয়ারম্যান’ পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন মন্তব্য না করে সটকে পড়েন।
বিষয়টি নিয়ে দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের প্রশাসকের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, প্রকৃতপক্ষে প্রতি কার্ডে ৩৬ কেজি করে চাউল দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে, কারণ পরিবহন ও লেবার খরচ কেটে রাখা হয়। কিন্তু এর চেয়ে কম দেওয়া অনিয়ম ও দুর্নীতি।
তিনি আরও জানান, আজ ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চাউল বিতরণের নির্ধারিত দিন নয়, তবুও লিটন হায়দার নিজেই অন্য ওয়ার্ডের চাউল বিতরণ করছেন এবং নিজেকে প্যানেল চেয়ারম্যান পরিচয় দিয়ে নাগরিকত্ব সনদেও স্বাক্ষর করছেন, যা সম্পূর্ণ অবৈধ।