
মোঃ বাবুল ময়মনসিংহ বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান
শম্ভুগঞ্জ মোড়ে নতুন জামাইয়ের গাড়ি আটকে চাঁদা দাবি নারী–শিশুর সামনে টানাটানি, ভয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে শিশুরা—ময়মনসিংহ ব্রিজ থেকে ট্রাফিক মোড় পর্যন্ত একই চিত্র
ময়মনসিংহ শহরের প্রবেশমুখ শম্ভুগঞ্জ মোড়, ট্রাফিক মোড় এবং ময়মনসিংহ ব্রিজ এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে হিজলা পরিচয়ধারী একটি চক্র বেপরোয়া চাঁদাবাজি চালিয়ে আসছে। আজ দুপুরে নতুন বরযাত্রীর গাড়ি থামিয়ে প্রকাশ্য daylight চাঁদা দাবি করে তারা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত যাত্রী ও পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন—এই চক্র বিশেষ করে বরযাত্রীর গাড়িকে আলাদা টার্গেট করে। অন্যান্য গাড়ি অনেক সময় যেতে দিলেও বরযাত্রীর গাড়িতে নানা অজুহাতে বাধা দেয় তারা।
নারী, বৃদ্ধ ও ছোট বাচ্চারা থাকলেও তাদের সামনে অশালীন ভাষা, টানাটানি এবং হুমকিমূলক আচরণ থেকে বিরত থাকে না।
টাকার জন্য জোরাজুরির সময় শিশুরা ভয় পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে—যা সামাজিক ও মানবিক দিক থেকে অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
চালকদের ভাষায়—এটা শুধু চাঁদাবাজি নয়; যাত্রীদের সামনে এদের অমানবিক আচরণ আমাদের প্রতিদিনের কাজ ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে।
বাংলাদেশ দণ্ডবিধি অনুযায়ী—যানবাহন আটকে জোরপূর্বক টাকা আদায় করা ‘চাঁদাবাজি’ ও ‘চাঁদা আদায়ের চেষ্টা’—এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ (দণ্ডবিধি ৩৮৫, ৩৮৬, ৩৯০)।
কোনও ব্যক্তিকে ভয় দেখানো, হুমকি দেওয়া বা পথরোধ করা—অপরাধ (দণ্ডবিধি ৫০৬, ৩৪১)।
নারী ও শিশুর সামনে অশালীন আচরণ ও হেনস্থা—‘অশোভন আচরণ’ ও ‘সাধারণ শান্তিভঙ্গের’ অপরাধ (দণ্ডবিধি ৫০৯, ৫০৪)।সুতরাং এসব কাজ শুধু নৈতিক বা সামাজিকভাবে নয়, আইনগতভাবেও গুরুতর শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এলাকার মানুষ বলেন—ময়মনসিংহ ব্রিজ থেকে ট্রাফিক মোড় পর্যন্ত যাত্রীদের চলাচল প্রতিদিন অনিরাপদ হয়ে উঠছে।
মহিলা, শিশু, অসহায় মানুষ কাউকেই এরা সম্মান করে না। আজকেই একটি ছোট বাচ্চা ভয়ে কেঁদে ফেলেছে। আমরা দুঃখ ও ক্ষোভের সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনের অবিলম্বে হস্তক্ষেপ চাই।”
এলাকাবাসীর দাবি—সড়কে এই ধরনের চাঁদাবাজি সমাজের শৃঙ্খলার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করার শামিল।
যে কোনো সময় বড় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে।এলাকাবাসী অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপার মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন—শম্ভুগঞ্জ—ময়মনসিংহ ব্রিজ—ট্রাফিক মোড় এলাকায় বিশেষ টহল ও নজরদারি বাড়ানো হোক।
চাঁদাবাজ চক্রকে শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। নারী ও শিশুর সামনে অশোভন আচরণের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি প্রয়োগ করা হোক।
যাত্রীদের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করতে জরুরি ভিত্তিতে স্থায়ী পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়া হোক ।
এটি শুধু চাঁদাবাজি নয়; এটি সমগ্র সমাজ, পরিবার, নারী–শিশু—সবার নিরাপত্তার বিরুদ্ধে হুমকি। প্রশাসন শক্ত হাতে ব্যবস্থা নিলেই পরিস্থিতির পরিবর্তন সম্ভব।
সড়ক সবার—চাঁদাবাজির ভয় নয়, আইনের শাসনই আমাদের চলার পথ হোক।আইনের কঠোর প্রয়োগ এবং জনগণের সচেতনতা—দু’য়ের সমন্বয়েই এ ধরনের অপরাধ নির্মূল করা সম্ভব।অসামাজিক দৌরাত্ম্য বরদাশত করা মানে ভবিষ্যত প্রজন্মকে অনিরাপদ পরিবেশ উপহার দেওয়া।