মায়ের দোয়ায় রাজনীতির মাঠে দক্ষ সৈনিক শাওনছবি: লালমোহন নিউজ
মো. জসিম জনি: সাধারণ গৃহিনী থেকে তিনবারের নির্বাচিত পার্লামেন্ট মেম্বারের জননী হয়ে উঠেছেন একজন গর্বিত মা। তিনি হলেন ভোলা-৩ (লালমোহন ও তজুমদ্দিন) আসনের সংসদ সদস্য নূরুন্নবী চৌধুরী শাওনের মা হোসনে আরা চৌধুরী। তার ৪ ছেলে ও ৩ মেয়ের সবাই সফলতার স্থানে আছে। রাজনীতিতে দক্ষ সৈনিক হয়ে উঠার পেছেনে মায়ের ভূমিকা বেশি বলে মনে করেন নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন।

ছাত্রজীবনে মায়ের সহযোগিতায়ই রাজনীতির মাঠে বেশি শক্তি যুগিয়েছে। আর এই কারণেই আজকে দেশের একজন সংসদ সদস্য হয়ে উঠেছেন নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন। ৩বারের এই সংসদ সদস্য হয়ে উঠার পেছনে মায়ের অনেক ত্যাগ ও কষ্টের কথা জানিয়েছেন শাওন। তিনি বলেন, রাজনীতি করতে গিয়ে জেলেও যেতে হয়েছে। এরশাদ বিরোধী গণঅভ্যুত্থান, বিএনপি-জামায়াত জোটের আমলে গণতন্ত্রের আন্দোলনে ঢাকার রাজপথে জীবনবাজী রেখে লড়তে হয়েছে।

৯৩ সালে গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলন করতে গিয়ে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা দিয়ে জেলে পাঠানো হয়। ৩ মাস কারাভোগ করেছি। ঈদ কাটে জেলে। সেসময় মায়ের বেদনামাখা মুখখানার কথা মনে পড়তো। মা কত দুশ্চিন্তায় থাকতেন সেসময়গুলোতে। তবুও মায়ের সাহসেই এগিয়ে চলা। রাজনীতিতে ঝুঁকির কারণে বাবা অনেক সময় বারণ করলেও মা সবসময় সাহস দিতেন। সব সময় মায়ের কাছ থেকে টাকা নিয়েই মিছিল মিটিংয়ে খরচ করতেন।

মা হোসনেআরা চৌধুরী আজ বয়সের ভারে অসুস্থ্য। বাবা পরপারে চলে গেছেন বছর কয়েক আগে। মা-ই এখন মাথার উপর ছাদ হয়ে আছেন পুরো পরিবারের। পরিবারের সকলেই আওয়ামী লীগের জন্য নিবেদিত। বড় ভাই নুরুল আমিন চৌধুরী ঢাকার রমনা থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। অন্য ভাইয়েরাও ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছেন। মায়ের স্মৃতি রাখতে সংসদ সদস্য শাওন লালমোহন ও তজুমদ্দিনে কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন।

এর মধ্যে তজুমদ্দিনে হোসনে আরা চৌধুরী মহিলা কলেজ, লালমোহনের ফরাজী বাজার হোসনে আরা চৌধুরী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ফরাজগঞ্জ হোসনে আরা চৌধুরী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় আজ শিক্ষার আলো চড়াচ্ছে এই অঞ্চলে। ইতোমধ্যে এসব প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীরা একজন রত্নাগর্ভা মায়ের অবদানকে স্মরণ রাখতে পারছে।

সংসদ সদস্য নূরুন্নবী চৌধুরী বলেন, মায়ের দোয়া সবসময় আমার সাথে রয়েছে। অনেক বিপদ আপদে মায়ের দোয়া আমার শক্তি হয়ে উঠছে। মা সবসময় অসহায় মানুষদের ভালোবাসতেন। ঢাকার মগবাজারে বসবাস করলেও আত্বীয় স্বজনের খোঁজ খবর নিতেন মা। তাদের বিভিন্নভাবে আর্থিক সহায়তাও করতেন। এসব করে তিনি আত্মতৃপ্তি পেতেন। মায়ের অনুপ্রেরণা নিয়েই আমিও মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখছি। এতে আমিও আত্মতৃপ্তি অনুভব করি।