অরবিন্দু দাস,পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর বাউফলে প্রকৃত ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে বঞ্চিত করে অর্থের বিনিময়ে ১৫ টি সচ্ছল পরিবারকে মুজিব বর্ষের চতুর্থ ধাপের ঘর দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলার কাছিপাড়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইয়াকুব আলী মোল্লার বিরুদ্ধে।
সচ্ছল ১৫ জন ব্যাক্তিদের থেকে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে ঘর দেওয়ার অভিযোগ এনে গত ১৯ সেপ্টেম্বর বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করেছেন কাছিপাড়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের ৫ জন বাসিন্দা।
লিখিত অভিযোগে ওই ইউনিয়নের বাসিন্দারা বলেন মুজিব বর্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের আশ্রয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে চতুর্থধাপে বাউফল উপজেলার পূর্ব কাছিপাড়া ইউনিয়নের বাজারের দক্ষিণ পাশে গত ২৩ আগষ্ট ২১ টি ঘর হস্তান্তর করা হয়।তবে এর মধ্যে ১৫ টি ঘরের মালিক সচ্ছল ও তাদের জমি এবং বাড়ি রয়েছে। তবে প্রকৃত গৃহহীন ও ভূমিহীনদেরকে ঘর দেওয়ার জন্য ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইয়াকুব আলী মোল্লা ঘর প্রতি ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। তবে তারা টাকা দিতে নারাজ হলে ১৫ জন সচ্ছল ব্যাক্তিদের থেকে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে ইউপি সদস্য ইয়াকুব আলী মোল্লা ঘরের নাম দিয়ে তাদের ঘর হস্তান্তর করেন।অভিযোগে ৫ জন বাসিন্দারা তদন্ত করে প্রকৃত গৃহহীন ও ভূমিহীনদেরকে ঘর গুলো হস্তান্তরের দাবি জানান।
অভিযোগকারী মো. কবির কারিগর বলেন,‘ মুজিব বর্ষের ঘর বিতরণে মেম্বার অনিয়ম করছে এ ঘটনা সত্য এবং এ জন্য আমি মেম্বারের বিরুদ্ধে অভিযোগে স্বাক্ষর দিছি তিনি আমাকে আমার বাসার সামনে বসে মারধর করেছে এবং বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিচ্ছে আমি এ ঘটনার জন্য ইউএনও স্যারকে জানিয়েছি।’
কাছিপাড়া ইউনিয়নের চর রঘুনদ্দি গ্রামের বাসিন্দা বকুলি বেগম বলেন আমার কিচ্ছু নাই। পোতা, বাড়ি সব নদীতে লইয়া গেছে হেরপর ও আমি ঘর পাই নাই। জাগো ঘর আছে হেগোই সরকারে ঘর দেছে। মেম্বার এ ১০ হাজার টাহা চাইছে, টাহা দেলে ঘর দেবে। কিন্তু টাহাও দেতে পারি নাই ঘর ও দেয় নাই।’
এদিকে অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়ন ভুমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা জি এম মাহবুবকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বশির গাজী। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত শুক্রবার ১৫ জনের মধ্যে ৫ ঘরের বিষয়ে সরজমিনে তদন্ত করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা এবং এর সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কনকদিয়া ইউনিয়ন ভুমি উপ-সহকারী জি এম মাহবুব বলেন,‘ আমি সরজমিনে গিয়ে ৫ টি ঘরের বিষয়ে তদন্ত করেছি, এর মধ্যে অনেক গুলোরই অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ইয়াকুব আলী মোল্লা বলেন,‘অভিযোগটি সম্পুর্ন মিথ্যা এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত। যারা অভিযোগ করেছে তারাই যানে না। আর আমি কাউকে মারধর ও করিনি এবং ঘর দিতে আমি কে’।
বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ বশির গাজী বলেন আমি অভিযোগ পেয়েছি এবং সাথে সাথেই তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছি।তদন্ত রিপোর্টে সত্যতা পেলে সংশোধন করা হবে যেহেতু এখানো সংশোধনের সুযোগ আছে।